অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান যেখানে এক বিন্দুতে

আবুধাবিতে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে অন্য রকম এক ইতিহাস গড়েছে আফগানিস্তান।ছবি: আবুধাবি ক্রিকেট

৭০.৪ ওভার, অষ্টম উইকেটে লম্বা এক জুটিই গড়েছেন শন উইলিয়ামস ও ডোনাল্ড তিরিপানো। একটি রেকর্ডও গড়েছেন তাঁরা। জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাসে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েছেন। ছাড়িয়ে গেছেন ২০০৩ সালের নভেম্বরে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হিথ স্ট্রিক ও অ্যান্ডি ব্লিগনটের ১৬৮ রানের অষ্টম উইকেট জুটিকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে উইলিয়ামস ও তিরিপানোর জুটিটি ১৮৭ রানের।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি ড্র করতে পেরেছিল জিম্বাবুয়ে। কিন্তু আজ দারুণ লড়াই করেও উইলিয়ামস আর তিরিপানো জিম্বাবুয়েকে হারের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি। তাঁদের জুটিটি শুধু আফগানিস্তানের জয়ের অপেক্ষাটাই বাড়াতে পেরেছে। দুই দিনের মধ্যে প্রথম ম্যাচটা হেরে যাওয়া আফগানিস্তান দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় টেস্টে কাঙ্ক্ষিত সেই জয়টি পেয়ে গেছে চা–বিরতি থেকে ফেরার কিছুক্ষণ পরই। ৬ উইকেটের জয়ে তারা ছুঁয়ে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়ার একটি কীর্তিও।

টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথম তিন ম্যাচ জিততে অস্ট্রেলিয়ার লেগেছে মাত্র ৬ ম্যাচ। আফগানিস্তানও টেস্ট অভিষেক হওয়ার পর কালকের ম্যাচটি নিয়ে তৃতীয় জয় পেয়েছে। সেটি অস্ট্রেলিয়ার মতোই ষষ্ঠ ম্যাচে এসে। সেদিক থেকে বলাই যায়, টেস্ট ক্রিকেটের অন্তত এই একটা জায়গায় একই বিন্দুতে মিলে গেছে অস্ট্রেলিয়া ও আফগানিস্তান।

দুর্দান্ত এক জুটি গড়েও জিম্বাবুয়েকে হারের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি উইলিয়ামস ও তিরিপানো।
ছবি: আবুধাবি ক্রিকেট

প্রথম তিন জয় পেতে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তৃতীয় জয়টি বাংলাদেশ পেয়েছে ৬১তম ম্যাচে এসে। বাংলাদেশের আগে তৃতীয় জয় পেতে সর্বোচ্চ ৫৭ ম্যাচ খেলেছে নিউজিল্যান্ড। উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলে ৩ নম্বর জয় পাওয়া দল পাকিস্তান। তিনটি জয় পেতে তারা খেলেছে ১৫টি ম্যাচ। ভারতের লেগেছে ৩২ ম্যাচ, শ্রীলঙ্কার ৪২ ম্যাচ।

ইতিহাসের পাতা থেকে এবার আজকের ম্যাচে আসা যাক। আজ পঞ্চম দিনের খেলা জিম্বাবুয়ে শুরু করেছিল ৭ উইকেটে ২৬৬ রান নিয়ে। আগের দিন তৃতীয় সেশনের পুরো সময় ব্যাটিং করা উইলিয়ামস ও তিরিপানোর জুটি ভেঙেছে আজ মধ্যাহ্নভোজের বিরতির মিনিট চারেক আগে। রশিদ খানের বলে এলবিডব্লু হয়ে ফিরেছেন তিরিপানো। টেস্ট ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস খেললেও ফিরেছেন তিনি ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে।

অন্য প্রান্তে জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক উইলিয়ামস ছিলেন অবিচল। এরপরও তিরিপানোর আউটের পর খুব বেশিক্ষণ আর টেকেনি জিম্বাবুয়ের ইনিংস। তিরিপানো আউট হয়েছেন দলের ৩২৯ রানে। আর জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ৩৬৫ রানে। আফগানদের মাত্র ১০৮ রানের লক্ষ্যই দিতে পেরেছে তারা। উইলিয়ামস অপরাজিত ছিলেন ৩০৯ বলে ১৫১ রান করে। আফগানিস্তানের পক্ষে ১৩৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নিয়েছেন লেগ স্পিনার রশিদ খান। ইনিংসে চতুর্থবারের মতো ৫ উইকেট পাওয়ার কীর্তি গড়েছেন রশিদ। ইনিংসে এটা তাঁর ক্যারিয়ার–সেরা বোলিংও। এর আগে সেরা ছিল ৬/৪৯। যেটা তিনি করেছিলেন ২০১৯ সালে, চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে।

দ্বিতীয় ইনিংসের ৭ উইকেটের আগে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছেন রশিদ, সব মিলিয়ে ম্যাচে ১১ উইকেট। ম্যাচে এটি তাঁর দ্বিতীয়বার ১০ উইকেট পাওয়ার নজির। এর আগে চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে ১১ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি ১০৪ রান দিয়ে।

লক্ষ্য ছোট, হাতে সময়ও ছিল প্রায় দেড় সেশন। লক্ষ্য পেরিয়ে যেতে তাই খুব বেশি সমস্যা হয়নি আফগানদের। ৬ উইকেট হাতে রেখেই অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এক বিন্দুতে মিলে যাওয়া এক জয় পেয়ে যায় আসগর আফগানের দল।