ক্রিকেট খেলতে গিয়ে যে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছিল বাবরকে

পাকিস্তানের ক্রীড়াঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখায় সম্প্রতি দেশটির তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা সিতারা–ই–ইমতিয়াজে ভূষিত হয়েছেন বাবর আজমছবি : টুইটার

৮ বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেছিলেন বাবর আজম। এরপর যত সময় গড়িয়েছে, বাবর নিজেকে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে। প্রতিনিয়ত ভেঙেছেন একের পর এক রেকর্ডও। গতকাল রাতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ওয়ানডেতে জেতার পথে ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরিটি করেছেন বাবর।

এর মধ্যে ভেঙেছেন হাশিম আমলার গড়া ওয়ানডেতে দ্রুততম ৫ হাজার রানের রেকর্ডও। এ ম্যাচের পর পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে বিশেষ এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাবর। সেখানে বলবয় থেকে পাকিস্তান ক্রিকেটের পথে নিজের যাত্রাটা তুলে ধরেছেন বাবর, বলেছেন ক্রিকেটের জন্য নিজের আত্মত্যাগের কথাও।

পাকিস্তান দলে ডাক পাওয়ার মুহূর্তটা কেমন ছিল জানাতে গিয়ে বাবর বলেছেন, ‘পাকিস্তান দলে ডাক পাওয়ার ফোন যখন আসে, বেশ রোমাঞ্চিত ছিলাম। এর আগে থেকেই দলে ডাক পাওয়ার গুঞ্জন ছিল, তাই কিছুটা ধারণা ছিল। কিন্তু যখন আনুষ্ঠানিকভাবে ফোন আসে, তখন সেটা অন্য রকম ব্যাপার ছিল। পরিবারের লোকজনও খুব খুশি হয়েছিল।’

ওয়ানডে ইতিহাসে দ্রুততম ব্যাটসমস্যান হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন বাবর আজম
ছবি : এএফপি

পাকিস্তান জাতীয় দলে নিজের অবস্থান তৈরির কথা জানাতে গিয়ে বাবর আরও বলেছেন, ‘যখন খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম মাঠে প্রবেশ করি, তখন আগের স্মৃতি মনে পড়ে গিয়েছিল। তখন আমি বলবয় হিসেবে কাজ করতে যেতাম। ইনজি ভাইয়ের (ইনজামাম-উল-হক) শেষ টেস্ট ম্যাচে আমি বোলিং করতে গিয়েছিলাম। সেটিও আমাকে দারুণ অনুপ্রাণিত করেছিল। তখন মনে হয়েছিল, আমাকে পাকিস্তানের খেলোয়াড় হতে হবে, দেশের মানুষের সামনে খেলতে হবে এবং আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের বিপক্ষে খেলতে হবে। এরপর আমি রাতদিন এক করে পরিশ্রম করেছি। আমি সকাল ১১টায় যেতাম এবং সন্ধ্যার পর ফিরতাম।’

নিজের পায়ের নিচে মাটি তৈরি করতে অনেক আত্মত্যাগও করতে হয়েছে বাবরকে। সেই গল্পও বলেছেন বাবর, ‘আমি তখন দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব ১৯ দলের হয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ছিলাম। ভোর পাঁচটায় ফোনে জানলাম, আমার চাচা মারা গেছেন। সেই চাচার সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেক গভীর ছিল। তিনি সব সময় আমার ব্যাটের দেখভাল করতেন, আমার জন্য সেগুলো ঠিকঠাক করে দিতেন। এরপর আমি যখন আমার দাদিকে হারালাম, তখন আমি ইসলামাবাদে ম্যাচ খেলছিলাম। তাঁকে শেষবিদায় জানানোর জন্যও আমি সময় বের করতে পারিনি।’

বাবরের নেতৃত্বে ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছে পাকিস্তান
ছবি : টুইটার

এসব বেদনা বাবর ভুলেছেন পরিবারের কাছ থেকে পাওয়া সমর্থনে, ‘আমি আনন্দিত যে আমার পরিবার আমাকে সমর্থন দিয়েছে। আমার মা আমাকে প্রথম ব্যাট কিনে দেন। আমার জীবনে বাবার প্রভাবও অনেক। তিনি আমাকে আত্মতুষ্ট হতে না করতেন এবং এটাই আমাকে ক্ষুধার্ত ও মনোযোগী রাখত। কঠিন সময়ে আমার ভাইও আমাকে সমর্থন দিয়েছে।’

আরও পড়ুন