‘ভুলে কেনা’ শশাঙ্কই করলেন পাঞ্জাবের ‘দায়মোচন’

জয়ের পর শশাংক সিং, ৪ এপ্রিল রাতে আহমেদাবাদেএএফপি

শশাঙ্ক সিংকে নিশ্চয়ই এখন আর ‘ফিরিয়ে দিতে’ চাইবে না পাঞ্জাব কিংস।

গতকাল রাতে আহমেদাবাদে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে ২০০ রানের লক্ষ্যে ২৯ বলে ৬১ রানের ইনিংসে পাঞ্জাবকে স্মরণীয় এক জয় এনে দিয়েছেন ৩২ বছর বয়সী এ ব্যাটিং অলরাউন্ডার। হয়েছেন ম্যাচসেরাও। অথচ এই শশাঙ্ককে নিলামে কিনেও ফিরিয়ে দিতে চেয়েছিল পাঞ্জাব!

গত ডিসেম্বরে আইপিএলের নিলামে শশাঙ্ককে তাঁর ভিত্তিমূল্য ২০ লাখ রুপিতে কেনে পাঞ্জাব। তবে এর ঠিক পরপরই পাঞ্জাবের পক্ষ থেকে নিলাম পরিচালনাকারীকে ইঙ্গিত করা হয়, তারা তাঁকে নিতে চায় না। দলের মালিক প্রীতি জিনতাও একই ইঙ্গিত করেন। নিজেরা একজন খেলোয়াড়কে কিনে নেওয়ার পর আবার ফিরিয়ে দিতে চাওয়ার সেই ঘটনায় বেশ বিব্রতকর একটা পরিস্থিতিই তৈরি হয় আইপিএলের নিলামে। কয়েক মিনিট আগে শশাঙ্ক সিং নামে বাংলার আরেক ক্রিকেটারকে নিলামে তোলা হয়েছিল, এরপর পাঞ্জাবের অমন কাণ্ডে ধোঁয়াশা তৈরি হয় আরও।

আরও পড়ুন

অবশ্য পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাঞ্জাব ‘পরিষ্কার’ করে, তারা এই শশাঙ্ককেই কিনতে চেয়েছিল। দুজন একই নামের খেলোয়াড় তালিকায় থাকাতেই ওই গোলমাল হওয়ার কথাও জানায় দলটি।

শশাঙ্কের গত রাতের পারফরম্যান্সের পর পাঞ্জাবের ওই ‘ভুল’ আবার আসছে আলোচনায়। ‘ভুল’ করে কপাল খুলে গেছে দলটির, বলা হচ্ছে এমনও।

দারুণ ইনিংসে পাঞ্জাবকে জিতিয়েছেন শশাংক
বিসিসিআই

মুম্বাইভিত্তিক এই ক্রিকেটারের ওপর অবশ্য মৌসুমের শুরু থেকেই আস্থা রাখছে পাঞ্জাব। মুম্বাইয়ের স্থানীয় একটি টুর্নামেন্টে শশাঙ্কের সঙ্গে খেলেছিলেন পাঞ্জাব অধিনায়ক শিখর ধাওয়ান। সেখান থেকেই তাঁর ওপর নজর ধাওয়ানের।

প্রথম দুই ম্যাচে সাতে নেমে অপরাজিত ২১ ও ৯ রানের ইনিংস খেলার পর শশাঙ্ক তাঁর সেরাটা বের করে আনলেন গতকাল ছয়ে নেমে গুরুত্বপূর্ণ এক সময়ে। ২০০ রানের লক্ষ্যে পাঞ্জাবকে বেশ লম্বা সময় মনে হচ্ছিল দিশাহারা। শশাঙ্ক যখন নামেন, তখনো পাঞ্জাবের দরকার ছিল ৬৮ বলে ১৩০ রান। শশাঙ্কের সঙ্গে জিতেশ শর্মা (৮ বলে ১৬) ও আশুতোষ শর্মার (১৭ বলে ৩১) দুটি ‘ক্যামিও’তে ১ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে পাঞ্জাব।

আরও পড়ুন

ম্যাচসেরা শশাঙ্ককে নিয়ে ধাওয়ান বলেছেন, ‘সে কতটা ভালো, সেটি দেখিয়েছে। দারুণ ইনিংস। এত সুন্দর টাইমিং করেছে, দেখে মনে হয়েছে অনায়াসেই করছে। স্নায়ু ধরে রেখে ম্যাচ শেষ করেছে। ৭ নম্বরে শুরু করেছিল, এখন তার ইতিবাচক মানসিকতা ফুটে উঠছে।’

উচ্ছ্বসিত শশাঙ্ক নিজে বলেছেন, ‘এখনো বুঝে ওঠার চেষ্টা করছি ব্যাপারটা। এসব কিছু কল্পনাই করেছি শুধু, কিন্তু যখন বাস্তবে রূপ নেয়! নিজের প্রচেষ্টায় আমি গর্বিত, খুশি। কোচ বলেছিলেন বল অনুযায়ী খেলতে। উইকেট দারুণ ছিল, বাউন্স সমান ছিল। দুই দলই ২০০ করেছে, ফলে উইকেটটা দারুণ ছিল।’

এর আগে ২০২২ সালে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে এক মৌসুম খেলেছিলেন, এরপর দলটি ছেড়ে দেয় তাঁকে। গত মৌসুমে কোনো দল আগ্রহই দেখায়নি। তাঁর বেড়ে ওঠা মুম্বাইয়ে, তবে সেখানে সুযোগ না পেয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন পুডুচেরিতে। এরপর থিতু হন আরেক দল ছত্তিশগড়ে, এখন তিন সংস্করণে তাদের হয়ে নিয়মিত শশাঙ্ক।

আইপিএলে এর আগে সেভাবে সুযোগ না পেলেও পাঞ্জাব এবার ভরসা রাখছে তাঁর ওপর, শশাঙ্ক নিজেই জানিয়েছেন সেটি, ‘এখানে মালিক ও কোচিং স্টাফের সদস্যরা আমাকে সমর্থন দিচ্ছে। বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলাম আমি।’