অস্ট্রেলিয়া এভাবেও হারে?

অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের শেষটা হলো এভাবে।ছবি: এএফপি

সিরিজের প্রথম ম্যাচ শেষে বড় বড় করে লেখা হলো, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হতে পারে ইংল্যান্ড কিন্তু ওয়ানডে কীভাবে খেলতে হয় সেটা তাদের এখনো শেখাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। দ্বিতীয় ম্যাচ শেষ এখন মনে হচ্ছে, ওয়ানডে খেলা নিজেরাই ভুলে গেছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। না হলে এভাবেও হারা সম্ভব?

অস্ট্রেলিয়ার হারের ব্যবধানটা মাত্র ২৪ রানের। কিন্তু যেভাবে হেরেছে, সেটাই প্রশ্ন তুলে দিতে পারে দলটির মানসিকতা নিয়ে। ২ উইকেটে ১৪৪ রান করে ফেলা অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল আর মাত্র ৮৮ রান। উইকেটে দুই সেট ব্যাটসম্যান। প্রায় ২০ ওভার বাকি ম্যাচের। এ অবস্থায় হারাটাই কঠিন।

সে কঠিন কাজটাই করেছে অস্ট্রেলিয়া। অবিশ্বাস্য এক ধস নামল ইনিংসে। ৬৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে সিরিজে সমতা টানা নিশ্চিত করল সফরকারীরাই। জফরা আর্চার, ক্রিস ওকস কিংবা স্যাম কারেন দারুণ বল করেছেন সন্দেহ নেই। কিন্তু নিজেদের ভরাডুবি নিজেরাই টেনে এনেছে অস্ট্রেলিয়া। আর তাতে প্রভাবক হিসেবে ভূমিকা রেখেছেন এউইন মরগান।

উইকেটে তখন দুই সেট ব্যাটসম্যান। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ ৭০ পেরিয়ে গেছেন, মারনাশ লাবুশেনও ম্যাচের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংস খেলে ফেলেছেন। এমন অবস্থায় মূল দুই বোলার আর্চার ও ওকসকে ফিরিয়ে এনেছেন মরগান। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম দুই উইকেট তুলে নেওয়া আর্চারের ওপরই আস্থা ছিল বেশি। তবে অস্ট্রেলিয়ার সর্বনাশ করেছেন ওকস।

প্রথমে একটা নিচু হয়ে আসা বল লাবুশেনের প্যাডে আঘাত হানে। আম্পায়ার ইংল্যান্ডের আবেদনে সাড়া না দেওয়ার পর রিভিউ নেন মরগান। আম্পায়ারকে ভুল প্রমাণ করে রিভিউ। ৪৮ রানে আউট হয়ে গেলেন লাবুশেন। টিভি ধারাভাষ্যে উত্তেজনা, এটাই ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেবে। ধারাভাষ্যকার নিজেও হয়তো কল্পনা করতে পারেননি কত বড় ভবিষ্যদ্বাণী করে ফেলেছেন তখন।

৩ রানের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ধস নামিয়ে দেওয়ার নায়ক ওকস।
ছবি: রয়টার্স

পরের ওভারেই আর্চারের নিচু এক বলে বোল্ড হয়ে গেলেন মিচেল মার্শ। ওকস এলেন আবার এবং মূল সর্বনাশ হলো অস্ট্রেলিয়ার। সিমে পরা এক বলে লাইন মিস করে বোল্ড ফিঞ্চ (৭৩)। ১০ বল পরই প্রায় একই ধরনের এক বলে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও বোল্ড ওকসের বলে! ২ উইকেটে ১৪৪ রান থেকে মুহূর্তেই ৬ উইকেটে ১৬৬ অস্ট্রেলিয়া!

তবু অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছিল না। প্রথম ইনিংসেই যে ইংল্যান্ড দারুণ এক লড়াই দেখিয়েছে। ১৪৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলার পরও অলআউট হয়নি তারা। ইনিংস শেষ করেছে ২৩১ রানে। কিন্তু আদিল রশিদ কিংবা টম কারেনের মতো লড়াই কেউ করে দেখাতে পারেননি। স্যাম কারেন এসে একে একে তুলে নিয়েছেন কামিন্স, স্টার্ক ও জাম্পাকে। অ্যালেক্স ক্যারি (৩৬) ম্যাচটা শুধু ৪৯ ওভার পর্যন্তই নিতে পেরেছেন, জয় এনে দিতে পারেননি। আদিল রশিদকে হাঁকাতে গিয়ে ক্যারির স্টাম্পড হওয়ার মাধ্যমে শেষ হয় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ২০৭ রানে থামে ফিঞ্চের দল।

সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ম্যাচ হবে আগামী বুধবার, একই ভেন্যুতে। মিডল অর্ডারের এই দশা কাটিয়ে উঠতে না পারলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জেতার আশা ছাড়তে হবে অস্ট্রেলিয়াকে।