৪৪৪ রানের ম্যাচ জিতল ধোনির চেন্নাই

শেষ দিকে দারুণ বল করেছেন চেন্নাইয়ের বোলাররা। উইকেট পড়ার পরছবি: আইপিএল

‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’—ক্রিকেটে কথাটি ব্যবহার করতে করতে ক্লিশে হতে বসেছে। তবু কিন্তু প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। আজ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ইনিংসটাই মনে করে দেখুন। চেন্নাই সুপার কিংসের ৬ উইকেটে ২২৬ রান তাড়া করতে নেমেছিল ফাফ ডু প্লেসির দল।

ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিরাট কোহলির আকাশে তোলা ক্যাচ ছাড়েন চেন্নাইয়ের মহেশ থিকসেনা। কোহলি ৬ রানের বেশি করতে না পারায় হয়তো ওই ক্যাচ নিয়ে আক্ষেপ থাকবে না। কিন্তু ফাফ ডু প্লেসি ও দীনেশ কার্তিকের ক্যাচ ফেলে হারের চোখ রাঙানিই দেখছিল চেন্নাই। তবে শেষ কয়েকটি ওভারে ভালো বল করে মহেন্দ্র সিং ধোনির দলই শেষ পর্যন্ত ৮ রানের জয় তুলে নিয়েছে।

সেই থিকসেনাই ১১তম ওভারে ডু প্লেসি ৫২ রানে অপরাজিত থাকতে তাঁর ক্যাচ ফেলেছেন। ১৪তম ওভারে ডু প্লেসি (৩৩ বলে ৬২) আউট হওয়ার পর ৩৬ বলে ৬৮ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। হাতে ৬ উইকেট। এখান থেকে ম্যাচ জেতা এমন কঠিন কিছু ছিল না। ১৭তম ওভারে রুতুরাজ গায়কোয়াড় দীনেশ কার্তিকের ক্যাচ ফেলার পর পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে উঠেছিল চেন্নাইয়ের জন্য। কিন্তু ওই ওভারেই দীনেশকে (১৪ বলে ২৮) তুলে নিয়ে বেঙ্গালুরুর জয়ের সমীকরণ ১৮ বলে ৩৫ রানে নামিয়ে আনেন চেন্নাইয়ের বোলার তুষার দেশপান্ডে। এখান থেকেও ম্যাচটা জেতা একদম কঠিন ছিল না বেঙ্গালুরুর জন্য।

কিন্তু পরের ওভারে লঙ্কান পেসার মাথিশা পাথিয়ারানা মাত্র ৪ রানে ১ উইকেট নেন। ১৯তম ওভারে দেশপান্ডে এসে ১২ রানে নেন ১ উইকেট। ব্যস, এই দুই ওভারেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ার খুব কাছাকাছি চলে যায় বেঙ্গালুরু। শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রানের সমীকরণ মেলাতে পারেনি চেন্নাইয়ের লোয়ার অর্ডার। শেষ ওভারে ১০ রান তুলতে পেরেছে বেঙ্গালুরু। ৮ উইকেটে ২১৮ রানে থেমেছে বেঙ্গালুরুর ইনিংস। দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট ৪৪৪ রানের এই ম্যাচে দারুণ ব্যাটিং দেখেছেন দর্শক।

তার আগে বেঙ্গালুরুর কিন্তু জয়ের পথেই ছিল। দুটি দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে চেন্নাইয়ের দুইশোর্ধ্ব সংগ্রহকে তাড়া করেছে বেঙ্গালুরু। ৪ ছক্কা ও ৫ চারে ভর করে ডু প্লেসির ৬২ এবং পাঁচে নামা গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ৩৬ বলে ৭৬ রানের ‘টর্নেডো’—এ দুটি ইনিংসে ভর করেই পাল্টা লড়াই করেছে বেঙ্গালুরু। ৮ ছক্কা ও ৩ চারে ইনিংসটি সাজান ম্যাক্সওয়েল।

আগে ব্যাট করা চেন্নাইয়ের হয়ে প্রথমে ডেভন কনওয়ে ও আজিঙ্কা রাহানে, মাঝে শিবম দুবে, শেষে আম্বাতি রাইডু ও মঈন আলীর ঝড় তুলেছেন। চিন্নাস্বামীতে বেঙ্গালুরুর বোলিং আক্রমণকে দারুণ চ্যালেঞ্জ জানিয়ে যান চেন্নাইয়ের ব্যাটসম্যানরা। মৌসুমে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ২২৮ রানের স্কোরটি (সানরাইজার্স হায়দরাবাদ) ছুঁতে না পারলেও জয় তুলে নেওয়ার মতো সংগ্রহই পেয়েছিল চেন্নাই।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারে ফেরেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। চেন্নাই ফিরে তাকায়নি আর। রাহানে ও কনওয়ে দ্বিতীয় উইকেটেই তোলেন ৪৩ বলে ৭৪ রান। রাহানে থামেন ২০ বলে ৩৭ রান করে, কনওয়ে ১৬তম ওভারে আউট হন ৪৫ বলে ৮৩ রান করে, ইনিংসে ছিল ৫টি করে চার ও ছক্কা।

পরের ওভারে ২৭ বলে ২ চার ও ৫ ছক্কায় ৫২ রান করা দুবেকে থামায় বেঙ্গালুরু। কিন্তু রাইডুর ৬ বলে ১৪ ও মঈনের ৯ বলে ১৯ রানের ছোট অথচ ঝড় তোলা ইনিংস এগিয়ে নেয় চেন্নাইকে। এক সিরাজ (৪ ওভারে ৩০ রান) ছাড়া বেঙ্গালুরুর সব বোলারই দিয়েছেন ওভারপ্রতি ১০-এর ওপর করে রান। পেসার বিজয়কুমার বিশাক ৪ ওভারে দেন ৬২ রান। চেন্নাইয়ের হয়ে ৩ উইকেট তুষার দেশপান্ডের।