চতুর্থ ইনিংসে ভারতকে ১৪৫ রানের লক্ষ্য দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। এই রান নিয়েই বাংলাদেশ জিতে যাবে, সেই আশা করা একটু বাড়াবাড়িই মনে হচ্ছিল। কিন্তু দিনের শেষ এক ঘণ্টার রোমাঞ্চকর ক্রিকেটে ম্যাচের আবহ পাল্টে গেছে। সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন ও আগ্রাসনে খেই হারিয়েছে ভারতীয় টপ অর্ডার।
শুবমান গিল, লোকেশ রাহুল, চেতেশ্বর পূজারার পর বিরাট কোহলিকেও হারিয়েছে ভারত। এক ঘণ্টার পাগলাটে ক্রিকেটে ভারত ৪৫ রান তুলতেই হারিয়েছে ৪ স্বীকৃত ব্যাটসম্যানের উইকেট। এর ৩টিই নিয়েছেন মিরাজ। ম্যাচ জিতে সিরিজ জয় নিশ্চিত করতে ভারতের দরকার আরও ১০০ রান, হাতে আছে ৬ উইকেট। বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন দেখছে ঐতিহাসিক জয়ের।
সকাল সকাল যদি এক-দুটি উইকেট নিতে পারি, অবশ্যই জেতা সম্ভব। যতই বড় বড় ব্যাটসম্যান থাকুক, হাতে উইকেট না থাকলে অনেক কিছু চাইলেই করতে পারবে না।
৭৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো পুঁজি এনে দেওয়া লিটন দাস দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে জয়ের আশাই করেছেন, ‘অবশ্যই জেতা সম্ভব। সকাল সকাল যদি এক-দুটি উইকেট নিতে পারি, অবশ্যই জেতা সম্ভব। যতই বড় বড় ব্যাটসম্যান থাকুক, হাতে উইকেট না থাকলে অনেক কিছু চাইলেই করতে পারবে না। (আগামীকাল) এসেই যদি ২ উইকেট নিয়ে নিতে পারি, এরপর ঋষভ আছে, আইয়ার আছে। অবশ্যই ওরা ভালো খেলোয়াড়, তবে চাপে থাকবে।’
১০০ রান তাড়া করার জন্য যথেষ্ট সময় হাতে আছে ভারতের। কিন্তু চাপের মুখে ভারত কেমন করে, সে পরীক্ষা নেওয়ার মতো অবস্থানে আছে বাংলাদেশ দল। লিটন যেমন বলছিলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরাই এগিয়ে। তারা চাপে আছে। আমরা ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামলে তারা ভেঙে পড়বে। এটাই আমাদের লক্ষ্য। আমাদের জিততে হবে। পরিকল্পনা এটুকুই। তাদের বরং ভালো পরিকল্পনা থাকতে পারে।’
শুধু কি চাপ? মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের চতুর্থ দিনের উইকেটের প্রসঙ্গটিও উঠে এল লিটনের কথায়, ‘আমরা জানি মিরপুরে চতুর্থ ইনিংস সব সময়ই কঠিন। সব ব্যাটসম্যানদের জন্যই। আমরা ২০০-২২০ লক্ষ্য দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যে স্কোর দাঁড় করিয়েছি, এখনো তাদের আরও ১০০ রান দরকার। অনেক কঠিন কিন্তু। এখন যে অবস্থা, এই লক্ষ্য জয়ের জন্য যথেষ্ট।’
লিটনকে আত্মবিশ্বাসী করেছে মূলত বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ, ‘আমরা জানি আমাদের বোলারদের কী কোয়ালিটি। মিরপুরের উইকেটে ব্যাটিং সব সময় কঠিন।’
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ এর আগে ১২টি টেস্ট খেলে ১০টিতেই হেরেছে। বাকি ২টি টেস্ট বৃষ্টির কল্যাণে ড্র হয়। এখন বাংলাদেশ দাঁড়িয়ে প্রথমবারের মতো ভারতের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের। মুমিনুল-লিটনরা ২০২২ সাল শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্ট জয় দিয়ে। ভারতের মতো দলের বিপক্ষে জয় দিয়ে বছর শেষ করার সুযোগ এখন বাংলাদেশের। লিটন একটু রোমাঞ্চিতই তা নিয়ে, ‘এমন কিছু হলে সেটা বিরাট অর্জন হবে। এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছু হয় না।’