আইপিএলে এত কম রান করেও জেতা যায়, দেখিয়ে দিল পাঞ্জাব

আইপিএলে ইতিহাস গড়া জয়ের পর পাঞ্জাব কিংস খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস। আজ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষেছবি: বিসিসিআই

অবিশ্বাস্য, অভাবনীয়, অকল্পনীয়!

মুল্লানপুরের মাঠে বসে তো বটেই, টিভি পর্দায় যাঁরা খেলাটা দেখেছেন, তাঁরা কি নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারছেন নাকি অবিশ্বাসের ঘোর থেকে বেরোতে চিমটি কেটে দেখছেন?

আইপিএল এখন এমন দিন এসে গেছে যে, ২৫০ রানও নিরাপদ নয়। সেখানে ১১১ রান তো কোন ছাড়!

তবে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে এই ‘মামুলি পুঁজিই’ যথেষ্ট বানিয়ে ফেলল পাঞ্জাব কিংস। বলিউডের দুই তারকার দলের লড়াইয়ে শাহরুখ খানের কলকাতাকে ৯৫ রানে অলআউট করে দিল প্রীতি জিনতার পাঞ্জাব। নিজেদের মাঠে সমর্থকদের খুশির জোয়ারে ভাসিয়ে পাঞ্জাব ম্যাচটা জিতে নিল ১৬ রানে।

আইপিএল ইতিহাসে এখন এটাই সবচেয়ে কম রান ডিফেন্ড করে জয়। আগের রেকর্ডেও জড়িয়ে ছিল পাঞ্জাবের নাম। ২০০৯ আসরে ডারবানে ১১৬ রান করেও পাঞ্জাবকে ২৪ রানে হারিয়েছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস।

পাঞ্জাবের রূপকথার মতো জয়ের নায়ক যুজবেন্দ্র চাহাল। ভারত জাতীয় দলের একাদশে প্রায় দুই বছর ধরে উপেক্ষিত এই লেগ স্পিনার ২৮ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি (২১১) এই বোলারের হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার।

পাঞ্জাবের জয়ের নায়ক যুজবেন্দ্র চাহাল
ছবি: রয়টার্স

পাঞ্জাবের বাকি বোলাররাও উইকেট পেয়েছেন—মার্কো ইয়ানসেন ৩টি এবং গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, অর্শদীপ সিং ও অভিষিক্ত জাভিয়ের বার্টলেটের শিকার ১টি করে।

একইভাবে কলকাতারও সব বোলার উইকেট পেয়েছেন। হর্ষিত রানা ৩টি, দুই স্পিনার সুনীল নারাইন ও বরুণ চক্রবর্তী ২টি করে, আনরিখ নর্কিয়া ও বৈভব অরোরা ১টি করে।

অথচ শুরুতে এটিকে আরেকটি রানবন্যার ম্যাচ বলেই মনে হচ্ছিল। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামা পাঞ্জাব ৩.১ ওভারে বিনা উইকেটে ৩৯ রান তুলে ফেলেছিল।

কিন্তু পরের বল থেকেই সেই যে টপাটপ উইকেট পড়া শুরু হলো, আর থামলই না। ৭২ রানেই সব কটি উইকেট হারায় শ্রেয়াস আইয়ারের নেতৃত্বাধীন দল।

সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৭ রানেই দুই ওপেনার সুনীল নারাইন ও কুইন্টন ডি কককে হারায় কলকাতা। এরপরও লক্ষ্যটা কলকাতার হাতের মুঠোতেই ছিল।

আইপিএলে নতুন রূপকথার জন্ম দিয়েছে পাঞ্জাব
ছবি: রয়টার্স

তৃতীয় উইকেট জুটিতে অধিনায়ক অজিঙ্কা রাহানে ও অংকৃষ রঘুবংশী ৫৫ রান যোগ করার পর তো কারও ঘুণাক্ষরেও ভাবার কথা নয় যে, এই ম্যাচ কলকাতা হারতে যাচ্ছে। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে তখন যে ৭৫ বলে মাত্র ৫০ রান দরকার ছিল!

কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে এখান থেকেই কলকাতার ইনিংসে মড়ক লাগে। ৩৩ রানের মধ্যে দলটির শেষ ৮ উইকেট তুলে নিয়ে ইতিহাস গড়ে পাঞ্জাব।