পাকিস্তানের ২০০–এর জবাবে ১০০–ও করতে পারল না আফগানিস্তান
শিরোনাম দেখে মনে হতে পারে টি–টোয়েন্টি ম্যাচ। মারকাটারি ক্রিকেটের যুগে টি–টোয়েন্টিতে ২০০ রান তো হরহামেশাই হয়।
তবে পাকিস্তান–আফগানিস্তানের এই ম্যাচটা টি–টোয়েন্টি নয়; ওয়ানডে। ওয়ানডে সংস্করণের এশিয়া কাপ শুরু হওয়ার সপ্তাহখানেক আগে এই টুর্নামেন্টের দুই দল ৫০ ওভারের খেলা বাদ দিয়ে অন্য খেলা খেলতে যাবেন কেন বলুন!
সে যাই হোক, এশিয়া কাপ সামনে দুই দল নিরপেক্ষ ভেন্যু শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটায় খেলছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ; যার প্রথমটি খুব দ্রুতই শেষ হয়ে গেল। আফগানিস্তানকে ১৪২ রানে হারিয়ে সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল পাকিস্তান।
মাহিন্দা রাজাপক্ষে স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে আফগান স্পিনত্রয়ী রশিদ–মুজিব–নবীর ঘূর্ণিতে ২০১ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। অপেক্ষাকৃত ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে হলেও দাঁড়াতেই পারেনি আফগানিস্তান। বলতে গেলে, রশিদদের ইটের জবাবে পাটকেল ছুঁড়েছেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলাররা। তাতেই আফগানরা গুটিয়ে গেছে মাত্র ৫৯ রানে। ওয়ানডেতে এটি আফগানদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন স্কোর। সবচেয়ে কম ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল ২০১৬ সালে শারজায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
আফগানিস্তানকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলতে সবচেয়ে বড় অবদান হারিস রউফের। ১৮ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন রউফ। এটি শুধু ওয়ানডে নয়; তাঁর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারেরই সেরা বোলিং। অনুমতিভাবে ম্যাচসেরার পুরস্কারটাও তাঁর হাতেই উঠেছে।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৬১ রান করেন ওপেনার ইমাম উল হক। তবে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ ব্যাটসম্যান বাবর আজমের ব্যাট হাতে আজ তেতো অভিজ্ঞতা হয়েছে। কোনো রান না তুলেই মুজিবের বলে আউট হয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সর্বশেষ তিন ডাকের দুটিই আফগানদের বিপক্ষে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা পাকিস্তানের সংগ্রহ ২০০ পেরোয় শাদাব খান ও ইফতিখারের ৩০ ছোঁয়া ইনিংসে।
ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন পিচে ইমাম, শাদাব, ইফতিখাররা তবু রান পেয়েছেন; রউফ, আফ্রিদি, নাসিমদের সামনে আফগান ব্যাটসম্যানরা তো দাঁড়াতেই পারেননি। দলটি এতটাই অসহায় হয়ে পড়েছিল যে, রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও আজমতউল্লাহ ওমরজাই ছাড়া কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। বাকি নয়জনের রান ফোন নম্বরের ডিজিটের মতো—০, ০, ০, ৪, ৭, ০, ২, ৪, ০। ভাগ্যিস, অতিরিক্ত খাত থেকে ৮ রান পেয়েছিল আফগানিস্তান। নয়তো নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বনিম্ন সংগ্রহের লজ্জাতেই পুড়তে হতো।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
পাকিস্তান : ৪৭.১ ওভারে ২০১
[ইমাম ৬১, শাদাব ৩৯, ইফতিখার ৩০, রিজওয়ান ২১, নাসিম ১৮*, বাবর ০; মুজিব ৩/৩৩, নবী ২/৩৪, রশিদ ২/৪২, রহমত ১/৬, ফারুকি ১/৫১]
আফগানিস্তান : ১৯.২ ওভারে ৫৯
[গুরবাজ ১৮, ওমরজাই ১৬ আহত, নবী ৭; রউফ ৫/১৮, আফ্রিদি ২/৯, শাদাব ০/১, নাসিম ১/১২]
ফল : পাকিস্তান ১৪২ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : হারিস রউফ।
সিরিজ : ৩ ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তান ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে।