অলিম্পিকে টি-টোয়েন্টি ছাড়া অন্য ক্রিকেটও দেখা যেতে পারে

অলিম্পিকে টি-টোয়েন্টি বা হান্ড্রেড ক্রিকেট দেখা যেতে পারেছবি: টুইটার

২০২৮ সালেই তাহলে অলিম্পিকে ফিরছে ক্রিকেট। যেভাবে শোরগোল শুরু হয়ে গেছে, তাতে এমন কিছু ভাবতে দোষ নেই। প্রতি অলিম্পিকে নতুন কোনো ইভেন্ট যোগ হয়, সে সিদ্ধান্তের পেছনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) ও আয়োজকদের আগ্রহ মূল ভূমিকা রাখে। ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকের আয়োজক কমিটি বেশ করে চাইছে ক্রিকেট ফেরাতে। এর আগে ১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকেই শুধু ক্রিকেট খেলা হয়েছিল ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে বড় উৎসবে।

এর আগে আইসিসি বেশ কয়বার চেষ্টা করেছে ক্রিকেটকে অলিম্পিকের অংশ করতে। এ উদ্দেশ্যে এশিয়া গেমসেও যুক্ত হয়েছে ক্রিকেট। কিন্তু ভারতের অনাগ্রহ ও ক্রিকেট ম্যাচের দৈর্ঘ্য, এ ব্যাপারে বাধা হয়ে উঠছিল। অবশেষে অলিম্পিকে ক্রিকেট চালু করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করতে শুরু করেছে ভারত। ওদিকে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আবির্ভাবে খেলার দৈর্ঘ্য কমে আসায় অলিম্পিকে এ খেলা যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের প্রধান জানিয়েছেন, চাইলে অন্য সংস্করণের দেখাও মিলতে পারে অলিম্পিকে।

পরাগ মারাঠে
ছবি: যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট

১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে মাত্র একটি ম্যাচ হয়েছিল। দুদিনের সে ম্যাচে ফ্রান্সকে হারিয়ে সোনা জিতেছিল ইংল্যান্ড। দুদিন মিলে চার শর নিচে রান দেখা দেওয়া সেই খেলাকে আর অলিম্পিকে ফেরানোর চেষ্টা অনেক দিন করানো হয়নি। কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট সাড়ে তিন থেকে চার ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায় বলে অলিম্পিকের জন্য আদর্শ ভাবা হচ্ছে। আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিক নিয়ে নিজেদের ক্রিকেট গুছিয়ে নিচ্ছে। গত কয়েক বছরে ভারত ও পাকিস্তান থেকে অনেক ক্রিকেটারই এখন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দিচ্ছেন। নিজেদের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ মেজর লিগ ক্রিকেটও চালু হবে ২০২৩ সালে।

যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের প্রধান পরাগ মারাঠে আইসিসি অলিম্পিক ওয়ার্কিং গ্রুপের সদস্য। এই গ্রুপ আইসিসি ও অলিম্পিকের মধ্যে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, কীভাবে ২০২৮ অলিম্পিকে ক্রিকেট সংযুক্ত করা যায়। স্পোর্টস আনলকডের পডকাস্টে এসে মারাঠে তাঁর আশার কথা জানিয়েছেন, ‘আমি আশাবাদী, এটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক। প্রথমবারের মতো আইসিসির ১০৬ সদস্যদেশ অলিম্পিকে ক্রিকেট ঢোকানোর ব্যাপারে সমর্থন দিচ্ছে।’

অবশ্য অলিম্পিকে যে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটই দেখা যাবে, সেটা নিশ্চিত নয়। এরই মধ্যে ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো ১০০ বলের ক্রিকেটও শুরু হয়েছে। দ্য হানড্রেডের নিয়মকানুন সৃষ্টি করা হয়েছে ক্রিকেট বোঝেন না (পড়ুন যুক্তরাষ্ট্রের মতো) এমন মানুষকেও ক্রিকেটে আগ্রহী করে তোলার জন্য। ফলে অলিম্পিকে হানড্রেডও দেখা যেতে পারে। মারাঠে অবশ্য টি-টোয়েন্টি দেখার পক্ষে।

আইপিএলের জনপ্রিয়তাও অলিম্পিকে প্রভাব ফেলতে পারে
ফাইল ছবি

পডকাস্টে মারাঠে বলেছেন, ‘আমার ধারণা, টি-টোয়েন্টি সংস্করণই বুঝতে সবচেয়ে সহজ এবং এটা কাজের। সময়ের কথা চিন্তা করলে এটা খুবই কার্যকর। আমেরিকান খেলার ফরম্যাটের সঙ্গে এটা যায়। তিন ঘণ্টায় খেলা যায়। আইপিএলে সাফল্যের জন্য এই ফরম্যাট এখন অনেকেই বোঝে। কিন্তু আমাদের আইওসির সঙ্গে কাজ করতে হবে এবং তারা যদি অন্য ফরম্যাট পছন্দ করে, তাহলে আমরা সে প্রস্তাবও ভেবে দেখব।’
যে সংস্করণই বেছে নেওয়া হোক না কেন, অলিম্পিকে ক্রিকেট দেখতে পারলেই খুশি মারাঠে, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গেমসে ক্রিকেট যুক্ত করা। আমাদের মনে হচ্ছে টি-টোয়েন্টিই সেরা। আমি শুধু এটা জানি, এই প্রথম আমরা অলিম্পিকে যুক্ত হওয়ার ব্যাপারে সবাই একসঙ্গে চেষ্টা করছি এবং এটা আরও আগেই হওয়া উচিত ছিল।’