অবশেষে বোলারদের একদিন

আজ ব্যাটসম্যানদের দাপট দেখা যায়নি।ছবি: এএফপি

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার টেস্ট সিরিজে আলোও বেশ বড় জায়গা করে নিয়েছে। এমনিতেই পাল্লেকেলের উইকেট ম্যাচে ইতিবাচক কোনো ফল আনার চরম বিরোধী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আলোকস্বল্পতা। প্রথম টেস্টে রানবন্যায় বাঁধ দেওয়ার কাজটা সফলভাবে করতে পেরেছিল শুধু আলোকস্বল্পতা ও বৃষ্টি। দ্বিতীয় টেস্টেও হাজির হয়েছে প্রকৃতির বাধা। প্রথম দিনটায় শ্রীলঙ্কার রান উৎসবে কোনো বাদ সাধেনি প্রকৃতি। কিন্তু দ্বিতীয় দিনে বাংলাদেশের বোলাররা যা একটু উচ্ছ্বাসের মুহূর্ত এনে দিয়েছিলেন, তাতে আক্ষরিক অর্থেই জল ঢেলে দিয়েছে প্রকৃতি।

দ্বিতীয় দিনের প্রথম দুই সেশনে তাসকিন আহমেদের দাপটে দারুণ করেছেন বোলাররা। প্রথম সেশনে মাত্র ৪৩ রান তুলতে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলা লঙ্কানরা দ্বিতীয় সেশনে খুইয়েছে ২ উইকেট। দ্বিতীয় দিনের দুটো সেশনই তাই বাংলাদেশের দখলে ছিল। কিন্তু তৃতীয় সেশনটা কারও ভাগে পড়েনি। বৃষ্টি আর সে সুবাদে স্বল্প আলো দিনের খেলা থেকে ২৪ ওভার কেড়ে নিয়েছে আজ। বৃষ্টির আগে ৬ উইকেটে ৪৬৯ রান তুলেছে শ্রীলঙ্কা। দ্বিতীয় দিনে ১৭৮ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছে স্বাগতিক দল। অবশেষে বোলারদের দাপট দেখা গেল এই সিরিজে। তবু এখন পর্যন্ত যা ইঙ্গিত, তাতে ড্র-ই লেখা আছে এই টেস্টের ভাগ্যে।

আজ দারুণ বল করেছেন তাসকিন।
ছবি: এএফপি

বাংলাদেশি ফিল্ডারদের তাসকিন আহমেদের সঙ্গে ‘শত্রুতা’ প্রথম টেস্টেই দেখা গেছে। এই টেস্টেও তাসকিনের সাফল্য পাওয়ার পথে বাধা হয়ে উঠেছেন তাঁর সতীর্থেরা। বেছে বেছে তাঁর বলেই বারবার হাত থেকে বল ফসকে যাচ্ছে ফিল্ডারদের। একবার তো বল উইকেটকিপারের গ্লাভসে যাওয়ার পরও আবেদন করতেই ভুলে গেছেন বোলার-ফিল্ডার দুজন! কখনো নিজের আর কখনো ভাগ্য এভাবে বিপত্তির কারণ না হলে আজ দ্বিতীয় দিনটা টেস্টে তাসকিনের সেরা দিন হয়ে থাকত।

দিনের শুরু থেকেই দারুণ বল করেছেন। সেঞ্চুরিয়ান লাহিরু থিরিমান্নেকে বাড়তি লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছেন। এরপর অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসকে শূন্য রানে আউট করেও আউটের আবেদন করার কথা ভাবেননি। অবশ্য একটু পরই ওই লিটনের গ্লাভসেই ম্যাথুসকে আটকেছেন। প্রথম সেশনের দাপট দ্বিতীয় সেশনে ওভাবে ধরে রাখতে না পারলেও যখন প্রয়োজন হয়েছে, তখনই আবার আঘাত হেনেছেন তাসকিন। পঞ্চম উইকেট জুটিটা বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। ৫৪ রানের জুটি ভাঙতে পাথুম নিশাঙ্কার স্টাম্প উপড়ে নেন তাসকিন।

আজ ২০ ওভারের বেশি খেলা হয়নি।
ছবি: এএফপি

৩৮২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ফেলা শ্রীলঙ্কাকে চেপে ধরতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু আবারও ফিল্ডারদের ‘মাখন গলা হাত’ বাধা হয়ে উঠল। তাসকিনের বলে রমেশ মেন্ডিসের ক্যাচ ফেলেছেন প্রথম দিনে দিমুথ করুনারত্নের ক্যাচ ফেলা নাজমুল হোসেন।

আর অন্যদিকে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বোলারদের চেপে বসার সুযোগ দেননি নিরোশান ডিকভেলাও। চা–বিরতির পর বৃষ্টি–বিরতির আগে–পরে ৫৯ বলে ৪৪ রান তুলে ফেলেছে শ্রীলঙ্কা। এতে মূল ভূমিকা ডিকভেলার। ৬৪ বলে ৭ চারে ৬৪ রানে অপরাজিত আছেন ডিকভেলা। একবার জীবন পাওয়া মেন্ডিস অপরাজিত ২২ রানে।

১১৯ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন তাসকিন। ৮৩ বলে ১ উইকেট তাইজুলের। এক উইকেট করে পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও শরীফুল ইসলাম।