চলে গেলেন পিসিবির আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান ইজাজ বাট

মারা গেছেন পিসিবির সাবেক চেয়ারম্যান ইজাজ বাটপিসিবি

মারা গেছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক উইকেটকিপার ইজাজ বাট। লাহোরে ৮৫ বছর বয়সে মারা গেছেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে পিসিবি।

পিসিবির ইতিহাসের অন্যতম আলোচিত চেয়ারম্যান ছিলেন ইজাজ। তাঁর আমলে বেশ টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে দেশটির ক্রিকেট। ২০০৯ সালে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দল ও ম্যাচ অফিশিয়ালদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, ২০১০ সালে স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি, একাধিকবার অধিনায়কত্বে বদল ও কয়েকজন ক্রিকেটারকে অনির্দিষ্টকালের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল ইজাজের সময়ে।

২০০৮ সালে তখনকার পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ইজাজকে পিসিবির চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। তাঁর দায়িত্ব নেওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যেই লাহোরে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। সে হামলায় আটজন প্রাণ হারান এবং শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটার, ম্যাচ অফিশিয়ালসহ আহত হন অনেকে। এ ঘটনার কারণে দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজন করতে পারেনি পাকিস্তান।

ওই সন্ত্রাসী হামলার পর আইসিসির ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রড নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বাট সেসবকে ‘মিথ্যা’ বলে উড়িয়ে দেন।

২০০৯ সালে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের বাইরে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিল শ্রীলঙ্কা দল
ফাইল ছবি

২০১০ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরের পর মোহাম্মদ ইউসুফ ও ইউনুস খানের মতো ক্রিকেটারকে অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করেছিল পিসিবি। শোয়েব মালিক, নাভেদ-উল-হাসানকে দেওয়া হয়েছিল এক বছরের নিষেধাজ্ঞা। অন্যদিকে শহীদ আফ্রিদি, কামরান আকমল ও উমর আকমলকে রাখা হয়েছিল ছয় মাসের নজরদারিতে। অবশ্য ইউসুফ ও ইউনুস কয়েক মাস পরই টেস্ট ক্রিকেটে ফেরেন।

আরও পড়ুন

সে বছরই লর্ডস টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ে জড়ানোর প্রমাণ পাওয়া যায় তিন ক্রিকেটার অধিনায়ক সালমান বাট, মোহাম্মদ আসিফ ও মোহাম্মদ আমিরের বিপক্ষে। টাকার বিনিময়ে আমির ও আসিফ ইচ্ছা করে ‘নো’ বল করেছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ হন তিনজনই, কারাভোগও করতে হয় তাঁদের। পিসিবি ও ইসিবির মধ্যে সে সময় সম্পর্কের অবনতি হয়, যাতে অবদান ছিল ইজাজেরও।

২০১১ সালে এখনকার প্রেসিডেন্ট জাকা আশরাফকে পিসিবি চেয়ারম্যান হিসেবে জায়গা করে দিতে হয় তাঁর। সেই আশরাফ ইজাজের মৃত্যুতে বলেছেন, ‘পিসিবির পক্ষ থেকে ইজাজ বাটের মৃত্যুতে আমি গভীর সমবেদনা জানাই। ব্যক্তিগতভাবে তাঁকে জানার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। তাঁর জন্য অনেক সম্মান আছে আমার। ইজাজ বাটের পরিবার ও বন্ধুদের আমি গভীর সমবেদনা জানাই এবং তাঁদের নিশ্চিত করতে চাই যে পাকিস্তান ক্রিকেটে অবদান রাখার জন্য তাঁকে সব সময় মনে রাখা হবে।’

পাকিস্তানের হয়ে আটটি টেস্ট খেলা এ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানের অভিষেক হয়েছিল ১৯৫৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করাচিতে। ১৯৬২ সালে ওভালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। ১৯৮২ সালে অস্ট্রেলিয়া সফরে পাকিস্তান দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কয়েকবার নির্বাচক কমিটির প্রধানও ছিলেন।

১৯৮৪ থেকে ১৯৮৮ সালের মধ্যে তখনকার বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন পাকিস্তানের (এখনকার পিসিবি) সচিবের দায়িত্বও পালন করেছিলেন ইজাজ।

আরও পড়ুন