অস্ট্রেলিয়ানরা চাইলেও ফিরতে পারবেন না, সাকিব-মোস্তাফিজ কী করবেন?

মোস্তাফিজুর রহমান ও সাকিব আল হাসান।ফাইল ছবি: প্রথম আলো

আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। কবে সেই স্থগিতাদেশ উঠবে আর কবে আইপিএল শুরু হবে, এ নিয়ে দুই ধরনের কথা শোনা যাচ্ছে।

একদিকে বলা হচ্ছে এক সপ্তাহ সবাইকে কঠোর কোয়ারেন্টিন করিয়ে মুম্বাইয়ে আবার আইপিএল শুরু করা হতে পারে। অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে, এবারের মতো আইপিএল শেষ, এটা মেনে নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে বিসিসিআই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আইপিএলের বাকিটা আয়োজনের চেষ্টা করার কথাও শোনানো হচ্ছে।

একে একে আইপিএলের চারটি দলে করোনার সংক্রমণের খবর পাওয়ার পরই আইপিএল স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। এ অবস্থায় বিপাকে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটাররা। কারণ, ভারত থেকে যাওয়া যেকোনো ব্যক্তির ১৪ দিনের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় ঢোকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

মে মাসের অর্ধেক পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা থাকায় অস্ট্রেলিয়ান অনেক ক্রিকেটারই দেশে না ফিরে পুরো আইপিএল শেষ করেই ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু আইপিএল যদি বাতিলই হয়ে যায়, তাঁদের সে পরিকল্পনা মাঠে মারা যাবে।

শুধু অস্ট্রেলিয়াই নয়, আইপিএল স্থগিত হওয়ার ঘোষণা আসার পর থেকেই মূল আলোচনা, বিদেশি ক্রিকেটাররা এখন কী করবেন?

একই আলোচনা আইপিএলে বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে। ২৩ মে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে বাংলাদেশের। তার আগে ১৯ মে দেশে ফেরার কথা ছিল সাকিব-মোস্তাফিজদের। আইপিএল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন সম্ভাবনা জেগেছে তাদের আরো আগে ফেরার। সে ক্ষেত্রে তারা কীভাবে দেশে ফিরবেন, সেটাই এখন প্রশ্ন।

করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী ভারত ফেরত ব্যক্তিদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক। সে ক্ষেত্রে ভারত থেকে সাকিব, মোস্তাফিজদের কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারে করণীয় ঠিক করতে আগেই সরকারের নির্দেশনা চেয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

অস্ট্রেলিয়া সরকার ক্রিকেটারদের ছাড় দিতে রাজি নয়।
ছবি: টুইটার

ওদিকে আইপিএলের পর সিরিজ আছে অস্ট্রেলিয়ারও। এ অবস্থায়ও ক্রিকেটারদের একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি নয় অস্ট্রেলিয়া সরকার। এরই মধ্যে ঘোষণা করা হয়েছে ভারতে ছিলেন, এমন অস্ট্রেলিয়ান ১৪ দিন পার হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার চেষ্টা করলে তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে। শাস্তির অঙ্কও কম নয়। সর্বোচ্চ শাস্তি ৫ বছরের জেল কিংবা ৬৬ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার (বাংলাদেশি মূল্যমানে ৪৩ লাখ টাকা) অথবা দুটি শাস্তিই জুটতে পারে। ১৫ মে আবার নতুন করে এ সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ভেবে দেখা হবে।

এমনিতেই দলে করোনা ধরা পড়ায় দিল্লি ক্যাপিটালসে থাকা স্টিভ স্মিথ, মার্কাস স্টয়নিস, রিকি পন্টিংকে কঠোর কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে আগামী ছয় দিন। কলকাতা নাইট রাইডার্সে যে ভাগ্য বরণ করেছেন প্যাট কামিন্স, বেন কাটিং ও ডেভিড হাসি।

সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও চেন্নাই সুপার কিংসে খেলা ডেভিড ওয়ার্নার ও জেসন বেহরেনডর্ফেরও কঠোর কোয়ারেন্টিনে থাকার কথা ছয় দিন। কোয়ারেন্টিন শেষেও তাঁদের দেশে ফেরার পথ বন্ধ করে রেখেছে সরকার। অন্তত ১৫ মের আগে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরার কোনো সুযোগ নেই তাঁদের।

মোস্তাফিজুর রহমান ভালো করছেন রাজস্থান রয়্যালসে।
ছবি: টুইটার

ওদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড আইপিএলের সংশ্লিষ্ট সবাইকে প্রিয়জনের কাছে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার প্রতিজ্ঞার কথা জানিয়েছে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে, ‘আইপিএল আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ ও অন্যদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না বিসিসিআই। এর সঙ্গে জড়িত সবার নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার কথা চিন্তা করেই এই সিদ্ধান্ত (আইপিএল স্থগিতের) নেওয়া হয়েছে। খুব কঠিন সময় চলছে, বিশেষ করে ভারতে। এ সময় আমরা ইতিবাচক কিছু দিতে চেয়েছিলাম, মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এখন যেহেতু টুর্নামেন্ট স্থগিত করা হয়েছে, তাই কঠিন সময়ে সবাইকে পরিবার ও কাছের মানুষের কাছে ফেরত পাঠানোই এখন জরুরি। বিসিসিআই আইপিএলে অংশ নেওয়া সবার নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে।’