বাংলাদেশকে রান বন্যায় ভাসাল দক্ষিণ আফ্রিকা

১৭৪ রান করেছেন কুইন্টন ডি ককছবি : এএফপি

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে দক্ষিণ আফ্রিকার আরও একটি ম্যাচ। আরও একবার প্রোটিয়াদের ব্যাটিং দাপটের দুর্দান্ত প্রদর্শনী। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। এমন দানবীয় ব্যাটিং দলের বিপক্ষেই আজ টসে হেরে পরে বোলিং করতে হলো। আর আগে ব্যাটিং করে হাত খুলে খেলার সুবিধাটা কাজে লাগিয়ে প্রোটিয়ারা পৌঁছে গেল ৫ উইকেটে ৩৮২ রানে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনার কুইন্টন ডি কক শতক (১৭৪) করেছেন। অর্ধশতক করেছেন এইডেন মার্করাম (৬০) ও হাইনরিখ ক্লাসেন (৯০)। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নিয়েছেন হাসান মাহমুদ।

এবারের বিশ্বকাপে চার ম্যাচ খেলে তিনটিতেই তিন শ’র বেশি রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তিন শ বললেও কম হয়ে যায়। একটিতে ৩৯৯, আরেকটিতে বিশ্বকাপের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪২৮ রান।

এমন একটি দলের বিপক্ষে বোলিংয়ে ভালো শুরুটা খুব দরকার। শরীফুল ইসলাম ও মেহেদী হাসান মিরাজের সৌজন্যে বাংলাদেশ সেটি পেয়েও যায়। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মিরাজের বলে স্লিপে ক্যাচ তোলেন ওপেনার রিজা হেনড্রিকস। কিন্তু তানজিদ হাসান ক্যাচটা ধরতে পারেননি। তখন হেনড্রিকসের রান ০।

ফন ডার ডুসেনকে দ্রুত ফেরালেও প্রোটিয়াদের রানের চাকা থামানো যায়নি
ছবি : আইসিসি

যদিও ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের ইনিংস দীর্ঘ হতে দেননি শরীফুল। সপ্তম ওভারে এসে হেনড্রিকসের ব্যাট-প্যাডের মাঝে জায়গা খুঁজে নেন শরীফুল। ফুল লেংথের বলে দারুণ ইনসুইং হেনড্রিকসের স্টাম্প ভাঙে। আউট হওয়ার আগে তাঁর ব্যাট থেকে আসে ১৯ বলে ১২ রান। পরের ওভারে মিরাজের জোরের ওপরে করা অফ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন তিনে নামা রেসি ফন ডার ডুসেন (১)। দুই উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে দ্রুত রান তুলতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা (২ উইকেটে ৪৪ রান)।

তবে যাঁকে আউট করার আশায় ছিল, সেই কুইন্টন ডি কক টিকে ছিলেন। বাঁহাতি প্রোটিয়া ওপেনারকে আউট করার জন্য সাকিব অফ স্পিনার মিরাজকে নতুন বলে টানা ৭ ওভার বোলিং করিয়েছেন। ডি কক মিরাজের ওভারের বেশির ভাগ সময় কাটিয়েছেন নন স্ট্রাইক প্রান্তে। সিঙ্গেল নিয়ে চারে নামা এইডেন মার্করামকে স্ট্রাইক দিয়েছেন কৌশলে। তিনিও নিশ্চয়ই জানতেন, মিরাজ-বাধা পার করতে পারলেই মুম্বাইয়ের উইকেটে শতক প্রায় নিশ্চিত। হয়েছেও তাই। ৪৭ বলে অর্ধশত করে ডি কক তিন অংক স্পর্শ করেন ১০১ বলে।

৬০ রান করেছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক মার্করাম
ছবি : আইসিসি

মাঝের ওভারে ৬৯ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে ডি কককে সঙ্গ দিয়েছেন মার্করাম। শতক হতে পারত তাঁরও, ৩১ তম ওভারে সাকিবের বলে এক্সট্রা কাভারে তুলে মারতে গিয়ে লং অফে ক্যাচ তোলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।

ডি কক অবশ্য শতকেই থামলেন না। ৪৫ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করেছেন। দেড় শ ছাড়িয়ে রানটাকে নিয়ে গেলেন ১৭৪ রানে। হাসান মাহমুদের বলে ক্যাচ তুলে আউট হওয়ার আগে ১৪০ বলে ১৫টি চার ও ৭টি ছক্কায় ১২৪ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসটি সাজিয়েছেন এই বাঁহাতি ওপেনার। এই বিশ্বকাপে এটি ডি ককের তৃতীয় শতক।

ইনিংসের শেষের ওভারগুলো কাজে লাগানোর জন্য আদর্শ ব্যাটসম্যান তখন ক্রিজে টিকে ছিলেন। আগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৭ বলে ১০৯ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলা হাইনরিখ ক্লাসেন আজ ৩৪ বলে ফিফটি করে এগোচ্ছিলেন আরও একটি শতকের পথে।

ডি কক ও ক্লাসেন বাংলাদেশের লক্ষ্যটাকে নাগালের বাইরে নিয়ে গেছেন
ছবি : আইসিসি

তবে হাসানের করা ইনিংসের শেষ ওভারে ছক্কা মারতে গিয়ে পয়েন্টে ক্যাচ তোলেন ক্লাসেন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৪৯ বলে ২টি চার ও ৮টি ছক্কায় ৯০ রান, তাঁর স্ট্রাইক রেট ছিল ১৮৩। রান করেছেন ডেভিড মিলারও। তাঁর ১৬ বলে অপরাজিত ৩৪ রান দক্ষিণ আফ্রিকার রানটাকে নিয়ে যায় ৩৮২ রানে।