আফ্রিদি না অভিষেক, আজ কার দিন

শাহিন আফ্রিদি ও অভিষেক শর্মাছবি: এএফপি

হিসাবটা খুব সহজ—ওয়াসিম আকরাম–শোয়েব আখতাররা অন্তত সেটাই মনে করছেন। অভিষেক শর্মাকে দ্রুত ফেরাও, ভারতকে চাপে ফেলে দাও—পাকিস্তান দলকে এটাই তাঁদের একমাত্র পরামর্শ। ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা আবার সূর্যকুমার–অভিষেকদের পরামর্শ দিচ্ছেন—শাহিন আফ্রিদিকে সামলে নাও, শুরুতেই ওকে উইকেট দিও না; দেখবে পাকিস্তানের বোলিং এলোমেলো হয়ে যাবে!

এবারের এশিয়া কাপে ভারতীয় ওপেনার অভিষেক শুধু ভারতেরই নন, এশিয়া কাপেরই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৬ ইনিংস খেলে ৫১.৫০ গড়ে ২০৪.৬৩ স্ট্রাইক রেটে ৩০৯ রান করেছেন অভিষেক।

তার মানে একটা বিষয় পরিষ্কার, আজকের ভারত–পাকিস্তান ফাইনালে লড়াইয়ের মধ্যে লড়াইটা আসলে আফ্রিদি আর অভিষেকের। আফ্রিদির আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি অভিষেক ২০১৮ সালে, অভিষেকের মাত্রই গত বছর। এ সংস্করণে আফ্রিদি ৯১ ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ১১৭ উইকেট। অন্যদিকে অভিষেকের অভিজ্ঞতা মাত্র ২৩ ম্যাচের, দুটি সেঞ্চুরি ও পাঁচটি ফিফটিতে ৩৮.৩৬ গড়ে করেছেন ৮৪৪ রান। তবে তাঁর ১৯৭.৬৫ স্ট্রাইক রেট যেকোনো বোলারের জন্যই ভয়জাগানিয়া।

অভিষেক শর্মা। ছক্কা মারতে পছন্দ করেন। ছবিটি দুবাইয়ে বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচের
এএফপি

তা হোক, অভিজ্ঞতা বিবেচনায় তো আফ্রিদি–অভিষেক লড়াইটা অসমই। একজন এই সংস্করণে অভিজ্ঞ এক সৈনিক, আরেকজনের মাত্রই পথচলা শুরু হয়েছে। তবে এবারের এশিয়া কাপে এ দুজনের পারফরম্যান্স বিবেচনায় নিলে আজকের ম্যাচের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন হয় ‘আফ্রিদি–অভিষেক লড়াই’–ই। সে লড়াইয়ে যিনি জিতবেন, তাঁর দলই হয়তো পরবে এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট।

এবারের এশিয়া কাপে ভারতীয় ওপেনার অভিষেক শুধু ভারতেরই নন, এশিয়া কাপেরই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। ৬ ইনিংস খেলে ৫১.৫০ গড়ে ২০৪.৬৩ স্ট্রাইক রেটে ৩০৯ রান করেছেন অভিষেক। ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তিলক বর্মা ৫ ইনিংসে করেছেন ১৪৪ রান। ১০০ রানের বেশি করতে পেরেছেন ভারতের আর মাত্র একজন ব্যাটসম্যানই—সঞ্জু স্যামসন। স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তান দলের অভিষেককে নিয়ে বেশি ভাবার কথা!

ভারতের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ, আফ্রিদি এই এশিয়া কাপে দুবার প্রথম ওভারে উইকেট নিয়েছেন সর্বশেষ দুই ম্যাচে। যার মানে, ফাইনালের আগে চূড়ান্তভাবেই স্বরূপে ফিরেছেন তিনি!

আফ্রিদির ক্ষেত্রে অবশ্য এমনটা নয়। তিনি একাই যে পাকিস্তানকে এবারের এশিয়া কাপে টেনেছেন, বিষয়টি তা–ও নয়। এবারের এশিয়া কাপে আফ্রিদি সর্বোচ্চ উইকেটশিকারিও নন। ৬ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। ৯ উইকেট নিয়েছেন তাঁর সতীর্থ হারিস রউফও। কিন্তু এবারের এশিয়া কাপে আফ্রিদি যেভাবে বল করেছেন, সেটাই ভাবিয়ে তুলেছে ভারতের সাবেকদের।

আরও পড়ুন
শাহিন আফ্রিদি নিজেকে ফিরে পেতে শুরু করেছেন
এএফপি

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আবির্ভাবের শুরুতে গতি, সুইং আর বৈচিত্র্য দিয়ে প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের প্রাণ ওষ্ঠাগতই করে রেখেছিলেন পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার। কিন্তু সময়ের আবর্তনে চোটসহ অন্যান্য সমস্যা মিলিয়ে আফ্রিদি যেন নিজের ছায়াই হয়ে গিয়েছিলেন। এবারের এশিয়া কাপে যেন সেই ছায়া থেকে আবার বেরিয়ে এসেছেন। ফিরে পেতে শুরু করেছেন আগের সেই গতি, সুইং আর বৈচিত্র্য। এককথায় বলা যায়, বোলিং করার আনন্দটা যেন আবার ফিরে পেতে শুরু করেছেন আফ্রিদি!

একটা উদাহরণ এ ক্ষেত্রে দেওয়া যেতে পারে। একটা সময় আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়াটা অনেকটাই রীতি বানিয়ে ফেলেছিলেন আফ্রিদি। মাঝে তা কোথায় যেন হারিয়ে গিয়েছিল। প্রথম ওভারে উইকেট পাওয়া দূরে থাক, পাওয়ারপ্লেতে বোলিং করাই যেন ভুলে গিয়েছিলেন! এবারের এশিয়া কাপে আবার সেই জাদুর কাঠিটিও যেন ফিরে পেয়েছেন—ছয় ম্যাচের দুটিতে প্রথম ওভারে উইকেট নিয়েছেন। সব মিলিয়ে এই কীর্তি ২২ বার। টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি।

ভারতের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ, আফ্রিদি এই এশিয়া কাপে দুবার প্রথম ওভারে উইকেট নিয়েছেন সর্বশেষ দুই ম্যাচে। যার মানে, ফাইনালের আগে চূড়ান্তভাবেই স্বরূপে ফিরেছেন তিনি!

আরও পড়ুন