রান যে একেবারেই করছেন না, তা নয়। তবু তাওহিদ হৃদয়ের ফর্ম নিয়ে একটা অস্বস্তি তৈরি হয়েছে। শেষ দুটি সংবাদ সম্মেলনে তাঁর ফর্ম ও তাঁকে নিয়ে দলের ভাবনার কথা আলাদা করে জানতে চাওয়া হয়েছিল অধিনায়ক লিটন দাসের কাছেও। দুবারই তিনি হৃদয়ের প্রতি আস্থা রাখার কথা বলেছেন।
এশিয়া কাপে গতকাল আবুধাবিতে লিটনের সঙ্গে ৭০ বলে ৯৫ রানের জুটি গড়ে হংকংয়ের বিপক্ষে ৭ উইকেটের জয় এনে দেওয়ার পর হৃদয় হাজির হয়েছিলেন সংবাদ সম্মেলনে। ২০২৩ সালের মার্চে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকের পর রঙিন পোশাকের দুই সংস্করণেই হৃদয় এখন নিয়মিত মুখ। দলের ব্যাটিংয়ে ধীরে ধীরে উঠে এসেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায়।
দুই বছরে জাতীয় দলের হয়ে ৩৮ ওয়ানডে আর ৪৬ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন হৃদয়। সময় যত যাচ্ছে, তত তিনি পরিচিত হচ্ছেন অন্য দলগুলোর কাছেও। সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর ফর্ম নিয়ে যে অস্বস্তি, তা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তাঁর ‘হানিমুন পিরিয়ড’, মানে শুরুর দিকের সেই সময়টা পেরিয়ে এসেছেন বলেই কি?
মুখে হাসি রেখে প্রশ্নটির উত্তর দিয়েছেন হৃদয়, ‘আপনি যেটা বললেন, হানিমুন পিরিয়ড (আসলেই) শেষ। আমি চেষ্টা করছি, অনুশীলনে যাচ্ছি। হয়তো হচ্ছে না। যত বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে, তারা সবাই-ই কিন্তু এক গ্রাফে যেতে পারে না।’
টি-টোয়েন্টিতে শেষ ১৩ ইনিংসে হৃদয়ের ব্যাটে ফিফটি নেই। গত বছর অক্টোবরে ভারতের বিপক্ষে অপরাজিত ৬৩ রানের ইনিংসের পর যেসব ইনিংস খেলেছেন, তাতে বলের সঙ্গে রানের ব্যবধান ছিল কম। কাল হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচেও তাঁর ৩৬ বলের ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল মাত্র একটি, করেছেন ৩৫ রান।
নিজের উন্নতির জায়গাগুলোও চিনে নিচ্ছেন হৃদয়, ‘আমার উন্নতির অনেক জায়গা আছে। আমার হাতে যেটা আছে, চেষ্টা করে যাচ্ছি। হ্যাঁ, স্ট্রাগল করছি। বিশ্বের যত খেলোয়াড় আছে, সবাই কমবেশি করে। হয়তো ইনিংসগুলো বড় করতে পারছি না। চেষ্টা করছি, এখান থেকে যদি আরেকটা ধাপ ওপরে নিতে পারি। দুই–তিনটা বাউন্ডারি হলে হয়তো দৃশ্যপটও বদলে যাবে।’
নিজের ইনিংসের একটা ব্যাখ্যাও দাঁড় করালেন হৃদয়, ‘টি-টোয়েন্টি খেলাটা এমন, কোনো কোনো সময় ১৫-২০ রান অনেক প্রভাব রাখে। আমি চেষ্টা করছি, আমার হাতে যেটা আছে, চেষ্টাটাই করতে পারব আর প্রসেসটা ঠিকঠাক রাখতে পারব। আশা করছি, এখান থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’
ব্যাট হাতে নিজের সময়টা যে ভালো যাচ্ছে না, স্বয়ং হৃদয়ই এই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। কিন্তু ব্যাটিং করার সময় তা মাথায় থাকলে তো আলাদা একটা চাপ তৈরি হয়। যখন উইকেটে আসেন, তখন কি ভাবনায় থাকে আগে কিছুটা সময় নিয়ে তারপর চালিয়ে খেলার?
হৃদয়ের উত্তর, ‘এই জিনিসটা মাথায় থাকলে আমি ভালো খেলতে পারব না। শরীর ওভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবে না। আমার সব সময় লক্ষ্য থাকে একটা নতুন দিন, ওভাবেই শুরু করি। আশা করছি সামনে ভালো কিছু করতে পারব। এক গ্রাফে তো আর কোনো খেলোয়াড়ই যেতে পারে না।’