শালকভিকের রেকর্ড, দক্ষিণ আফ্রিকাকে ধবলধোলাই করতে পারল না বাংলাদেশ

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে ২–১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ জিতল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব–১৯ দল। আজ শেষ ওয়ানডেতে ১৬৪ রান করেছেন ফন শালকভিক, যা যুব ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো ব্যাটসম্যানের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ।

যুব ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস উপহার দিয়েছেন ইয়োরিচ ফন শালকভিক। আজ বেনোনিতে বাংলাদেশের বিপক্ষেছবি: সিএসএ

শ্রীলঙ্কার পর পাকিস্তানের বিপক্ষেও প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ সফরকারীদের ৮ রানে হারিয়েছে লিটন দাসের দল।

তবে একই দিনে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এল দুঃসংবাদ। যুব ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের কাছে ডিএলএস পদ্ধতিতে ১৪ রানে হারল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। ফলে প্রোটিয়াদের ধবলধোলাই করা হলো না আজিজুল হাকিমের দলের।

বেনোনির উইলোমুর পার্কে আজ টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ৩২০ রান করেছিল বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দক্ষিণ আফ্রিকা ৪৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ২৭৭ রান করার পর বৃষ্টি শুরু হয়। জয়ের জন্য প্রোটিয়া যুবাদের তখনো দরকার ৩২ বলে ৪৪ রান।

১৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার ফন শালকভিক
ছবি: সিএসএ

বেশ কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি থামলেও আলোকস্বল্পতার কারণে আর খেলা সম্ভব হয়নি। সেই সময় ডিএলএস পদ্ধতিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ১৪ রানে এগিয়ে থাকায় তাদের জয়ী ঘোষণা করা হয়।

১৪ চার ও ৪ ছক্কায় ১৫৬ বলে ১৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন ওপেনার ইয়োরিচ ফন শালকভিক, যা যুব ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ। আগের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ছিল জ্যাক রুডলফের অপরাজিত ১৫৬, নেপালের বিপক্ষে ২০০০ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে।

একই ভেন্যুতে প্রথম দুই ওয়ানডে জিতে আগেই সিরিজ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশের যুবারা। ফলে আজকের ম্যাচটি তাদের জন্য ছিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও বেঞ্চশক্তি পরখ করে দেখার। শনিবার ১০৪ রানে জেতা দ্বিতীয় ওয়ানডের একাদশ থেকে তাই চারটি পরিবর্তন আনে বাংলাদেশ। সামিউন বশির, ফরিদ হাসান, আল ফাহাদ ও ইকবাল হোসেনের পরিবর্তে আজ খেলতে নামেন কালাম সিদ্দিকি, রাফি উজ্জামান, শাহরিয়া আল আমিন ও ফারজান আহমেদ।

৬ উইকেট নিয়েছেন এনতান্ডো সোনি
ছবি: সিএসএ

একাদশে ফেরা কালাম ব্যাট হাতে দারুণ অবদান রাখেন। ৭৮ বলে করেন ৮৫ রান। এর আগে দুই ওপেনার জাওয়াদ আবরার (৬৮) ও রিফাত বেগ (৮৬) বড় স্কোরের ভিত গড়ে দেন। দুজনের জুটি থেকে আসে ৯৭ রান। ১৭তম ওভারের শেষ বলে জাওয়াদ আউট হলেও কালামকে নিয়ে ১২৫ রানের জুটি গড়েন রিফাত। একপর্যায়ে ১ উইকেটেই ২২২ রান তুলে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এরপরই ছন্দপতন।

এনতান্ডো সোনির ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে দ্রুত উইকেট হারিয়ে ৩২০ রানে থামে বাংলাদেশ। সফরকারীদের শেষ সাত ব্যাটসম্যানের কেউ ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি। সোনি ৬৫ রানে নেন ৬ উইকেট।

লক্ষ্য তাড়ায় এ দিন শুরু থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। আদনান লাগাদিন ১০ রান করে আউট হলেও দ্বিতীয় উইকেটে মোহাম্মদ বুলবুলিয়া ও ফন শালকভিকের ১৮১ রানের জুটি প্রোটিয়াদের জয়ের দিকে নিয়ে যায়। বুলবুলিয়ার (৬২) আউটে এই জুটি ভাঙার পর অধিনায়ক জেসন রোলেসও (৫) বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।

কিন্তু রেকর্ড গড়া শালকভিক ছিলেন অবিচল। ভিহান প্রিটোরিয়াসকে নিয়ে বাকি কাজ সেরে মাঠ ছাড়ার লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু আচমকা বৃষ্টিই কাজটা করে দিয়েছে।

ম্যাচসেরার পুরস্কার হাতে এনতান্ডো সোনি (বাঁয়ে)
ছবি: সিএসএ

অবশ্য যুব ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস উপহার দিয়েও ম্যাচসেরা হতে পারেননি ফন শালকভিক। পুরস্কারটা উঠেছে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের রানের লাগাম টেনে ধরা এনতান্ডো সোনি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৫০ ওভারে ৩২০/৯ (রিফাত ৮৬, কালাম ৮৫, জাওয়াদ ৬৮, আজিজুল ২৯; সোনি ৬/৬৫, এমবাথা ১/৩০, ব্যাসন ১/৬২, মাজোলা ১/৭০)।

দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৪.৪ ওভারে ২৭৭/৩ (শালকভিক ১৬৪*, বুলবুলিয়া ৬২, প্রিটোরিয়াস ১৮ লাগাদিন ১০; শাহরিয়া ২/৪২, আজিজুল ১/৫১)।

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দল ১৪ রানে জয়ী (ডিএলএস)।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইয়োরিচ ফন শালকভিক।

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল ২-১ ব্যবধানে জয়ী।