একাদশের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দেরও অবদান দেখেন নাজমুল
পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে ধবল ধোলাই—ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণে বাংলাদেশের ২৪ বছরের ইতিহাসে এটাই কি সবচেয়ে বড় গৌরব? যা-ই হোক, সেই গৌরবতিলক এখন বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের কপালে।
নাজমুল হোসেনের নেতৃত্বে আসা এই সাফল্য তাঁর নিজের জন্য কতটা, সেটি বলে দিতে হয় না। রাওয়ালপিন্ডিতে আজ দ্বিতীয় টেস্টের শেষ দিনে পাকিস্তানকে ৬ উইকেটে হারানোর পর বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল নিজের অনুভূতি জানিয়েছেন সম্প্রচারকদের কাছে, ‘এই সাফল্য আমাদের জন্য বিরাট একটা ব্যাপার। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। আমরা পাকিস্তানে জিততে চেয়েছিলাম। আনন্দ এই কারণে যে দলের সবাই এই সাফল্যের জন্য নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে শতভাগ।’
পাকিস্তানে পুরোপুরি রূপান্তরিত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে দেখা গেল। সিরিজের দুই টেস্টেই নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া জয় বাংলাদেশের। দুটি টেস্টেই দারুণ করেছেন ফাস্ট বোলার ও স্পিনাররা। হাসান মাহমুদ, নাহিদ রানা, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদরা নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন মাঠে। তবে গতির ওপর নির্ভর করে টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্য—এ যেন নতুন বাংলাদেশই।
অধিনায়ক নাজমুল পেসারদের কথা বললেন আলাদাভাবেই, ‘আমাদের ফাস্ট বোলাররা যে পরিশ্রম করে নিজেদের তৈরি করেছে, সেটি অনন্য। পেসারদের জন্যই আমরা এই সাফল্য পেয়েছি। শুধু পেসাররা নয়, দলের প্রত্যেকেই নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন ছিল। প্রত্যেকেই জিততে চেয়েছে। আশা করছি, এই সাফল্য অব্যাহত থাকবে।’
রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের ২০ উইকেটের মধ্যে ১৬টি উইকেটের পতন হয়েছে। এর মধ্যে স্পিনাররা নিয়েছেন ৯ উইকেট, পেসারদের শিকার ৭ উইকেট। একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় টেস্টে পাকিস্তানের ২০টি উইকেটই তুলে নিয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। পেসাররা নিয়েছেন ১৪ উইকেট, এর মধ্যে পাকিস্তানের দ্বিতীয় ইনিংসে ১০টি উইকেটই পেসারদের। পাকিস্তানের প্রথম ইনিংসে স্পিনার মিরাজ নেন ৫ উইকেট। সাকিব নেন ১ উইকেট।
বদলে যাওয়া এই বাংলাদেশ দলে নাজমুল বলেছেন একাদশের বাইরে থাকা খেলোয়াড়দের ভূমিকার কথাও। এটিকে নতুন এক সংস্কৃতিও বলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক, ‘এই সাফল্যে দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়েরই সমান ভূমিকা আছে। সাফল্যে বড় অবদান রেখেছে একাদশের বাইরে থাকা চার ক্রিকেটারও। তারা মাঠের বাইরে থেকে নানাভাবে অবদান রেখেছে। আশা করি, এই সংস্কৃতি অব্যাহত থাকবে।’
সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের অভিজ্ঞতাও পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রথম টেস্টে মুশফিকুর রহিমের অনবদ্য ১৯১ রান, প্রয়োজনের মুহূর্তে সাকিবের উইকেট তুলে নেওয়া দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। অধিনায়ক নাজমুল মুশফিক ও সাকিবের ভূমিকাকেও দেখছেন আলাদা চোখেই।
ভারতের বিপক্ষে পরের সিরিজে এ দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের ওপর ভরসার কথাও জানিয়ে রাখলেন নাজমুল, ‘আমাদের দলে সাকিব ভাই আর মুশফিক ভাইয়ের বিশাল অভিজ্ঞতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই অভিজ্ঞতা ভারতের বিপক্ষে সিরিজে আমাদের বড় অস্ত্র। আশা করছি পাকিস্তানে তাঁরা দুজন যেভাবে খেলেছেন, ভারতের বিপক্ষে পরের সিরিজেও তাঁরা একই রকম পারফর্ম করবেন।’