রোহিতের সেঞ্চুরি মানেই ভারতের টেস্ট জয়, জেতা ম্যাচে বাংলাদেশের বেশি সেঞ্চুরি কার

রাজকোটে ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি করেছেন রোহিত শর্মাএএফপি

রোহিত শর্মা সেঞ্চুরি করলে ম্যাচ হারে না ভারত। সেটি প্রমাণিত হলো আরেকবার।

রাজকোটে যশস্বী জয়সোয়ালের ডাবল সেঞ্চুরি নিয়ে বেশ আলোচনা। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটের পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরার পুরস্কার অবশ্য গেছে রবীন্দ্র জাদেজার কাছে। এর সঙ্গে অভিষিক্ত সরফরাজ খানের জোড়া ফিফটিও আছে। রেকর্ড ব্যবধানে জয়ের ম্যাচে রোহিত শর্মার প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরি যেন চলে গেছে অনেকটাই আড়ালে।

প্রথম ইনিংসে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে ভারত পরিণত হয়েছিল ৩৩ রানে ৩ উইকেটে। এরপর পাঁচে আসা জাদেজার সঙ্গে রোহিতের জুটিতেই বড় স্কোরের পথে এগোয় ভারত। রোহিত নিজে করেন ক্যারিয়ারের ১১তম সেঞ্চুরি। পরে জয়সোয়ালের ডাবল সেঞ্চুরিতে দ্বিতীয় ইনিংসেও বড় স্কোর নিশ্চিত করে ইংল্যান্ডের বিশাল লক্ষ্য। শেষ পর্যন্ত ভারত জেতে রেকর্ড ব্যবধানে

রাজকোটে প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিটি ছিল রোহিতের ক্যারিয়ারে ১১তম। এর প্রতিটিতেই জিতেছে ভারত।

২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেকেই সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন রোহিত। মাঝে এ সংস্করণ থেকে বাইরে ছিলেন, ২০২১ সালে ফেরেন আবার। এখন তো দলের অধিনায়কই। রোহিতের ১১টি সেঞ্চুরির ৯টিই দেশের মাটিতে। ১টি ইংল্যান্ডে, আরেকটি ওয়েস্ট ইন্ডিজে।

রোহিত সেঞ্চুরি করেছেন, এমন কোনো ম্যাচেই হারেনি ভারত
এএফপি

ক্যারিয়ারে সেঞ্চুরি করা সব কটি ম্যাচেই জিতেছে দল—এ তালিকায় রোহিতই সবার ওপরে। এরপর আছেন ট্রাভিস হেড। এ অস্ট্রেলিয়ান এখন পর্যন্ত করেছেন ৭টি সেঞ্চুরি, প্রতিটি ম্যাচেই জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ‘বড় ম্যাচের ব্যাটসম্যান’ হেডের একটি সেঞ্চুরি আবার ভারতের বিপক্ষে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে।

রোহিত ও হেডের পর এ তালিকায় আছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক ব্যাটসম্যান ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং। এখনো খেলছেন বলে রোহিত ও হেড দুজনই সামনে সেঞ্চুরি করেও হারের স্বাদ পেতে পারেন। আর্মস্ট্রংয়ের তা পেতে হবে না। ১৯৪৭ সালেই তিনি মারা গেছেন।

আরও পড়ুন

১৯০২ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে ‘বিগ শিপ’ নামে পরিচিত আর্মস্ট্রং খেলেছিলেন ৫০টি টেস্ট। ৮টি ফিফটির সঙ্গে করেছিলেন ৬টি সেঞ্চুরি। ওই ৬ ম্যাচেই জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। আর্মস্ট্রংয়ের ৫টি সেঞ্চুরিই আবার এসেছিল দলের দ্বিতীয় ইনিংসে।

সেঞ্চুরি করে হারের স্বাদ কখনো পাননি ড্যারেন লেম্যানও। পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ কোচের টেস্ট ক্যারিয়ার তেমন লম্বা নয়, খেলেছিলেন ২৭টি ম্যাচ। সেঞ্চুরি করেছিলেন ৫টি। তাঁর ২টি সেঞ্চুরি আবার এসেছিল বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০০৩ সালের সিরিজে।

জেতা ম্যাচে সেঞ্চুরির তালিকায় বাংলাদেশ সবার আগে মুমিনুল হক
প্রথম আলো

লেম্যানের সমান ৫টি সেঞ্চুরি করে এখন পর্যন্ত হারতে হয়নি ওলি পোপকেও। যদিও ইংল্যান্ডের এখনকার সহ-অধিনায়কেরও রোহিত ও হেডের মতোই ‘শঙ্কা’ আছে সেঞ্চুরি করেও দল হারের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হওয়ার।

আরও পড়ুন

সব মিলিয়ে জেতা ম্যাচে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির তালিকায় প্রথম চারটি নামই অস্ট্রেলিয়ার। এর মধ্যে প্রথম তিনজন দলটির সাবেক অধিনায়ক—রিকি পন্টিং (৩০), স্টিভ ওয়াহ (২৫) ও ডন ব্র্যাডম্যান (২৩)। তাঁদের পর আছেন ম্যাথু হেইডেন। সাবেক এ ওপেনার ক্যারিয়ারে করেছেন ৩০টি সেঞ্চুরি, এর মধ্যে ২৩টিই এসেছে জেতা ম্যাচে। এর বাইরে জেতা ম্যাচে ২২টি সেঞ্চুরি আছে ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিসের।

জেতা ম্যাচে সেঞ্চুরির তালিকায় বাংলাদেশ সবার আগে মুমিনুল হক। তাঁর এমন সেঞ্চুরির সংখ্যা ৫। ৪টি করে আছে তামিম ইকবাল ও নাজমুল হোসেনের, জেতা ম্যাচে ৩টি করে সেঞ্চুরি করেছেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিম।

হারা ম্যাচে সেঞ্চুরি কার বেশি, এতক্ষণে সে কৌতূহলও জাগতে পারে। তালিকার প্রথম দুটি নামই অনেক ‘বড়’। হারা ম্যাচে সবচেয়ে বেশি ১৪টি সেঞ্চুরি নিয়ে সবার ওপরে ব্রায়ান লারা, দুইয়ে থাকা শচীন টেন্ডুলকারের এমন সেঞ্চুরির সংখ্যা ১১। এরপর আছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই শিবনারায়ণ চন্দরপল (৯) ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ ইউসুফ (৯)।