ভারত ১ নম্বর দল হলেও তাদের আচরণ তৃতীয় শ্রেণির: বাসিত আলী

পাকিস্তানের সাবেক ব্যাটসম্যান বাসিত আলীইনস্টাগ্রাম

এশিয়া কাপের ফাইনাল হয়ে গেছে পাঁচ দিন হলো, ট্রফি-নাটক এখনো চলছে। আর সেই ট্রফি নিয়ে ভারত-পাকিস্তান বিতর্কও থামার কোনো লক্ষণ নেই। সেই বিতর্কের আগুনে এবার নতুন করে ঘি ঢেলেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী।

এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সভাপতি মহসিন নাকভিকে তিনি অনুরোধ করেছেন, যদি সূর্যকুমার যাদবের দল তাঁর হাত থেকে ট্রফি নিতে না চায়, তাহলে তিনিও যেন ট্রফিটি কোনোভাবেই ভারতকে না দেন। ভারত টি-টোয়েন্টির ১ নম্বর দল হলেও তাদের আচরণ তৃতীয় শ্রেণির বলে মন্তব্য করেছেন বাসিত।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে নাটকীয়ভাবে শেষ হয়েছিল আট দলের এশিয়া কাপ। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারায় ভারত। কিন্তু টুর্নামেন্টজুড়ে ভারত-পাকিস্তান যে রেষারেষি দেখা গেছে, সেটা বজায় ছিল ফাইনাল শেষেও। ভারতীয় দল পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভির হাত থেকে ট্রফি নিতে আপত্তি জানায়।

আরও পড়ুন

নাকভিও অন্য কারও মাধ্যমে ট্রফি দিতে রাজি হননি। ফলে ভারতকে ট্রফি না দিয়েই নাকভি দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম থেকে বেরিয়ে যান। এই ঘটনায় ফাইনাল শেষে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানও শুরু হয়েছিল এক ঘণ্টা দেরিতে। যদিও এই ঘটনায় ভারতীয় দলের উদ্‌যাপনে কোনো ছেদ পড়েনি।

সূর্যকুমার যাদব ও তাঁর দল পুরো ঘটনাটি নিজেদের মতো করে কল্পিত ট্রফি নিয়ে উদ্‌যাপন করেছেন। তবে এর পর থেকে ভারতের পক্ষ থেকে বারবার নাকভির কাছে ট্রফি চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু তিনি অনড়, তাঁর হাত থেকে ট্রফি নিতে হবে, নইলে নয়।

২৮ সেপ্টেম্বর এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ট্রফি ছাড়াই উদ্‌যাপন করেন ভারতের ক্রিকেটাররা
এএফপি

এসবের মধ্যের ভারতের গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে, নাকভির বিরুদ্ধে এসিসিতে অনাস্থা প্রস্তাব আনবে ভারত। এ ছাড়া নাকভি ট্রফি–কাণ্ডের জন্য ভারতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বলেও খবর বেরিয়েছিল, যা অপপ্রচার বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এসিসি প্রধান।

ভারতের এ সব আচরণ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাসিত আলী। পাকিস্তানের এআরওয়াই নিউজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘তারা বিশ্বের ১ নম্বর দল, কিন্তু তাদের আচরণ তৃতীয় শ্রেণির। মহসিন নাকভিই ট্রফি দেবেন। যদি নিতে না চায়, তবে বিশ্বের চোখে তারাই অপমানিত হবে। কিন্তু (নাকভির হাত থেকে না নিলে) ট্রফি কিছুতেই তাদের হাতে তুলে দেওয়া উচিত নয়।’

বাসিত আলী এ ব্যাপারে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে গিয়ে দাবি করেন, যদি একই ঘটনা উল্টোভাবে ঘটত—অর্থাৎ পাকিস্তান যদি আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহের কাছ থেকে ট্রফি নিতে না চাইত, তাহলে তিনি পাকিস্তানকে একই রকম দোষ দিতেন।

আরও পড়ুন

তাঁর কথা, ‘তোমরা (ভারত) ১ নম্বর দল, ভালো খেলেছ এবং জিতেছ। কিন্তু এটা কেমন ছেলেমানুষী জেদ? মহসিন নাকভি এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের প্রধান। ধরুন, এটা আইসিসির কোনো টুর্নামেন্ট, আর পাকিস্তান জয় শাহের কাছ থেকে ট্রফি নিতে অস্বীকার করল। সে ক্ষেত্রেও কিন্তু আমি বলতাম, পাকিস্তান ভুল করেছে।’

আরও পড়ুন

এই সপ্তাহের শুরুতে এসিসির এক সভায় এই ট্রফি-বিতর্ক নিয়ে পিসিবি ও বিসিসিআই প্রতিনিধিদের মধ্যে তীব্র বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। জানা যায়, বিসিসিআই প্রতিনিধিরা (আশিস শেলার ও রাজীব শুক্লা) পিসিবি চেয়ারম্যানকে বলেন, হয় ট্রফি ফিরিয়ে দিতে, না হয় এসিসি সদর দপ্তরে পাঠিয়ে দিতে। কিন্তু নাকভি বিষয়টি এড়িয়ে যান।

এরপর নাকভি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্ট দিয়ে তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করেন। জানান, তিনি তাঁর অবস্থানেই অনড় আছেন। যদি ভারত ট্রফি চায়, তাহলে অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে এসিসি সদর দপ্তরে এসে তাঁর হাত থেকে তা গ্রহণ করতে হবে।