ধোনি–ইরফান ‘হুঁকা’র দ্বন্দ্ব: আসল রহস্য কী
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হঠাৎই ট্রেন্ডিংয়ে ‘হুঁকা’। বিশেষ করে ভারতীয় সমর্থকদের মধ্যে। ‘ধোনি’ ও ‘হুঁকা’—এই দুটি কিওয়ার্ড ধরে সার্চ করলেই শত শত ভিডিও, ছবি ও মিম সামনে চলে আসছে। কোথাও ভারতের সাবেক অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি হুঁকা টানছেন, কোথাও অন্যরা টানছেন, কিন্তু ধোনির নাম ক্যাপশনে। এ ছাড়া নানা রসাত্মক কথায় মিমস তো আছেই।
ধোনিকে কখনো প্রকাশ্যে হুঁকা টানতে না দেখা গেলেও হঠাৎ এমন কী হলো যে ‘ধোনি’ ও ‘হুঁকা’ ট্রেন্ডিং হয়ে গেল? খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে সামনে এল ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার ইরফান পাঠানের নাম। মূলত, পাঁচ বছর আগে দেওয়া তাঁর একটি সাক্ষাৎকারের অংশ সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে এই অলরাউন্ডারের একটি মন্তব্যের কারণেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধোনি আর হুঁকা—দুটোই ট্রেন্ডিংয়ে।
পাঠান ভারতের হয়ে ২৯ টেস্ট, ২৪ টি-টোয়েন্টি ও ১২০টি ওয়ানডে খেলেছেন। তাঁকে ভারতের জার্সিতে সর্বশেষ দেখা গেছে ২০১২ সালে, যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে অবসর নিয়েছেন ২০২০-এ। ইরফানের ক্যারিয়ার যখন শুরু হয়, তখন ভারত একজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার খুঁজছিল। অনেকেই তাঁকে ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার কপিল দেবের উত্তরসূরি ভাবতেন।
২০০৩-০৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ইরফানের আন্তর্জাতিক অভিষেক। ওই সফরে তিনি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট ও স্টিভ ওয়াহর মতো বড় খেলোয়াড়দের আউট করেন। এরপর পাকিস্তানেও ছিলেন ছন্দে, ৩ টেস্টে নেন ১২ উইকেট। ২০০৬ সালে ইরফান পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে হ্যাটট্রিক করেন, যা তখন পর্যন্ত ভারতীয়দের মধ্যে মাত্র দ্বিতীয়।
২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইরফান ভারতের হয়ে খেলেন। ফাইনালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ১৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরাও হন ইরফান। তবে ২০০৭ সালে ধোনি ভারতের অধিনায়ক হওয়ার পর থেকেই নাকি দলে তাঁর গুরুত্ব কমতে শুরু করে। উদাহরণ হিসেবে পাঠান ২০০৮ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরের একটি ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেন।
সে সময় গণমাধ্যমে খবর বের হয় যে ধোনি বলেছেন, পাঠান ভালো বোলিং করছেন না। এ বিষয়ে পরিষ্কার হতে পাঠান সরাসরি ধোনির কাছে গিয়েছিলেন। ২০২০ সালের সাক্ষাৎকারটিতে পাঠান বলেন, ‘আমি সিরিজের সময়ই ধোনিকে এ মন্তব্য নিয়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। কারণ, মাঝেমধ্যে মিডিয়ায় মন্তব্য বিকৃত করা হয়, তাই আমিও নিশ্চিত হতে চেয়েছিলাম। তখন ধোনি আমাকে বলেছে, “সব ঠিক আছে, ইরফান, কোনো সমস্যা নেই।” কিন্তু একই ঘটনা বারবার ঘটছিল, তাই আমি আর জিজ্ঞেস করা ছেড়ে দিয়েছিলাম; কারণ, পাঠানরা তাদের আত্মসম্মানকে খুব গুরুত্ব দেয়।’
এরপর পাঠান হুঁকার প্রসঙ্গ আনেন। সরাসরি ধোনির নাম না বললেও তাঁর ইঙ্গিতে যে ধোনিই ছিলেন, সেটা স্পষ্টই। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমার এমন অভ্যাস নেই যে আমি কারও ঘরে গিয়ে হুঁকা সেট করব বা এ ধরনের কোনো কথা বলব। সবাই জানে। মাঝেমধ্যে এসব বিষয়ে কথা না বলাই ভালো। একজন ক্রিকেটারের কাজ হলো মাঠে ভালো পারফর্ম করা, আর আমি সব সময় সেদিকেই মনোযোগ দিতাম।’
ব্যস! এর পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ধোনি ও হুঁকা।