আইপিএলের জন্য টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল পেছাল আইসিসি
আইসিসির টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল হওয়ার কথা ছিল আগামী ১০ জুন। টেস্টে দ্বিপক্ষীয় সিরিজের ফলের ওপর নির্ভর করে পাওয়া পয়েন্টের ভিত্তিতে সেরা দুই দলের ফাইনালের ভেন্যু হিসেবে লর্ডসকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। ভেন্যু বদল হয়নি, তবে বদল হয়েছে তারিখ। ফাইনালের দিন হিসেবে ১০ থেকে ১৪ জুন নয়, নতুন করে ১৮ থেকে ২২ জুনকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
করোনার কারণে প্রস্তাবিত অনেকগুলো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ আলোর মুখ দেখেনি। এমন অবস্থায় পূর্বনির্ধারিত সময়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল হবে কি না, এমন প্রশ্ন বহু আগেই জেগেছিল। তবে শীর্ষ দলগুলোর সবাই টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছে। তবু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ পিছিয়ে পড়ার কারণটি অবশ্য অনুমেয়—আইপিএল।
বরাবরই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সূচিতে প্রভাব ফেলেছে আইপিএল। আরও একবার ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগের জন্য আইসিসি তাদের সূচিতে বদল এনেছে। গত বছর করোনাভাইরাসের কারণে নির্ধারিত সময়ে আইপিএল হয়নি। করোনা বিরতি কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ফিরেছে আইপিএল।
এবার নির্ধারিত সময়েই আইপিএল আয়োজন করবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। আর সেটা মাথায় রেখেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের ক্ষণ পেছানো হচ্ছে।
গতবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হয়েছে আইপিএল। তবে ১৪ তম সংস্করণ দেশেই করতে চায় বিসিসিআই। এপ্রিল ও মে মাসের পুরোটা আইপিএলই কেড়ে নেবে। এমন অবস্থায় ফাইনালে ওঠা দুই দলকে গুছিয়ে ওঠার সময় দিতে চাইছে আইসিসি। এ কারণে বাড়তি আট দিন সময় বাড়িয়ে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ইংল্যান্ডে বর্তমানে করোনার যে পরিস্থিতি, তাতে সতর্ক থাকতে চাইছে আইসিসি। যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন ধরন বেশ ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। এমন অবস্থায় সফরকারী দলকে হয়তো ১৪ দিনের কঠিন আইসোলেশন বা কোয়ারেন্টিন কাটাতে হতে পারে।
ফাইনালের দিন পিছিয়ে নেওয়ায় ইংল্যান্ডের অবশ্য লাভ হচ্ছে। বর্তমানে পয়েন্টে চারে থাকা ইংল্যান্ড আগামী মাসেই ভারতে টেস্ট সিরিজ খেলবে। পয়েন্টের শতকরা হিসাবে তিনে থাকা অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে ০.৫ ব্যবধানে পিছিয়ে আছে ইংলিশরা। আর দুইয়ে থাকা নিউজিল্যান্ডের চেয়ে ১.৩ শতাংশ পেছনে ইংল্যান্ড। এমন অবস্থায় একে থাকা ভারতের মাটিতে যদি প্রয়োজনীয় পয়েন্ট আদায় করতে ব্যর্থ হনও, তবু জো রুটরা শেষ একটা সুযোগ পাবেন। জুনের প্রথম দুই সপ্তাহেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুটি টেস্ট খেলবে ইংল্যান্ড। নিজেদের পয়েন্ট বাড়ানোর সঙ্গে নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট খোয়ানোর এই সম্ভাবনা ইংল্যান্ডের সুযোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আপাতত ৪৩০ পয়েন্ট ও সম্ভাব্য পয়েন্টের ৭১.৭ শতাংশ অর্জন করে শীর্ষে আছে ভারত। ৪২০ পয়েন্ট ও ৭০ শতাংশ নিয়ে দুইয়ে আছে নিউজিল্যান্ড। ৩৩২ পয়েন্ট ও ৬৯.২ শতাংশ পয়েন্টের হার নিয়ে তিনে আছে অস্ট্রেলিয়া। পয়েন্টের দিক থেকে অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড (৪১২)। কিন্তু ম্যাচ বেশি খেলায় শতকরা হারে চারে আছে তারা (৬৮.৭%)।
অন্য দলগুলো পঞ্চাশ ভাগেরও কম পয়েন্ট পাওয়ায় ফাইনাল খেলার দৌড়ে এ চার দলই আছে। এখন পর্যন্ত ৩ ম্যাচ খেলে শূন্য পয়েন্টে সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ৭ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট ও ১১.১১ শতাংশ নিয়ে আটে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাওয়া সিরিজে উইন্ডিজকে ধবলধোলাই করতে পারলে শুধু গুরুত্বপূর্ণ ১২০ পয়েন্টই পাবে না বাংলাদেশ, নিশ্চিতভাবেই শ্রীলঙ্কা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টপকে যাবে টেস্ট চ্যাম্পিয়ন্সশিপে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান সিরিজে পাকিস্তান আশানুরূপ ফল না পেলে তারাও পিছিয়ে পড়বে বাংলাদেশের চেয়ে।