ঢাকা ক্যাপিটালস: গুরবাজ-হেলসের সঙ্গে অলরাউন্ডাররাই বড় শক্তি
দরজায় কড়া নাড়ছে বিপিএল। নানা শঙ্কা, আলোচনা আর সমালোচনা পেছনে ফেলে ২৬ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে মাঠের লড়াই। দলগুলোও কয়েক দিন ধরে অনুশীলনে ঘাম ঝরাচ্ছে। প্রস্তুতি নিচ্ছে নিজেদের মতো করে। আজ–কালের মধ্যেই যোগ দিতে শুরু করবেন বিদেশি ক্রিকেটাররাও।
বিপিএল শুরুর আগে দলগুলোর শক্তি আর দুর্বলতা খোঁজার চেষ্টা এই ধারাবাহিক প্রতিবেদনে।
আজকের দল: ঢাকা ক্যাপিটালস
শক্তি: টপ অর্ডারের বারুদ আর অলরাউন্ডারের ভিড়
ঢাকার টপ অর্ডার বেশ শক্তিশালী। রহমানউল্লাহ গুরবাজ আর অ্যালেক্স হেলস যদি শুরুতেই ঝড় তুলতে পারেন, তবে ঢাকার কাজ অর্ধেক সহজ হয়ে যাবে। হেলসের তো ঝড় তুলতে ফর্ম লাগে না। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে ক্রিস গেইলের (১৪,৫৬২ রান) রেকর্ড ভাঙার খুব কাছে ইংলিশ এই ওপেনার (১৪,৪১৩ রান)। যদিও এই দুই বিদেশি তারকা ঠিক কত ম্যাচ খেলবেন, তা এখনো পরিষ্কার নয়।
ঢাকার আসল শক্তি তাদের অলরাউন্ডাররা। স্থানীয়দের মধ্যে আছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাসির হোসেন, তোফায়েল আহমেদ। বিদেশিদের মধ্যে দাসুন শানাকা ও ইমাদ ওয়াসিমের মতো তারকা অলরাউন্ডারও আছেন। প্রয়োজন হলে হাত ঘোরাতে পারবেন সাইফ হাসান ও শামীম হোসেনও।
বোলিংয়ে ঢাকার তুরুপের তাস ‘স্পিডস্টার’ তাসকিন আহমেদ। সাকিব আল হাসানের (১৪৯ উইকেট) পর বিপিএলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি। পেসারদের মধ্যে ১২৭ উইকেট নিয়ে তিনিই সবার ওপরে। গতবার রাজশাহীর হয়ে ২৫ উইকেট নেওয়া তাসকিন এবারও সেই আগুনে ফর্মে থাকলে সাকিবের সিংহাসন কেড়ে নেওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।
তাসকিনের সঙ্গে পেস আক্রমণে আছেন সাইফউদ্দিন ও অনূর্ধ্ব-১৯ থেকে উঠে আসা তরুণ মারুফ মৃধা। স্পিন বিভাগে অভিজ্ঞ তাইজুল ইসলামের সঙ্গী ইমাদ ওয়াসিম ও আফগান জুবায়েরউল্লাহ আকবারি।
দুর্বলতা: মিডল অর্ডার আর ফর্মহীনতা
মিডল অর্ডার নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা থাকতে পারে ঢাকার। মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান ও নাসির হোসেনরা ঘরোয়া ক্রিকেটে চেনা মুখ হলেও জাতীয় দল থেকে অনেক দিন ধরেই দূরে।
তোফায়েল বা মারুফদের মতো তরুণদের এখনো শীর্ষ পর্যায়ে বড় পরীক্ষা দেওয়া বাকি। ফিনিশার হিসেবে দলের বড় ভরসা শামীম হোসেন। কিন্তু তাঁর ব্যাটে এখন রানের আকাল। জাতীয় দলের হয়ে সর্বশেষ ৭ টি-টোয়েন্টির ৫টিতেই আউট হয়েছেন ০ বা ১ রানে।
গুরবাজ-হেলস চলে যাওয়ার পর টপ অর্ডারের হাল কে ধরবেন, সেটাও একটা বড় দুশ্চিন্তা। তখন টপ অর্ডার সামলানোর চাপ পড়বে সাইফ হাসানের ওপর। বোলিংয়ে তাসকিন-সাইফউদ্দিন বাদে প্রতিপক্ষের বুকে কাঁপন ধরাবেন, এমন কোনো ‘এক্স ফ্যাক্টর’ দেখা যাচ্ছে না। স্পিন আক্রমণে ইমাদ ও তাইজুল দুজনই বাঁহাতি। ফলে অফ স্পিনের জন্য নাসির ও সাইফের ওপরই ভরসা করতে হবে ঢাকাকে। গত আসরে সাত দলের মধ্যে ষষ্ঠ হয়েছিল ঢাকা।
নজর রাখতে পারেন যাঁদের ওপর
তোফায়েল আহমেদ: সিলেটের এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ ধারাবাহিক। ২০২৪ সালের এনসিএল টি-টোয়েন্টিতে ১৪২ রানের পাশাপাশি নিয়েছিলেন ৮ উইকেট। চোটের কারণে সবশেষ ইমার্জিং এশিয়া কাপে খেলতে না পারলেও বিপিএলে নিজের প্রথম সুযোগটা কাজে লাগাতে মুখিয়ে থাকবেন তিনি।
মারুফ মৃধা: অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে নজর কেড়েছিলেন এই তরুণ পেসার। তবে তাঁকে লড়তে হচ্ছে চোটের সঙ্গেও। গতবার চিটাগং কিংসের হয়ে এক ম্যাচ খেলে তেমন কিছু করতে না পারলেও এবার নিশ্চয়ই চাইবেন সেই আক্ষেপ ঘোচাতে।
ঢাকা ক্যাপিটালস স্কোয়াড
অধিনায়ক: মোহাম্মদ মিঠুন।
স্থানীয় ক্রিকেটার: তাসকিন আহমেদ, সাইফ হাসান, শামীম হোসেন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাইজুল ইসলাম, সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, তোফায়েল আহমেদ, ইরফান শুক্কুর, আবদুল্লাহ আল মামুন, মারুফ মৃধা, জায়েদ উল্লাহ, মইনুল ইসলাম।
বিদেশি ক্রিকেটার: অ্যালেক্স হেলস, উসমান খান, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ওডিন স্মিথ, ইমাদ ওয়াসিম, জিয়ার রহমান শারিফি, আরিফ হোসেন, চৌধুরী শের আলি, দাসুন শানাকা, জুবায়েরউল্লাহ আকবারি।