অস্ট্রেলিয়ার ১১২ বছরের পুরোনো স্কোরকার্ডে ‘ব্যাটসম্যান’ থেকে ‘ব্যাটিং’

অ্যাডিলেড ওভালের স্কোরকার্ড। ছবিটি পুরোনোছবি: অ্যাডিলেড ওভাল ইনস্টাগ্রাম

অ্যাডিলেড ওভাল এমনিতেই ক্রিকেটের সবচেয়ে সুন্দর মাঠগুলোর একটি। অনেকে বলেন ছবির মতো সুন্দর। বাগান ও গাছপালার মাঝে এর অবস্থান, পেছনে সেন্ট পিটার ক্যাথেড্রালের চূড়া সৌন্দর্যে অন্য মাত্রা যোগ করেছে। আছে ঐতিহ্যের ছোঁয়াও।

বিখ্যাত ‘গ্রাস হিল’–এর ওপর ১৯১১ সালে বসানো স্কোরবোর্ডে এখনো সচল। সিটি অব অ্যাডিলেড হেরিটেজ রেজিস্ট্রারের অন্তর্ভুক্ত ১১২ বছরের পুরোনো এই স্কোরবোর্ডে সম্প্রতি একটি শব্দ পাল্টানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

শুক্রবার মেয়েদের বিগ ব্যাশে অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্স ও পার্থ স্কর্চার্সের মধ্যে ম্যাচের আগে এই পরিবর্তন করা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ (সাবেক টুইটার) অ্যাডিলেড স্ট্রাইকার্সের করা পোস্টে জানানো হয়, ‘অ্যাডিলেড ওভালের স্কোরবোর্ডে “ব্যাটসম্যান”–এর বদলে “ব্যাটিং” লিখে প্রথম ম্যাচ খেলা হলো।’ অর্থাৎ অ্যাডিলেড ওভালের আইকনিক স্কোরবোর্ডে এত দিন ‘ব্যাটসম্যান’ লেখা ছিল। লিঙ্গসমতাকে আরও এগিয়ে নিতে পরিবর্তনটি করা হয়েছে। আর এটি করা হয়েছে আইসিসির একটি নিয়মের সঙ্গে সংগতি রেখেই।

২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে আইন করে ‘ব্যাটসম্যান’–এর বদলে ‘ব্যাটার’ শব্দ ব্যবহার প্রচলন করে ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি)। নারী ও পুরুষ দুই ক্রিকেটেই এটি লিঙ্গনিরপেক্ষ শব্দ। ঠিক যে কথা ভেবে ২০০০ সালে ‘ফিল্ডসম্যান’ শব্দ পাল্টে ‘ফিল্ডার’ ব্যবহারের নিয়ম করেছিল এমসিসি। অ্যাডিলেড ওভালের স্কোরবোর্ডে ‘ব্যাটসম্যান’ শব্দটি এ ভাবনা থেকেই ‘ব্যাটিং’ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

অস্ট্রেলেশিয়া (অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু দ্বীপ) অঞ্চলে শুধু অ্যাডিলেড ওভালেই এখনো হাতে চালানো স্কোরবোর্ড ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১১ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে এটি সংস্কার করা হলেও ঐতিহ্য ধরে রাখতে স্কোরবোর্ডে হাত দেওয়া হয়নি।

অস্ট্রেলিয়ার প্রয়াত কিংবদন্তি লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্ন ক্রিকেটে লিঙ্গসমতামুখী শব্দের ব্যবহারের পক্ষে ছিলেন, ‘আমি এটার পক্ষে। আমার মনে হয় এটা ভালোই হয়। (ক্রিকেট) খেলাটা জনপ্রিয় তাই সময়ের সঙ্গে তাল মেলানো গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয় “ব্যাটসম্যান” থেকে “ব্যাটার” ন্যায্য পরিবর্তনই হবে।’

স্কোরবোর্ডে এই শব্দের পরিবর্তন অনেকে ইতিবাচক চোখেই দেখছেন। কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন, এত দেরি হলো কেন? সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ক্রিকেটপ্রেমীর মন্তব্য, ‘ন্যায্য কাজ। কিন্তু এত দেরি হওয়ায় বিস্মিত হয়েছি।’

আরও পড়ুন