মাথা ঠান্ডা রাখাই এখন মূলমন্ত্র মোস্তাফিজদের

মোস্তাফিজের শেষ ওভারে জয়ের আনন্দ লক্ষ্ণৌর খেলোয়াড়দেরআইপিএল

‘টেকিং ইট ইন দ্য স্ট্রাইড।’

ইংরেজি এই বাক্যের কাছাকাছি বাংলা অর্থ—ঠান্ডা মাথায় কোনো কিছুর মোকাবিলা করা। চেন্নাই সুপার কিংসের ‘এক্স’ অ্যাকাউন্ট থেকে গতকাল রাত ১২টা ৫ মিনিটে এই পোস্ট করা হয়। একটি ছবিও জুড়ে দেওয়া হয়েছে পোস্টে। ছবিটি চেন্নাইয়ের খেলোয়াড়দের। কারও মুখে হাসি নেই। সবগুলো মুখই গম্ভীর। মোস্তাফিজুর রহমান সেসব মুখের একদম মাঝে দাঁড়িয়ে। মনোযোগ দিয়ে মহেন্দ্র সিং ধোনির কথা শুনছেন।

আরও পড়ুন

ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই। ম্যাচের ফলটা যেহেতু জানা, তাই চাইলে ছবিটির রূপক একটি অর্থও দাঁড় করানো যায়।

আইপিএলে গতকাল রাতে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের কাছে ৬ উইকেটে হেরেছে চেন্নাই।জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১৭ রান দরকার ছিল লক্ষ্ণৌর। ‘ডেথ ওভার–বিশেষজ্ঞ’ বলেই শেষ ওভারে মোস্তাফিজের হাতে বল তুলে দেন চেন্নাই অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়। কিন্তু মোস্তাফিজ চার বলের মধ্যে ম্যাচ শেষ করেছেন! কথাটা উল্টোভাবে বলা—মানে, মোস্তাফিজের চারটি (তিনটি বৈধ) ডেলিভারির মধ্যেই ম্যাচটা জিতে নেয় লক্ষ্ণৌ।

এরপর চেন্নাইয়ের ওই পোস্ট দেখে একটি ব্যাপার বুঝে নেওয়া যায়, হারকে ঠান্ডা মাথায় মেনে নিয়েছে চেন্নাই। শেষ ওভারটা বাজে করায় মোস্তাফিজ চেন্নাইয়ের পরের ম্যাচগুলোয় সুযোগ পাবেন কি না—ফেসবুকে বাংলাদেশি দর্শকদের এ দুশ্চিন্তার অন্তত একটি টোটকা হতে পারে চেন্নাইয়ের ওই পোস্ট।

তবে চেন্নাইয়ের প্রধান কোচ স্টিভেন ফ্লেমিং দলের সঠিক সমন্বয় এখনো বের করতে না পারায় চিন্তিত। আর সেই দুশ্চিন্তার কথা বলতে গিয়েই টেনেছেন মোস্তাফিজের প্রসঙ্গ। কালকের ম্যাচেই যেমন, রাচিন রবীন্দ্রকে বসিয়ে ড্যারিল মিচেলকে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু মিচেল ১১ রানে আউট হওয়ায় এই সমন্বয়ও চেন্নাইয়ের কাজে লাগেনি।

আরও পড়ুন

টুর্নামেন্টের এই পথ পর্যন্ত চেন্নাইয়ের স্কোয়াডের ভারসাম্যও মাঝেমধ্যে ঠিক থাকেনি। মাতিশা পাতিরানা চোটে পড়েছেন, মোস্তাফিজুর ভিসার কাজে ফিরেছিলেন দেশে। তখন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচটি খেলতে পারেননি। আগামী ১ মে পর্যন্ত তাঁকে পাবে চেন্নাই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে এরপর দেশে ফিরবেন মোস্তাফিজ। অর্থাৎ সমন্বয়ের মাধ্যমে সঠিক দলটি বের করতে সব খেলোয়াড়কে সব সময় পাচ্ছে না কিংবা পাবে না চেন্নাই।

ম্যাচের পর ফ্লেমিংয়ের কথায় সেটা বোঝা গেল, ‘আমরা কিছু জায়গা নিয়ে অস্বস্তিতে আছি। স্বল্পমেয়াদি সমাধান নয়, আমরা দলের সঠিক সমন্বয়টা বের করার চেষ্টা করছি...সামনে আমাদের আরেকটি পরিবর্তন আছে মোস্তাফিজের কারণে। আমাদের চোটাঘাতও ছিল। কিন্তু প্রধান কাজ হলো, ফর্মে থাকা খেলোয়াড়দের কাজে লাগানো। সে জন্য একটু সময়ও লাগে।’

মোস্তাফিজকে আর মাত্র দুই ম্যাচে পাবে চেন্নাই
এএফপি

মোস্তাফিজকে আর মাত্র দুটি ম্যাচে পাবে চেন্নাই। ২৮ এপ্রিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও ১ মে পাঞ্জাব কিংস—এ দুটি ম্যাচে চেন্নাই তাঁকে খেলাবে কি না, সেটাও বড় প্রশ্ন। চলতি আইপিএলে মোস্তাফিজ উইকেট শিকারে চতুর্থ (শীর্ষে থাকা বুমরার চেয়ে ১ উইকেট ব্যবধানে পিছিয়ে) হলেও গতকাল রাতে শেষ ওভারে বাজে বোলিং তাঁর নামের পাশে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন এঁকেছে।

শেষ ওভারে ১৯ রান দেন মোস্তাফিজ। রান উঠতেই পারে, তবে মোস্তাফিজের লাইন-লেংথ দৃষ্টিকটু লেগেছে অনেকের। ৩.৩ ওভারে ৫১ রানে ১ উইকেট নেওয়া মোস্তাফিজ কালকের ম্যাচে ওভারপ্রতি রান দেওয়ায় চেন্নাইয়ের সব বোলারকেই ছাপিয়ে (১৪.৫৭) গেছেন। সর্বোচ্চ ৮টি ডট দিলেও সর্বোচ্চসংখ্যক ছক্কাও হজম করেছেন চেন্নাইয়ের বোলারদের মধ্যে। এসবই চোখে বিঁধছে মোস্তাফিজের শেষ ওভারটির জন্য।

আরও পড়ুন