সর্বকালের সেরা ফাস্ট বোলারদের মধ্যে ওয়াসিম আকরামের নাম ওপরের দিকেই থাকবে। তাঁর হাত ধরেই ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে শিরোপা উৎসবে মেতেছিল পাকিস্তান। তবে আকরামের বর্ণাঢ্য ক্রিকেট ক্যারিয়ার একেবারেই নিষ্কলঙ্কও ছিল না।
ক্যারিয়ারে অনেকবার ম্যাচ ফিক্সিংয়ের অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছিল তাঁর দিকে। এমনকি সতীর্থদের দিক থেকেও বিভিন্ন সময় তাঁর দিকে ছোড়া হয়েছিল অভিযোগের তির। আকরাম অবশ্য ফিক্সিংয়ের অভিযোগকে বরাবরই উড়িয়ে দিয়ে এসেছেন।
তবে এবার হয়তো ফিক্সিং নিয়ে আকরাম নিজেই বোমা ফাটাতে যাচ্ছেন। সম্প্রতি নিজের জীবনী নিয়ে বই প্রকাশ করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। ‘সুলতান অব সুইং’খ্যাত আকরামের বইয়ের নাম ‘সুলতান ওয়াসিম আকরাম’।
পাকিস্তানের দৈনিক দ্য ডেইলি জংকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আকরাম জানিয়েছেন, জীবনে ঘটে যাওয়া চমকপ্রদ সব ঘটনা নিয়েই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বাজারে আসতে যাচ্ছে তাঁর জীবনী।
এ জীবনীতে বিচারপতি মালিক কাইয়ুম কমিশনের রিপোর্ট, ম্যাচ ফিক্সিং এবং ক্রিকেট ব্যক্তিত্বদের নিয়েও ঘটনার বর্ণনা থাকবে বলে জানিয়েছেন আকরাম। ওয়ানডেতে প্রথম ৫০০ উইকেট পাওয়া এই বোলার জানিয়েছেন, পাকিস্তান ক্রিকেটের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তাঁর এ বইয়ে উঠে আসবে।
আকরামের জীবনীতে ম্যাচ ফিক্সিং বিষয়ে অজানা অনেক বিষয়ের উল্লেখ থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আকরামের এ জীবনী লিখছেন বিখ্যাত এক ইংলিশ লেখক। যা পরে উর্দুসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হবে।
এর আগেও একবার জীবনী প্রকাশ করেছিলেন আকরাম। ১৯৯৮ সালে প্রকাশিত ‘ওয়াসিম’ নামে সেই বইয়ের লেখক ছিলেন ব্রিটিশ ক্রীড়া সাংবাদিক প্যাট্রিক মারফি। আকরাম নিজেও সেই বইয়ের সহলেখক ছিলেন।
১৯৮৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় আকরামের। গতি ও সুইংয়ে শুরু থেকেই নজর কাড়েন লাহোরে জন্ম নেওয়া পেসার।
পাকিস্তানের ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ শিরোপা জেতার পথেও দারুণ অবদান রাখেন আকরাম। বিশেষ করে পরপর ২ বলে অ্যালেন ল্যাম্ব ও ক্রিস লুইসকে বোল্ড করে ফাইনালের গতিপথ বদলে দিয়েছিলেন তিনি। পরে ফাইনালের ম্যাচসেরাও হন আকরাম।
১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান দলের অধিনায়কত্ব পান আকরাম। এর পর থেকে ক্যারিয়ারজুড়ে নানা উত্থান-পতনের সাক্ষী হন ওয়াসিম। এমনকি জুয়াড়িদের সঙ্গে তাঁর সম্পৃক্ততার অভিযোগও ওঠে। শুধু আকরাম একাই নন, আরও একাধিক ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে ফিক্সিংয়ে জড়ানোর অভিযোগ উঠেছিল সে সময়।
পরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) ফিক্সিংয়ের ঘটনার তদন্তে বিচারপতি কাইয়ুমের নেতৃত্বে একটি প্যানেল গঠন করে। এই প্যানেল ২০০০ সালে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম মালিক ও আতা-উর-রেহমানকে আজীবন নিষেধাজ্ঞাও দেওয়া হয়, যা অবশ্য পরে তুলে নেওয়া হয়। সেই কমিশন আকরামকে তিন লাখ রুপি জরিমানাও করেছিল। কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, আকরামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি।