কিউই ইতিহাসে উইলিয়ামসন যেখানে প্রথম

পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন উইলিয়ামসনছবি: এএফপি

একপর্যায়ে লড়াইটা হয়ে উঠেছিল কেইন উইলিয়ামসন আর আবরার আহমেদের। না, বোলার–ব্যাটসম্যানের চিরায়ত লড়াই নয়। লড়াইটা কে আগে ‘ডাবল সেঞ্চুরি’ স্পর্শ করবেন, তার। উইলিয়ামসন ছুটছিলেন ব্যাট হাতে দুই শ রানের দিকে। আর আবরার এগোচ্ছিলেন বল হাতে রান খরচের ‘দ্বিশতকে’।

দুজনের সামনে যখন ডাবল সেঞ্চুরির হাতছানি, পাকিস্তানের লেগ স্পিনারকে ‘জিতিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব’ নিলেন উইলিয়ামসন। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে বল উড়িয়ে পাঠালেন সীমানার ওপারে। গোটা ইনিংসে তাঁর প্রথম ছয়। এই ছয়ে নিউজিল্যান্ডের রান সংখ্যায় শতকের ঘরেও এল ছয়— ৬০০। দুই বল পর কভারে বল পাঠিয়ে আবরারকে পূর্ণ করে ‘দিলেন’ দুই শ।

আরও পড়ুন

আসলে আবরারকে নয়, নিজেকেই এগিয়ে দিচ্ছিলেন উইলিয়ামসন। দুই ওভার পর একই বোলারকে মিড উইকেটে ঠেলে স্পর্শ করলেন নিজের দুই শ। টেস্ট ক্যারিয়ারে পঞ্চম! পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয়। নিউজিল্যান্ডের টেস্ট ইতিহাসে পাঁচ ডাবল সেঞ্চুরি বা পাকিস্তানের বিপক্ষে দুটি—দুই দিক থেকে উইলিয়ামসনই প্রথম।

পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি। ক্রাইস্টচার্চের সেই ডাবল সেঞ্চুরির (২৩৮) পর ৭২৩ দিন আর টেস্ট ক্রিকেটে তিন অঙ্কের দেখাই পাননি উইলিয়ামসন। এর মধ্যে নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন, অধিনায়কত্বও ছেড়েছেন। কিন্তু ব্যাট হাতে ছন্দ খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

শুধু সেঞ্চুরিই নয়, অ্যাওয়ে টেস্টে রানও পাচ্ছিলেন না দীর্ঘদিন। ২০১৯ সালের শুরু থেকে করাচি টেস্ট শুরুর আগপর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের বাইরে টেস্ট খেলেছেন ৮টি। যেখানে ১৫.৫৩ গড়ে রান তুলতে পেরেছেন মাত্র ২৩৩টি, সর্বোচ্চ ইনিংস ৪৮ রানের।
ক্রাইস্টচার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে থমকে যাওয়া রানের মুখ আরেকটি পাকিস্তান ম্যাচ দিয়েই খুললেন। তৃতীয় দিনেই পেয়ে গিয়েছিলেন সেঞ্চুরি। ম্যাচের চতুর্থ দিনে আজ সেটিকে টেনে নিলেন দ্বিশতকে।

দীর্ঘদিন পর ব্যাটিংয়ে ছন্দ ফিরে পেয়ে কিছুটা স্বার্থপরও হয়েছেন। সময় গড়িয়ে যাচ্ছে দেখেও ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শের জন্য দিনের দ্বিতীয় সেশন পর্যন্ত খেলা চালিয়ে গেছেন। শেষ ব্যাটসম্যান আজাজ প্যাটেলের স্ট্রাইকে যাওয়া ঠেকাতে ‘প্যাডেল’ দিয়েও খেলেছেন।

আরও পড়ুন

সেঞ্চুরির পর স্ট্রাইক রেট ভালো হওয়ার কথা থাকলেও খেলেছেন ধীরলয়ে। আরাধ্যের ‘ডাবল’ যখন স্পর্শ করেন, ততক্ষণে খেলে ফেলেছেন ৩৯৫ বল। পুরো ইনিংসে ২১টি চারের সঙ্গে ছয় মাত্র একটি, সেটি ওই শেষ দিকে তাড়াহুড়ো করার চেষ্টায়।

তবে শেষ পর্যন্ত পিচ আঁকড়ে পড়ে থেকেছেন বলে বেশ কিছু রেকর্ডে নাম লেখানো সম্ভব হয়েছে। পাকিস্তানের মাটিতে দুটি ডাবল সেঞ্চুরিতে তিনিই প্রথম কিউই। সব মিলিয়ে পঞ্চম। বর্তমান ক্রিকেটারদের মধ্যে পাঁচ ডাবল সেঞ্চুরি আছে শুধু জো রুট (৫টি) ও বিরাট কোহলির (৭টি)। ফ্যাব ফোর হিসেবে উইলিয়ামসনের নাম যাঁদের সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তাঁদের অন্যতম স্টিভেন স্মিথের ডাবল ৪টি।