আইপিএলের কারণেই কি ভারতের বোলিংয়ে এই দশা
এ যেন অন্য এক যশপ্রীত বুমরা। ওভারের পর ওভার বোলিং করছেন, কিন্তু সবই যেন ধারহীন। ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে খেলা ভারতের অন্য তিন পেসারও নিষ্প্রভ। সে কারণেই প্রথম ইনিংসে ইংল্যান্ড রান করেছে ৬৬৯।
বেন স্টোকসের দলের প্রথম ইনিংসের লিড ছিল ৩১১ রানের। চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত ২ উইকেটে ১৭৪ রান তোলার পরও এখনো পিছিয়ে ১৩৭ রানে।
এমন বোলিং পারফরম্যান্সের পর ভারতের পেস বোলিং লাইনআপ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। দুই মাসব্যাপী আইপিএল খেলার পর চতুর্থ টেস্টে এসে ভারতীয় পেসাররা ক্লান্ত হয়ে গেছেন কি না, সেই আলোচনা হচ্ছে জোরেশোরে।
ম্যানচেস্টার টেস্টে ভারত তাদের পূর্ণশক্তির পেস আক্রমণ পায়নি। আকাশ দীপ ও নীতীশ কুমার রেড্ডি চোটের কারণে বাইরে। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন ভারতীয় পেসার বিসিসিআইয়ের পুনর্বাসন কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন। বুমরা, সিরাজরাও অনেক ক্লান্ত। বুমরা প্রথম ইনিংসে ৩৩ ওভার বোলিং করে রান দিয়েছেন ১১৫, উইকেট পেয়েছেন মাত্র দুটি। টেস্ট ক্যারিয়ারে বুমরা এবারই প্রথম কোনো ইনিংসে ১০০ বা এর চেয়ে বেশি রান দিয়েছেন।
সিরাজ তো ৩০ ওভারে রান দিয়েছেন ১৪০, তিনি উইকেট পেয়েছেন একটি।
আমি মনে করি, বুমরা সামনে হয়তো টেস্ট খেলবে না, এমনকি অবসরও নিতে পারে।মোহাম্মদ কাইফ
পেসারদের বাজে পারফরম্যান্সের জন্য আইপিএল দায়ী কি না—এমন একটি প্রশ্ন তৃতীয় দিন শেষে ভারতীয় বোলিং কোচ মরনে মরকেলের সামনে উঠেছিল। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘এটা কঠিন একটা পরীক্ষা। আমরা সাধারণত ২-৩ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলি। এবার অনেক দিন পর ৫ ম্যাচের একটি সিরিজ খেলতে হয়েছে। এটা কোনো অজুহাত নয়, কিন্তু আইপিএলের পরপর এত বড় সিরিজ খেলা একটা কারণ হতে পারে।’
মরকেল আরও বলেছেন, ‘বিশ্রাম ও বোলিংয়ের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রাখতে হবে। এ জন্য ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫-৬ জনের একটি পেসার ইউনিট গড়ে তোলা দরকার, যাদের ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো যাবে। এখন আমাদের দলে অভিজ্ঞ পেসার বেশি নেই। সিরাজ আছে, বুমরাও কয়েকটা টেস্ট খেলেছে, আবেশ খান কিছু খেলেছে কিন্তু সেও চোটে। নতুন যারা আসছে, তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজেকে তৈরি করছে। কাজটা সহজ নয়, কিন্তু এই সময়টা পার করতে হবে, যাতে আগামী ৪-৫ টেস্টে তারা ফিট ও শক্তিশালী হতে পারে।’
অন্যদিকে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ কাইফ বুমরাকে নিয়ে বোমা ফাটিয়েছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেল কাইফ বলেছেন, ‘আমি মনে করি, বুমরা সামনে হয়তো টেস্ট খেলবে না, এমনকি অবসরও নিতে পারে। তার শরীর সাড়া দিচ্ছে না, গতি কমে গেছে, এই টেস্টে গতিতে বোলিং করতে পারেনি। বুমরা স্বাধীনচেতা একজন খেলোয়াড়। যদি ও বুঝতে পারে শতভাগ দিতে পারছে না, দেশের জন্য জয় আনতে পারছে না, তাহলে নিজেই সরিয়ে নেবে, আমার এমনটাই মনে হয়।’