তাসকিনকেও রাখব সেরা দলে

ওপেনিং পজিশনে দুই ইংলিশ ওপেনার জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের নামই প্রথমে আসবে। এবারের বিশ্বকাপজুড়ে নতুন বল ধারাবাহিকভাবে মুভ করেছে, ব্যাটিং সহজ ছিল না। তবু দুজন ছিল আক্রমণাত্মক। ইংল্যান্ডের শিরোপা জয়ে পেছনে বড় কারণ দুজনের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। বাটলার আমার দলের অধিনায়কত্বও করবে, উইকেটকিপারের দায়িত্বটাও বাটলারের। যা দলের ভারসাম্য গড়ে দেবে।

৩ নম্বরে কে থাকবে, সেটা নিয়েও খুব বেশি আলোচনার প্রয়োজন নেই। বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (২৯৬) বিরাট কোহলি নিঃসন্দেহে সবার একাদশেই থাকবে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংসটি নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। ব্যাটসম্যানশিপের চূড়ান্ত উদাহরণ ছিল সেটি। ‘ইনস্যুরেন্স’ ব্যাটসম্যান হিসেবে তাই কোহলিই আমার পছন্দ।

আরেক ভারতীয় সূর্যকুমার যাদবের বিশ্বকাপটাও ভালো কেটেছে। মাঝের ওভারে ৬ ইনিংস খেলেও রান করেছে ২৩৯, নজর কাড়ার জন্য এটুকুই ছিল যথেষ্ট। কিন্তু সূর্য সে রানটা করছে ১৮৯ স্ট্রাইক রেট, যা এককথায় অবিশ্বাস্য। ৪ নম্বর জায়গাটা তাই সূর্য নিজের করে নিয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপসকে ৫ নম্বরে রেখেছি। সূর্যের মতো তার স্ট্রাইক রেটও দুর্দান্ত (১৫৮)। একটি সেঞ্চুরিও আছে তার। দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের পাশাপাশি অফ স্পিন বোলিংও করে। নিউজিল্যান্ডের ব্যাকআপ উইকেটকিপারও ফিলিপস। লোয়ার মিডল অর্ডারে এমন একজনকে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।

ভারসাম্যের জন্য ছয় নম্বরে একজন অলরাউন্ডার খুঁজছিলাম যে পেস বোলিং করে। অস্ট্রেলিয়ার মার্কাস স্টয়নিস এবার এই দায়িত্বে ভালো করেছে। কিন্তু ফাইনালের পর বেন স্টোকসকে না রাখা একটু কঠিনই। এবারের বিশ্বকাপে সে নতুন বলে বোলিংও করেছে। তাকে বেছে নেওয়ার আরেক কারণ এটি।

এবার বোলিং আক্রমণে আসি। কন্ডিশনের কারণে আমি দুজন লেগ স্পিনারকে একাদশে রাখতে চেয়েছিলাম। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে ইংল্যান্ডের আদিল রশিদ দুর্দান্ত বোলিং করেছে। টুর্নামেন্টের চূড়ান্ত চাপে সে কি বোলিংই না করল! কিন্তু টুর্নামেন্টজুড়ে ভালো করায় শাদাব খান ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে বেছে নিয়েছি। শাদাব এবার ব্যাটিংয়েও ভালো করেছে। তাই শাদাবই আমার দলের ৭ নম্বর ব্যাটসম্যান।

খেলা যেহেতু অস্ট্রেলিয়ায়, তিন বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে দল সাজাতেই হবে। বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে স্যাম কারেনের নাম সবার আগে আসবে। ৬ ম্যাচে ১৩ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ও হয়েছে কারেন। শুধু উইকেট সংখ্যার কারণে নয়, ডেথ ওভারে সে ছিল এককথায় দুর্দান্ত। মাঠের আকৃতি বুঝে বুদ্ধিদীপ্ত বোলিং করেছে।

পাকিস্তানের শাহিন শাহ আফ্রিদিও আছে আমার একাদশে। টুর্নামেন্টের শুরুতে সেরা ছন্দে না থাকলেও পাকিস্তানের বাঁচা–মরার ম্যাচগুলোতে সেরা ছন্দে ফিরেছে, ৭ ম্যাচে নিয়েছে ১১ উইকেট। নতুন বলের পাশাপাশি ডেথ ওভারেও শাহিনকে কাজে লাগানো যাবে।

আরেক পেসার হিসেবে তাসকিন আহমেদকে বেছে নিয়েছি। বিশ্বকাপজুড়ে তাসকিন যে বোলিং করেছে, সেটার যতই প্রশংসা করি, কমই হবে। ৫ ম্যাচে ৮ উইকেট—এই সংখ্যাগুলোও তাসকিনের বোলিংয়ের সম্পূর্ণ ছবিটা ফুটিয়ে তোলে না। কারণ, তার বোলিংয়ে বেশ কিছু ক্যাচ পড়েছে। ভারতের হার্দিক পান্ডিয়ার বিশ্বকাপও ভালো কেটেছে। ব্যাটিং ও বোলিং দুই বিভাগেই তাকে কার্যকর মনে হয়েছে। সে কারণেই দ্বাদশ খেলোয়াড় হিসেবে হার্দিককে বেছে নিয়েছি।

নাজমূল আবেদীনের একাদশ

জস বাটলার (অধিনায়ক/উইকেটকিপার) (ইংল্যান্ড), অ্যালেক্স হেলস (ইংল্যান্ড), বিরাট কোহলি (ভারত), সূর্যকুমার যাদব (ভারত), গ্লেন ফিলিপস (নিউজিল্যান্ড), বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড), শাদাব খান (পাকিস্তান), ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা (শ্রীলঙ্কা), স্যাম কারেন (ইংল্যান্ড), শাহিন শাহ আফ্রিদি (পাকিস্তান), তাসকিন আহমেদ (বাংলাদেশ), হার্দিক পান্ডিয়া (দ্বাদশ খেলোয়াড়) (ভারত)।