এবার ওয়ানডেতেও ভারত জয় বাংলাদেশের মেয়েদের

ঐতিহাসিক জয়ের পর বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলবিসিবি

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়াম। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘হোম’।

সেই হোমেই আজ বড় কীর্তি গড়ল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। মেয়েদের ওয়ানডেতে আজই যে প্রথমবার শক্তিশালী ভারতকে হারাল বাংলাদেশ। বৃষ্টি-বিঘ্নিত ম্যাচটিতে ১৫২ রানে অলআউট হয়েও ডিএলএস নিয়মে বাংলাদেশের মেয়েরা জিতেছেন ৪০ রানে। ডিএলএস নিয়মে ৪৪ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ১৫৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করা ভারত অলআউট ১১৩ রানে।

ওয়ানডেতে ষষ্ঠ দেখায় ভারতের বিপক্ষে প্রথম জয় পেল বাংলাদেশ নারী দল। তবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের মেয়েরা এর আগে ভারতকে হারিয়েছেন তিনবার। যার সর্বশেষটি এবারই টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে। বাংলাদেশ পুরুষ দল ভারতকে প্রথম হারিয়েছিল ১২তম দেখায়।

মেয়েদের ঐতিহাসিক জয়ে সবচেয়ে বড় ভূমিকা মারুফা আক্তারের। ৭ ওভারে ২৯ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তরুণ এই পেসার। ভারতের দুই ওপেনারকেই ফিরিয়ে জয়ের ভিত্তিটা গড়ে দিয়েছিলেন মাত্রই চতুর্থ ওয়ানডে খেলা মারুফা। ক্যারিয়ারের প্রথম তিন ওয়ানডেতে উইকেটশূন্য মারুফা তৃতীয় ওভারেই পেয়ে যান স্মৃতি মান্ধানার উইকেট। স্ল্যাশ করতে চেয়েছিলেন ভারতের তারকা ব্যাটার মান্ধানা। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বলটি শুধু বাংলাদেশের উইকেটকিপার নিগার সুলতানার দারুণ এক ক্যাচের শিকারই হতে পেরেছেন।

বাংলাদেশের মেয়েদের জয়ের সবচেয়ে বড় ভূমিকা পেসার মারুফা আক্তারের
বিসিবি

১৩ রানে প্রথম উইকেট হারানো ভারতীয়রা দ্বিতীয় উইকেট হারায় নবম ওভারে ৩০ রানে। মারুফার বলে ফ্লিক করতে গিয়ে মিড অনে মুরশিদা খাতুনের ক্যাচ হয়েছেন প্রিয়া পুর্নিয়া। এরপর দুই স্পিনার নাহিদা আক্তার ও রাবেয়া খাতুন হারমানপ্রীত কৌর,  যষ্টিকা ভাটিয়া ও জেমিমা রদ্রিগেজকে ফিরিয়ে ভারতের স্কোরটাকে ৬১/৫ বানিয়ে দেন।

সেখান থেকেই দীপ্তি শর্মাকে নিয়ে ৩০ রানের জুটি গড়েন আমনজোত কৌর। এরপর আবার দৃশ্যপটে আগমন মারুফার। ২৯তম ওভারের পঞ্চম বলে আমনজোতকে অধিনায়ক নিগারের দ্বিতীয় ক্যাচ বানিয়ে জুটি ভাঙেন ১৮ বছর বয়সী পেসার। ঠিক পরের বলেই স্নেহ রানাকে দারুণ এক ইনসুইঙ্গার ইয়র্কারে বোল্ড করে দেন মারুফা।

পরের ওভারের প্রথম বলেও আরেকটি উইকেট হারায় ভারতীয়রা। এবার লেগ স্পিনার রাবেয়া ফিরিয়ে দেন দীপ্তিকে। ৩ বলের মধ্যেই ৫ উইকেটে ৯১ থেকে ৮ উইকেটে ৯১ ভারত!

আরও পড়ুন
বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান অধিনায়ক নিগার সুলতানার
বিসিবি

এরপর আর ২২ রানই যোগ করতে পারে সফরকারীরা। ৩৬তম ওভারের পঞ্চম বলে শেষ ব্যাটার বারেদি আনুশার রানআউটেই শেষ হয় দলটি ইনিংস। সুলতানা খাতুনের সরাসরি থ্রো ভেঙে দেয় উইকেট। টেলিভিশনে রিপ্লে দেখেই থার্ড আম্পায়ার আউট দিতেই ইতিহাস। ওয়ানডেতে প্রথম ভারত জয়।

এর আগে বারবার বৃষ্টিতে বাধা পাওয়া ইনিংসে ৪৩ ওভারে ১৫২ রানে অলআউট হয়। অভিষিক্ত ব্যাটার স্বর্ণা আক্তার অসুস্থ হওয়ায় অবশ্য একজন কম নিয়েই খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ১৪ রানে ২ উইকেট খোয়ানো বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেছেন অধিনায়ক নিগার সুলতানা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ রান ফারজানা হকের। বাকিদের ব্যর্থই বলতে হয়।

কিন্তু দিন শেষে সেই ব্যর্থতা কে মনে রাখতে গেছে!

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ৪৩ ওভারে ১৫২ (মুরশিদা ১৩, শারমিন ০, ফারজানা ২৭, নিগার ৩৯, রিতু ৮, রাবেয়া ১০, নাহিদা ২, ফাহিমা ১২*, সুলতানা ৬, স্বর্ণা অনুপস্থিত; আমনজোত ৪/৩১, দেবিকা ২/৩৬, দীপ্তি ১/২৬)। ভারত: ৩৫.৫ ওভারে ১১৩ (দীপ্তি ২০, যষ্টিকা ১৫, আমনজোত ১৫; মারুফা ৪/২৯, নাহিদা ১/১৬, সুলতানা ১/২০, রিতু ০/৪, রাবেয়া ৩/৩০, ফাহিমা ০/১৪)। ফল: বাংলাদেশ ৪০ রানে জয়ী (ডিএলএস)। প্লেয়ার অব দ্য ম্যাচ: মারুফা আক্তার।
আরও পড়ুন