বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২২১। আফগানিস্তান: ৪৭.১ ওভারে ২২৬/৫।
টি–টোয়েন্টির ছন্দটা ওয়ানডেতে ধরে রাখত পারল না বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর বোলাররাও করতে পারেননি তেমন কিছু। টি–টোয়েন্টি সিরিজে আফগানিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করার তৃপ্তি তাই উড়ে গেল সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে ওদের কাছে ৫ উইকেটের হারে।
বাংলাদেশের হতাশার শুরুটা হয়েছিল টস জিতে ব্যাট করতে নামার পরই। ইনিংসের ৭ বল বাকি থাকতেই মেহেদী হাসান মিরাজের দল অলআউট হয়ে যায় ২২১ রানে। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান ফিরে যান দলের ৫৩ রানের মধ্যেই। ওয়ানডে অভিষেকে ৩৭ বলে ২৬ রান করেছেন সাইফ। তাঁর উদ্বোধনী সঙ্গী তানজিদ হাসান ১০ বলে ১০ আর তিনে নামা নাজমুল হোসেন করেছেন ৫ বলে ২ রান। তানজিদ-নাজমুল দুজনই ক্যাচ তুলেছেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের বলে।
এরপর বাংলাদেশ নতুন করে আশা দেখতে শুরু করে মেহেদী হাসান মিরাজ ও তাওহিদ হৃদয়ের ব্যাটে। চতুর্থ উইকেটে তাঁদের জুটিতে ১০১ রানের পরও খুব বেশি দূর এগোয়নি বাংলাদেশের ইনিংস। ১৫৪ রানে পড়েছিল চতুর্থ উইকেট, সেখান থেকে ২০৯/৯ হয়ে যায় একের পর এক ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়ায়।
বিপর্যয়ের শুরুটা হয় মিরাজের সঙ্গে ভুল–বোঝাবুঝিতে ওয়ানডেতে টানা তিন হাফ সেঞ্চুরি করা তাওহিদ হৃদয় ৫৬ রান করে রানআউট হলে। এরপর টানা ৩টি উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে ধসিয়ে দেন রশিদ খান।
তাঁর শুরুটা হয় মেহেদী হাসান মিরাজকে দিয়ে, বাংলাদেশ অধিনায়ককে এলবিডব্লু করে ওয়ানডেতে নিজের ২০০তম উইকেট পূর্ণ হয় রশিদের। এরপর জাকের আলী ও নুরুল হাসান দুজনকেই রশিদ এলবিডব্লু করেছেন গুগলিতে। শেষ দিকে তানজিম হাসানের ২৩ বলে ১৭ রানের সঙ্গে ১ ছক্কা ও সমান চারে ১১ রান করেন তানভীর ইসলাম।
তবু বাংলাদেশ যে স্কোর গড়ে, সেটি যথেষ্ট হয়নি। ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটির পর আফগানিস্তানকে আর খুব একটা চ্যালেঞ্জে পড়তে হয়নি। তৃতীয় উইকেটে ১১১ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়ে ম্যাচটা প্রায় মুঠোয় নিয়ে যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও রহমত শাহ।
পুরো ইনিংসে বাংলাদেশের যে সামান্য সম্ভাবনা জেগেছিল, সেটা পাঁচ বলের মধ্যে এই দুই আফগান ব্যাটসম্যানের বিদায়ে। তানজিম হাসানের বলে রহমত শাহ ক্যাচ তুলে দেওয়ার পরের ওভারে বোলিংয়ে এসে গুরবাজকে বোল্ড করেন মিরাজ। দুজনেই ঠিক ৫০ রান করেন।
বাংলাদেশের সেই সামান্য আশাও একটু পরই মিইয়ে যেতে থাকে আজমতউল্লাহ ওমরজাই আর হাশমতউল্লাহ শহীদির ৫৯ রানের জুটিতে। আজমত ৪৪ বলে ৪০ রান করে আউট হয়ে গেলেও দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন শহীদি। শহীদির ৩৩ আর নবীর অপরাজিত ১১ রানের ইনিংসে আফগানিস্তান ম্যাচটা জেতে ১৭ বল হাতে রেখেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২২১ (মিরাজ ৬০, হৃদয় ৫৬, সাইফ ২৬; রশিদ ৩/৩৮, ওমরজাই ৩/৪০, গজনফর ২/৫৫)। আফগানিস্তান: ৪৭.১ ওভারে ২২৬/৫ (গুরবাজ ৫০, রহমত ৫০, ওমরজাই ৪০, শহীদি ৩৩*, জাদরান ২৩; তানজিম ৩/৩১)। ফল: আফগানিস্তান ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আজমতউল্লাহ ওমরজাই।