কোহলি-রোহিতরা সফরে পরিবারের সঙ্গে আগের মতো সময় কাটাতে পারবেন না
ভারতীয় ক্রিকেটারদের জন্য বিধি-নিষেধ কঠোর করছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। দেশের বাইরে সফরে এখন আর আগের মতো পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারবেন না রোহিত–কোহলিরা। খেলোয়াড়েরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় যেতে পারবেন না অনুশীলন কিংবা ম্যাচেও।
৪৫ কিংবা তার বেশি দিনের সফরে পরিবারের (জীবনসঙ্গী ও সন্তান) সঙ্গে ১৪ দিনের বেশি থাকতে পারবেন না খেলোয়াড়েরা। শর্ত আছে এই নিয়মেও। সফরের প্রথম দুই সপ্তাহ পরিবারের সঙ্গে থাকা যাবে না। এর চেয়ে কম দিনের সফরে খেলোয়াড়েরা পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহের বেশি সময় থাকতে পারবেন না।
খেলোয়াড়দের সঙ্গে বোর্ডের চুক্তিতে এসব শর্ত আগেই ছিল। কিন্তু কোভিড মহামারির সময় শর্তগুলো শিথিল করা হয়েছিল। তখন খেলোয়াড়দের মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে দলের জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে তাঁদের পরিবারকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
অস্ট্রেলিয়া সফর শেষে মুম্বাইয়ে গত শনিবার প্রথমবারের মতো ভারতের অধিনায়ক রোহিত, প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর এবং প্রধান নির্বাচক অজিত আগারকার বিসিসিআইয়ের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে পূর্বের নিয়ম-নীতি ফিরিয়ে আনার কথা জানানো হয় দলের নেতৃত্বকে।
এসব নিয়ম-নীতির আরেকটি শর্ত হলো, সব খেলোয়াড়কে অবশ্যই টিম বাসে ভ্রমণ করতে হবে। অনুশীলনও হবে সময় মেনে, যেটা নিকট অতীতে কিছু খেলোয়াড় পাত্তা দেননি বলেও জানা গেছে। সফরে খেলোয়াড়দের পরিবারের থাকার খরচ দেয় বিসিসিআই, কিন্তু ভ্রমণ খরচ দেয় না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্য সব কিছু পাল্টালেও এই নিয়মটা পাল্টানো হচ্ছে না।
বিভিন্ন ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশন দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্নটি তুলে আসছে—সফরে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কি তাঁদের পরিবারেরও থাকা উচিত, সেটা হলে কত দিনের জন্য? আইপিএল দল চেন্নাই সুপার কিংসে খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিবারও থাকে। কিন্তু এমন অনেক উদাহরণ আছে, যেখানে দলীয় পরিবেশের মধ্যে পরিবারের অন্তর্ভুক্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ রেখে ২০১৯ কোপা আমেরিকা জিতেছে ব্রাজিল ফুটবল দল। ২০১২ অলিম্পিকে অস্ট্রেলিয়ার সাঁতারুদেরও একই ভাগ্য হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। একাকিত্ব ও হতাশার কথা বলে তখন এই নিয়মের সমালোচনা করেছিলেন সাঁতারুরা।
ভারতীয় ক্রিকেটের কাছে এই প্রশ্নের উত্তর নেই। খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিবারের অন্তর্ভুক্তি কিংবা বিযুক্তি নিয়ে ভারতের ক্রিকেটে সর্বশেষ আলোচনা উঠেছিল ২০১৮ সালে। তখন অধিনায়ক কোহলি নিয়ম-নীতিগুলো শিথিল করার অনুরোধ করেছিলেন।
বর্তমান কোচ গম্ভীর তখন ভারতের সংবাদমাধ্যম ‘ইন্ডিয়া টুডে’কে বলেছিলেন, ‘খেলোয়াড়দের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। একজন খেলোয়াড়ই তা বলতে পারে কারণ তাকে টেস্ট ম্যাচ খেলতে হয়। কেউ হয়তো পুরো সফরেই পরিবারকে সঙ্গে চায়, অন্যরা হয়তো পরিবারকে কিছু সময় দিয়ে বাকি সময় মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করে। সিদ্ধান্ত যেটাই হোক, সেটা ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থেই নেওয়া উচিত।’