ক্রিকেট বিশ্বকাপের ‘ব্রাজিল’ অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলফাইল ছবি

বিশ্বকাপের দল

•অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক) •অ্যাশটন অ্যাগার •প্যাট কামিন্স •টিম ডেভিড •জশ হ্যাজলউড •জশ ইংলিস •মিচেল মার্শ •গ্লেন ম্যাক্সওয়েল •কেইন রিচার্ডসন •স্টিভ স্মিথ •মিচেল স্টার্ক •মার্কাস স্টয়নিস •ম্যাথু ওয়েড •ডেভিড ওয়ার্নার •অ্যাডাম জাম্পা

ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিল যা, ওয়ানডে ক্রিকেটের বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াও তা-ই। ওরা খেলে শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য এবং হয়ও। পাঁচটা ওয়ানডে বিশ্বকাপের ট্রফি সেই সাক্ষ্য দেবে। বিস্ময়কর হচ্ছে, সেই অস্ট্রেলিয়াই প্রথম ছয় আসরে একবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি জিততে পারেনি! অবশেষে অ্যারন ফিঞ্চের দল সেই আক্ষেপ ঘুচিয়েছে গত বছর নভেম্বরে দুবাইয়ের আলো ঝলমলে রাতে। ইতিহাস সাক্ষী, অস্ট্রেলিয়ার অভ্যাস আছে একবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া শুরু করলে ট্রফিটা পরের কয়েকবার ধরে রাখার। ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত টানা তিনবার ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতা অস্ট্রলিয়া কি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও এই কীর্তির পুনরাবৃত্তি করতে পারবে? 

অ্যারন ফিঞ্চদের লক্ষ্য যে সে রকমই কিছু, সেটা বোধ হয় না বললেও চলে। সে কারণেই গত বছর চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটা প্রায় না পাল্টেই এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল সাজিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। একমাত্র পরিবর্তন লেগ স্পিনার মিচেল সোয়েপসনের বদলে বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান টিম ডেভিড। সিঙ্গাপুরের হয়ে ঝোড়ো ব্যাটিং করে নজরকাড়া ডেভিডের অস্ট্রেলিয়ার হয়ে অভিষেক হয়েছে সম্প্রতি ।

অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ
ফাইল ছবি

সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে এই বিশ্বকাপ পর্যন্ত আসলে খুব বেশি টি-টোয়েন্টি খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি সিরিজ, মাঝে পাকিস্তান সফরে একটা ম্যাচ, তারপর ভারতের বিপক্ষে একটা সিরিজ। খুব বেশি ম্যাচ যেহেতু খেলা হয়নি, দলটাও তাই খুব একটা বদলানোর দরকার পড়েনি। যাঁরা একবার জিতেছেন, তাঁদের ওপর ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া আস্থা রেখেছে নিশ্চিন্তে। আর সবচেয়ে বড় কথা, এই বিশ্বকাপটা অস্ট্রেলিয়া খেলবে নিজেদের দেশে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ও স্বাগতিক হিসেবে এবারও সবচেয়ে বড় ফেবারিট অস্ট্রেলিয়াই।

আপাতত দুর্বলতা হিসেবে অধিনায়ক ফিঞ্চের বাজে ফর্মটাই সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে। ২০২১ সালের শুরু থেকে ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগপর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে ফিঞ্চে গড় ৩০-এর নিচে, স্ট্রাইক রেট ১২৫-এর কম। তবে দুর্দান্ত নেতৃত্বগুণ দিয়ে ফিঞ্চ সেটা পুষিয়ে দিচ্ছেন বলেই এ নিয়ে খুব একটা ভাবতে হয়নি অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচকদের। 

সোয়েপসন নেই মানে অস্ট্রেলিয়া দলে বিশেষজ্ঞ স্পিনার আসলে শুধু অ্যাডাম জাম্পা ও অ্যাশটন অ্যাগার। দরকার পড়লে হাত ঘোরাতে পারেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। তবে অস্ট্রেলিয়ান উইকেটে সেটার খুব একটা দরকার পড়বে বলে মনে হয় না।

মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজলউড, কেইন রিচার্ডসনকে নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ যেকোনো দলের জন্য আরাধ্য। তবে তাঁরা যদি প্রতিপক্ষ হন, এর চেয়ে বড় আতঙ্ক আর কিছু হতে পারে না। সঙ্গে মিচেল মার্শ ও মার্কাস স্টয়নিসও কয়েকটা ওভার পেতে পারেন সব ম্যাচেই। বলা হচ্ছে, এই বিশ্বকাপটা হতে পারে পেসারদের। আর অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণ তো তর্কযোগ্যভাবে টুর্নামেন্টের সেরাই বলা যায়। 

এই পেস আক্রমণ, প্রায় অক্ষত গতবারের চ্যাম্পিয়ন দল এবং সঙ্গে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা— ট্রফিটা অস্ট্রেলিয়ার কাছ থেকে কেড়ে নিতে বেশ কষ্ট হবে যেকোনো দলের। 

সূচি

সুপার টুয়েলভ

২২ অক্টোবর   বেলা ১টা       সিডনি          নিউজিল্যান্ড

২৫ অক্টোবর   বিকেল ৫টা    পার্থ              এ ১

২৮ অক্টোবর   বেলা ২টা       মেলবোর্ন       ইংল্যান্ড

৩১ অক্টোবর   বেলা ২টা       ব্রিসবেন        বি ২

০৪ নভেম্বর   বেলা ২টা       অ্যাডিলেড     আফগানিস্তান

৮.২৯
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওভারপ্রতি সবচেয়ে বেশি রান তুলেছে অস্ট্রেলিয়া।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি শতরানের জুটি অস্ট্রেলিয়ার।
২৪
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট মিচেল স্টার্কের (২৪)