আইপিএলে ছক্কাতে আটকে রইল বাংলাদেশ

শুধু মোস্তাফিজই আইপিএলে বাংলাদেশের প্রতিনিধিআঁকা: খলিল রহমান

আশা জাগিয়েছিলেন তিনজন। আইপিএলে সাকিব আল হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান এখন পুরোনো হয়ে গেছেন। এ দুজনের বাইরে আইপিএলে সর্বশেষ কোনো বাংলাদেশিকে দেখা গেছে সেই ২০১৩ সালে। ২০২২ আইপিএলে নিলামের চূড়ান্ত তালিকায় তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস ও শরীফুল ইসলামের নাম ওঠার পর মনে হচ্ছিল, এবার হয়তো চিত্রটা বদলাবে।

হলো উল্টো। আইপিএলে বাংলাদেশের মুখ হয়ে ওঠা সাকিব আল হাসানই দুই দিনে দুবার নিলামে উঠে দল পাননি। সবেধন নীলমণি হয়ে আইপিএলে শুধু মোস্তাফিজই টিকে রইলেন। ২ কোটি রুপিতে দিল্লি ক্যাপিটালসে জায়গা হয়েছে বাঁহাতি পেসারের। ফলে আইপিএলে খেলা বাংলাদেশি ক্রিকেটারের সংখ্যা ছয়েই আটকে রইল। এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে জমজমাট ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ আয়োজিত হয়েছে ১৪ বার। আর সে টুর্নামেন্টের স্বাদ পেয়েছেন বাংলাদেশের মাত্র ছয়জন।

আইপিএলে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দামি ক্রিকেটার মাশরাফি
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

২০০৮ প্রথম আইপিএলেই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব ছিল। বাঁহাতি স্পিনার আবদুর রাজ্জাককে তাঁর ভিত্তিমূল্য ৫০ হাজার ডলারেই রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু নিয়েছিল। এই বাঁহাতি স্পিনার খেলেছিলেন মাত্র এক ম্যাচ। সে ম্যাচে রাজস্থানের ব্যাটসম্যানদের রুদ্রমূর্তি তাঁকে মাত্র ২ ওভার বল করতে দিয়েছিল। ২ ওভারে ২৯ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি রাজ্জাক। তাঁর আইপিএল ক্যারিয়ার সেখানেই শেষ।

২০০৯ আইপিএলে ডাক পেয়েছিলেন বাংলাদেশের দুজন। কলকাতা নাইট রাইডার্স ও কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের লড়াইয়ের সুবাদে ৫০ হাজার ডলার ভিত্তিমূল্যের মাশরাফি বিন মুর্তজার দাম ৬ লাখ ডলার হয়ে যায়। তাতে জয়ী হয় কলকাতা। এত টানাটানি করে কেনা মাশরাফি মাত্র এক ম্যাচই খেলেছিলেন। ডেকান চার্জার্সের বিপক্ষে শেষ ওভারে ২০ রানের পুঁজি নিয়ে বল করতে নেমেও পারেননি মাশরাফি। ২১ রান দরকার ছিল ডেকানের, রোহিত শর্মা একের পর এক ছক্কা মেরে ২৬ রান তুলেছিলেন। ৪ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য মাশরাফির আইপিএল ক্যারিয়ার তাই শেষ এক ম্যাচে।

সবচেয়ে বেশিবার আইপিএল খেলেছেন সাকিব
ফাইল ছবি

২০০৯ আইপিএলে বাংলাদেশের আরও একজন খেলেছেন। ৭৫ হাজার ডলার ভিত্তিমূল্যের মোহাম্মদ আশরাফুলকে পেতে এর বেশি খরচ করতে হয়নি মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে। দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে নেমে ১০ বলে ২ রান করা আশরাফুলেরও এক ম্যাচেই আইপিএল ক্যারিয়ার শেষ।

২০১১ সালে সাকিবের দেখা পেয়েছে আইপিএল। কলকাতা নাইট রাইডার্স সাকিবকে প্রথমবার পেতে ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলার দিয়েছিল। ২০১৪ সালেও আবার তাঁকে কিনেছে কলকাতা। ২০১৮ সালে দুই বছরের জন্য সানরাইজার্স হায়দরাবাদে গিয়ে গত বছর আবার ফিরেছেন কলকাতায়। তবে ২০২২ আইপিএলে নিলামে কোনো দল পাননি সাকিব। ৯ মৌসুম মিলে আইপিএলে ৭১ ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। তাতে ৭৯৩ রান ও ৬৩ উইকেট পেয়েছেন সাকিব।

আইপিএলে সবচেয়ে বেশি দলে খেলেছেন মোস্তাফিজ
ফাইল ছবি

২০১২ আইপিএলে ছিলেন তামিম ইকবাল। নিলামে তাঁর ভিত্তিমূল্য ছিল ৫০ হাজার ডলার। নিলামের পর বদলি হিসেবে তাঁকে দলে টেনে এক ম্যাচেও খেলায়নি পুনে ওয়ারিয়র্স। পরের বছরও তাঁকে দলে টানে। কিন্তু সে বছরও খেলেননি তামিম। আইপিএলে গিয়েও কোনো ম্যাচ না খেলা একমাত্র বাংলাদেশি তামিম।

২০১৬ আইপিএলে বাংলাদেশ তাদের ষষ্ঠ আইপিএল তারকা পায়। আবির্ভাবে চমক জাগানো মোস্তাফিজুর রহমানকে কিনে নেয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। ৫০ লাখ রুপির ভিত্তিমূল্যের মোস্তাফিজকে নিয়ে আগ্রহ থাকলেও নিলামে খুব বেশি টানাটানি হয়নি তাঁকে নিয়ে। মাত্র ১ কোটি ৪০ লাখ রুপিতে হায়দরাবাদে যান মোস্তাফিজ। সেবারই আইপিএলের শিরোপার স্বাদ পেয়েছেন। ২০১৮ সালে তাঁকে ছেড়ে দেয় রাজস্থান, কিনে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। সেখানে ব্যর্থ হওয়ায় পরের দুই বছর আইপিএলে দেখা যায়নি তাঁকে।

গত আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসে খেলেছেন মোস্তাফিজ। এবার দল বদলে গেছে তাঁর, খেলবেন দিল্লি ক্যাপিটালসে। ৩৮ ম্যাচে ৩৮ উইকেট পাওয়া মোস্তাফিজই শুধু ২০২২ আইপিএলে বাংলাদেশের প্রতিনিধি।