যে স্বপ্নে ‘নতুন করে হাঁটা শিখেছেন’ শামি

বাংলাদেশের বিপক্ষে একাই ৫ উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ শামিবিসিসিআই এক্স হ্যান্ডেল

তাঁর প্রথম ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিলেন বাংলাদেশের ওপেনার সৌম্য সরকার। আরও একটি আইসিসি টুর্নামেন্টে উইকেট পেলেন মোহাম্মদ শামি। পরে জাকের আলীকে ক্যাচ বানিয়ে গড়লেন ওয়ানডেতে দ্রুততম ২০০ উইকেটের কীর্তিও। মাইলফলকের এসব উইকেটের উদ্‌যাপনে হয়তো দীর্ঘ এক পুনর্বাসনের স্মৃতিও মনে পড়েছে শামির।

২০২৩ সালের শেষ দিকে ঘরের মাঠে বিশ্বকাপে ছিলেন সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। শামি এরপর যে চোটে পড়লেন, সেরে উঠতে উঠতে কেটে গেছে ১৪ মাস। দীর্ঘ এই যাত্রায় যন্ত্রণা, অপেক্ষা যেমন ছিল, ছিল শঙ্কাও। তা কেমন শঙ্কা?

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে আইসিসি টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শামি জানিয়েছেন, তাঁর নাকি মনে হচ্ছিল, আদৌ কখনো হাঁটতে পারবেন কি না! ‘মনে হতো বাচ্চাদের মতো নতুন হাঁটতে শিখছি। সব সময় ভাবতাম, কখন পা মাটিতে রাখতে পারব। যে মাঠে নিয়মিত দৌড়ে বেড়াত, তাকে কিনা হাঁটতে হচ্ছে ক্রাচে ভর করে!’

আরও পড়ুন

গোড়ালির চোটে পড়ার পর ২০২৪ সালের মার্চে অস্ত্রোপচার হয় শামির। এরপর হাঁটুতেও সমস্যা দেখা দেয়, নতুন করে আটকে যায় ক্রিকেটে ফেরা। এরপর বাংলার হয়ে ঘরোয়া লিগে পারফর্ম করে ফিরে আসেন জাতীয় দলেও। ইংল্যান্ড সিরিজে ভালো করার পর এসেছেন চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে।

সতীর্থদের সঙ্গে শামির উইকেট উদ্‌যাপন
রয়টার্স

অথচ ইনজুরির শুরুর দিনগুলোতে শামি চিকিৎসকের কাছে যখন জানতে চাইতেন কবে ক্রিকেটে ফিরতে পারবেন, তখন উত্তর ছিল এমন, ‘আমার কাছে অগ্রাধিকার হচ্ছে তোমাকে হাঁটানো, এরপর ব্যায়াম, তারপর দৌড়। সবকিছুর পর খেলার কথা ভাবতে পারো, যেটা এখনো অনেক দূরে।’

আরও পড়ুন

চিকিৎসকের কথাগুলো আওড়ে শামি বলতে থাকেন, ‘মাথায় তখন অনেক কিছুই খেলে যেত। আমি কি ক্রিকেটে আবার ফিরতে পারব? খোঁড়ানো ছাড়া কি হাঁটতে পারব? প্রথম দুই মাস কেবল ভাবতাম, আর খেলায় ফিরতে পারব কি না। ১৪ মাসের এমন একটা ইনজুরি যে কাউকে শেষ করে দিতে পারে।’

লম্বা ওই পথ পাড়ি দিয়ে এসেছেন শামি। ইনজুরিতে যশপ্রীত বুমরা ছিটকে যাওয়ার পর এখন ভারতের পেস বোলিংয়ে নেতৃত্বের ভারও তাঁর কাঁধে। এই স্বপ্নই নাকি সব যন্ত্রণা সহ্য করতে সাহায্য করেছিল শামিকে, ‘দুই মাস পর যখন তারা আমাকে মাটিতে পা রাখতে বলল, আপনি হয়তো বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু আমার এত ভয় করছিল! ভারতের জার্সিটা গায়ে তোলার তীব্র ইচ্ছা আমাকে এগিয়ে নিয়েছে। কোনো তিক্ততা বা অভিযোগ ছাড়াই সব ব্যথা আমি সহ্য করেছি। এটা কঠিন, ব্যথাও অনেক ছিল কিন্তু ধৈর্যের সঙ্গে আমি তা পার করেছি।’