বাবরকে উইকেটকিপার হওয়ার প্রস্তাব: কোচ যা বললেন
উইকেটকিপিং প্রস্তাবের গুজব উড়িয়ে দিয়ে কোচ হেসন জানান, বাবর আজম এখনো ওপেনিং পজিশনের লড়াইয়ে আছেন। উইকেটকিপিংয়ের প্রস্তাব তিনি দেননি।
পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি দলে ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন বাবর আজম। এ বছর পাকিস্তানের খেলা দুটি টি-টোয়েন্টি সিরিজের কোনোটিতেও দলে সুযোগ পাননি। জায়গা হয়নি আসন্ন বাংলাদেশ সফরের টি-টোয়েন্টি সিরিজেও।
এই অবস্থায় বাবরকে নিয়ে একটি গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছিল। টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পেতে হলে বাবরকে নতুন কোনো স্কিল যোগ করতে হবে, এমনকি সেটা উইকেটকিপিংও হতে পারে। কখনো উইকেটকিপিং না করা বাবরকে নাকি এমন প্রস্তাব দিয়েছেন দলের প্রধান কোচ মাইক হেসন। তবে গতকাল এই গুঞ্জন সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন হেসন।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রান বাবরের। প্রায় ৪০ গড়ে রান করেছেন ৪২২৩। ৩৬টি ফিফটির সঙ্গে আছে ৩টি সেঞ্চুরিও। তবে স্ট্রাইক রেট নিয়ে দীর্ঘদিন সমালোচনার মুখে ছিলেন তিনি। দলের জন্য নয়, বাবর নিজের জন্য খেলেন—এমন প্রশ্নের মুখেই একপর্যায়ে দল থেকে বাদ পড়েন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেট যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এর সঙ্গে রান করার ধারাবাহিকতাও দরকার। আমাদের টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকার বড় কারণ, আমাদের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট যথেষ্ট নয়।মাইক হেসন
বাংলাদেশ সফরের স্কোয়াডে রাখা না হলেও করাচিতে দলের সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী ক্যাম্পে অংশ নিচ্ছেন বাবর। টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার জন্য লড়ছেন তিনি।
কাল সাংবাদিকদের মাইক হেসন বাবরকে নিয়ে বলেন, ‘প্রথমত, বাবর আজমকে আমরা কোনোভাবেই উইকেটকিপিং অপশন হিসেবে দেখছি না। কোথা থেকে এটা এসেছে জানি না, তবে এমন গুজব আমিও শুনেছি। বাবর এখন ওপেনিং পজিশনের জন্য লড়াই করছে। তবে এই মুহূর্তে সেই দুটি জায়গায় ফখর জামান ও সাইম আইয়ুব আছে।’
বাবরের স্ট্রাইক রেট নিয়ে প্রশ্নে হেসন বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে স্ট্রাইক রেট যে গুরুত্বপূর্ণ, সেটা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তবে এর সঙ্গে রান করার ধারাবাহিকতাও দরকার। আমাদের টি-টোয়েন্টি র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকার বড় কারণ, আমাদের ব্যাটসম্যানদের স্ট্রাইক রেট যথেষ্ট নয়। আমরা শেষ সিরিজে ইতিবাচক পরিবর্তন এনেছি। চেষ্টা করেছি বিশ্ব ক্রিকেটের সঙ্গে তাল মেলাতে। বাবরেরও এই পরিবর্তন আনার সামর্থ্য আছে। গত এক মাসে ওর মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখেছি। শুধু স্ট্রাইক রেট ১২৫ থেকে ১৫০ করাই নয়, বরং কীভাবে দলকে অতিরিক্ত ৩০ থেকে ৪০ রান এনে দেওয়া যায়, সেটাই মূল লক্ষ্য।’
দল থেকে বাদ পড়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ানও। তাঁর স্ট্রাইক রেট নিয়েও প্রশ্ন অনেক দিনের। শুধু এই দুজন নয়, বাদ পড়েছেন তারকা পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদিও। সম্প্রতি পিএসএলে লাহোর কালান্দার্সকে নেতৃত্ব দিয়ে তৃতীয় শিরোপা জেতানো আফ্রিদিও আছেন ক্যাম্পে। বাঁ হাতি এই পেসারও নিজের জায়গা ফিরে পেতে লড়াই করছেন।
আফ্রিদিকে নিয়ে হেসন বলেন, ‘শাহিন (আফ্রিদি) একজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়। সেও সুযোগ পাবে। তবে আমরা দেখতে চাই, ওর খেলায় কতটা উন্নতি হয়েছে। যেন আমরা বুঝতে পারি, ও টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলে ভালো করতে পারে।’
করাচির এই ক্যাম্প শুধু বাংলাদেশ সফরের জন্য নয়। ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে পাকিস্তান দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবেও এই ক্যাম্পকে দেখা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে হেসন বলেন, ‘এই ক্যাম্প মূলত আমরা কোন জায়গাগুলোতে পিছিয়ে আছি, তা চিহ্নিত করা এবং সেসব নিয়ে কাজ করার জন্য। আমাদের যে অল্প সময় ছিল, এমনকি আগের সিরিজেও, তাতেই আমরা বুঝতে পেরেছি দলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক বিষয় আছে, যেগুলো নিয়ে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এই কারণেই আমাদের হাতে এক সপ্তাহ সময় রাখা হয়েছে। প্রথম কদিন এই মৌলিক দিকগুলোতেই মনোযোগ দেব, এরপর বাংলাদেশকে (সফর) কেন্দ্র করে নির্দিষ্ট প্রস্তুতি শুরু করব।’