পাকিস্তানের সাবেক পেসারের দাবি, আইপিএল ম্যাচ পাতানোর ‘সবচেয়ে বড় মঞ্চ’
আইপিএল নিয়ে পুরোনো বিতর্কটা আবারও সামনে টেনে আনলেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার তানভীর আহমেদ। তাঁর মতে, ভারতের এ ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগ ম্যাচ পাতানোর ‘সবচেয়ে বড় মঞ্চ’।
পাকিস্তানের হয়ে ৫টি টেস্ট, ২টি ওয়ানডে ও ১টি টি-টোয়েন্টি খেলা তানভীর এই অভিযোগ তুললেন রাজস্থান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (আরসিএ) অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়ক জয়দীপ বিহানি একই অভিযোগ করার পর।
আইপিএলে ১৬ এপ্রিল দিল্লি ক্যাপিটালসের কাছে সুপার ওভারে হারে রাজস্থান রয়্যালস। এরপর ১৯ এপ্রিল লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের বিপক্ষে আবার ২ রানে হারে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। দুটি ম্যাচেরই একপর্যায়ে জয়ের সুযোগ ছিল রাজস্থানের। সেখান থেকে হেরে যাওয়ায় রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ তোলেন বিহানি। তবে এক চিঠিতে অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হয়তো রাজস্থানের কাছ থেকে আইপিএলের টিকিট কম পেয়েই এমন অভিযোগ করেছে আরসিএ। টাইমস অব ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, আরসিএ আইপিএলে সাধারণত যে পরিমাণ টিকিট পেয়ে থাকে, এবার তার চেয়ে কম পেয়েছে। ভারতের রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাটির অসন্তোষের পেছনে এটা মূল কারণ হতে পারে বলে জানানো হয়।
সে যা–ই হোক, তানভীর এ বিতর্কে নতুন করে ঘি ঢেলেছেন। ৪৬ বছর বয়সী সাবেক এ ক্রিকেটারের এক্স হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘বিসিসিআই গর্বভরে দাবি করে আইপিএল বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট লিগ। হ্যাঁ, এটা তা–ই, কিন্তু এটা ম্যাচ পাতানোর সবচেয়ে বড় মঞ্চও। বেশির ভাগ দলই বাজিকরদের হাতের মুঠোয়।’
তিন সংস্করণ মিলিয়ে ২০ উইকেট নেওয়া তানভীরের এই মন্তব্য অনেক নেটিজেনই ভালোভাবে নেননি। একজনের মন্তব্য, ‘বিসিসিআই কবে এমন দাবি করল, সেটা একবারের জন্য হলেও দেখান। আপনি একটা ভাঁড়, যে ৫টি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছে। এটাই আপনার জীবনের একমাত্র অর্জন।’ আরেকজনের মন্তব্য, ‘মাত্র ৫টি টেস্ট খেলা এই প্রতারক, যে কিনা নজর কাড়তে চায়, তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করার অনুরোধ করছি বিসিসিআইয়ের কাছে।’ আরেকজন নেটিজেন যিনি সম্ভবত জাতিতে পাকিস্তানি, তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের সাবেক ক্রিকেটাররা গোটা বিশ্বের সামনে আমাদের লজ্জায় ফেলতে কখনো ব্যর্থ হয় না।’
রাজস্থানের বিরুদ্ধে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিটির ভেতরের এক সূত্র টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, ‘মৌসুমের শুরুতে বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে আমরা পরিষ্কার নির্দেশিকা পেয়েছি, আরসিএ যেহেতু ভেঙে দেওয়া হয়েছে, আমরা সবকিছু আয়োজনের বিষয়ে রাজস্থান স্টেট স্পোর্টস কাউন্সিলের (আরএসএসসি) সঙ্গে যোগাযোগ করব। আরসিএ অ্যাডহক কমিটির অসন্তুষ্ট সদস্য এবং তাঁর সহযোগীরা অত্যধিকসংখ্যক টিকিট দাবি করছেন এবং আমরা তাতে কর্ণপাত করছি না। এত নাটকের এটাই মূল কারণ।’
রাজস্থান রয়্যালস ম্যানেজমেন্ট ম্যাচ পাতানোর দাবি কড়া ভাষায় প্রত্যাখ্যান করে চিঠিতে লিখেছে, ‘অ্যাডহক কমিটির আহ্বায়কের সব রকম অভিযোগ আমরা প্রত্যাখ্যান করছি। জনসমক্ষে এমন মন্তব্য শুধু বিভ্রান্তিই তৈরি করেনি, রাজস্থান রয়্যালস, রয়্যাল মাল্টি স্পোর্ট প্রাইভেট লিমিটেড (আরএমপিএল), রাজস্থান স্পোর্টস কাউন্সিল ও বিসিসিআইয়ের সুনাম এবং বিশ্বাসযোগ্যতাকেও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।’
আইপিএলে এ পর্যন্ত ৮ ম্যাচ খেলে মাত্র দুটি জয় পেয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। ৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের আটে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। লক্ষ্ণৌর বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচে হাতে ৬ উইকেট রেখেও শেষ ওভারে ৯ রান তুলতে পারেনি রাজস্থান। দিল্লির বিপক্ষে তার আগের ম্যাচেও শেষ ওভারে ৯ রান দরকার ছিল দলটির। হাতে ৭ উইকেট। কিন্তু এ অবস্থা থেকেও তারা জিততে পারেনি। ম্যাচ টাই করে শেষ পর্যন্ত সুপার ওভারে হেরেছে।