কোণঠাসা দুই সিংহের লড়াই

স্টোকস ও ম্যাথুসএএফপি, আইসিসি

গত বিশ্বকাপেও এ রকম একটা পরিস্থিতিতে পড়েছিল ইংল্যান্ড। সেমিফাইনালের দৌড়ে টিকে থাকতে গেলে কোনো ম্যাচেই হারের সুযোগ ছিল না। প্রথম পর্বে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে টানা দুটি ম্যাচে হেরে অমন কোণঠাসা অবস্থায় পড়ে গিয়েছিল এউইন মরগানের দল। এবার জস বাটলারের দলও প্রায় একই পরিস্থিতিতে। তবে এবারের পারফরম্যান্স বলছে—কাজটি কঠিন হতে যাচ্ছে আরও। গতবার প্রথম পাঁচ ম্যাচের চারটিতে জেতার পর টানা দুটিতে হেরেছিল ইংল্যান্ড। এবার প্রথম পাঁচ ম্যাচের মধ্যে হেরেছে চারটিতেই।

গতবার ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষ পর্যন্ত শিরোপা জেতে ইংল্যান্ড। কিন্তু এবার যে অবস্থা, তাতে শিরোপা পর্যন্ত ভাবার সাহস বোধ হয় করতে পারছে না তারা নিজেরাই। আপাতত তাদের লড়াইটা টিকে থাকার।

সে লড়াইটা আজ বেঙ্গালুরুতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে ইংল্যান্ডের। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইংল্যান্ডের মতো একই অবস্থা ১৯৯৬ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদেরও—৫ ম্যাচ, ১ জয়, টিকে থাকতে হারার বিলাসিতা দেখানোর সুযোগ নেই! দুই দলেরই দলীয় প্রতীক সিংহ, এ ম্যাচে দুই দলই নামছে কোণঠাসা হয়ে।

আরও পড়ুন

টুর্নামেন্টের মাঝপথে নিজেদের এমন অবস্থায় আবিষ্কার করে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ ইংল্যান্ড দলের সহ-অধিনায়ক মঈন আলী। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বললেন, ‘অবশ্যই আমরা হতাশ। তবে সেটি শুধু ফল নিয়ে নয়, টুর্নামেন্টে যেভাবে খেলেছি, সেটি নিয়েও। কিন্তু আপনাকে দ্রুতই এগোতে হবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে। সবকিছুই এখন বাঁচা-মরার, আমরা জানি আগেও এমন অবস্থায় পড়েছি।’ তবে এবারের ব্যাপারটি আলাদা, মঈন সেটি অস্বীকার করছেন না, ‘হয়তো ঠিক এত কঠিন ছিল না (এর আগে), কিন্তু আমরা জানি সব কটি ম্যাচই বাঁচা-মরার। আমাদের আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে হবে, ভালো পারফর্ম করতে হবে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে। টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত যা করেছি, তার চেয়ে ভালো করতে হবে।’

স্টোকসকে কী বলছেন বাটলার
ছবি: এএফপি

বেঙ্গালুরুর মাঠটি ছোট, উইকেট ব্যাটিং–সহায়ক। ইংল্যান্ডকে সেসব আশা জোগানোরই কথা। কিন্তু প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপে মোটেও স্বস্তিকর নয় ইংলিশদের জন্য। সর্বশেষ চার আসরেই শ্রীলঙ্কার কাছে হেরেছে তারা। চোট-বদলি হিসেবে দলে আসা অভিজ্ঞ লঙ্কান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস জানেন সেসব। প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ডকে কেন পছন্দ লঙ্কানদের, ম্যাথুস গতকাল ব্যাখ্যাও করলেন সেটি, ‘দেশে বা দেশের বাইরে বা নিরপেক্ষ ভেন্যুতে, যেখানেই ইংল্যান্ডের সঙ্গে খেলি না কেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়।

কারণ, আমরা জানি তারা কোন ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলে, ফলে তাদের বিপক্ষে খেললে আপনার ইতিবাচক থাকতে হবে। আপনি যদি একটু পিছপা হন, তাহলে আপনার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়বে তারা, এর সুবিধা নেবে। এ কারণে তাদের সঙ্গে ইতিবাচক হতে হবে।’

আরও পড়ুন

চোটজর্জর দলটির জন্য ইতিবাচক হওয়ার কাজটি যে সহজ হবে, তা নয়। বিশেষ করে বোলিংটা এ টুর্নামেন্টে ঠিক পক্ষে আসছে না তাদের। দক্ষিণ আফ্রিকা তাদের বিপক্ষে গড়েছে রেকর্ড স্কোর, পাকিস্তান গড়েছে রান তাড়ার রেকর্ড।

অনুশীলনে লাহিরু কুমারা ও অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস
ছবি: এএফপি

কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কী করতে হবে, ম্যাথুস সেটি জানেন, ‘যেমনটি বলছি, আগুনের জবাব আগুনেই দিতে হবে। আমরা জানি, তারা বড় মাপের দল। তাদের ভারসাম্যও ভালো। আর আমরা একটু গা ছাড়া হলে তারা আঘাত করবে।’

সেটি করার মতো অবস্থা কতটা আছে ইংল্যান্ডের, প্রশ্ন সেটিই। তবে মঈন বললেন, ‘আমরা টিকে আছি এখনো। আমরা জানি এটি কঠিন, প্রতিটি ম্যাচই জিততে হবে। তবে আমরা এটিও জানি, আমরা পারব।’

নিশ্চয়ই শ্রীলঙ্কাও ভাবছে তেমন কিছুই।

আরও পড়ুন