আইপিএলের জৈব সুরক্ষায় ‘ফুটো’ বের করছে ভারতের সংবাদমাধ্যম

আইপিএল এবার ধাক্কা খেয়েছে নানা জায়গা থেকেইফাইল ছবি

আইপিএল স্থগিত হওয়ার পর অভিযোগ উঠেছে জৈব সুরক্ষিত পরিবেশ লঙ্ঘিত হয়েছে। ভারতের সংবাদমাধ্যম নিউজলন্ড্রি জানিয়েছে, আইপিএল স্থগিত হওয়ার আগে দিল্লি পর্বে সম্ভবত জৈব সুরক্ষিত পরিবেশ লঙ্ঘিত হয়েছে। দিল্লি ও ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (ডিডিসিএ) এক অফিশিয়াল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অনুশীলনের জন্য স্থানীয় এক ক্লাব বুকিং দিয়েছিলেন। মুম্বাই ইন্ডিয়ানস, চেন্নাই সুপার কিংস, সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রাজস্থান রয়্যালস রোশানারা নামের সেই ক্লাবে অনুশীলনও করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো নিজেদের খাবার ও পানীয় সঙ্গে নিয়ে অনশীলন করেছে রোশানারা ক্লাবে। খাবার সরবরাহের জন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর নিজস্ব পরিচারকও ছিল। কিন্তু ক্লাবের স্টাফ, অফিশিয়াল ও তাদের আত্মীয়স্বজনকে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর অনুশীলন দেখতে দেওয়া হয়। অনুশীলনে মাঠ থেকে ফেরার পথে অনেকেই ভারতের তারকা ক্রিকেটারদের সঙ্গে সেলফি তুলেছেন। এনডিটিভি জানিয়েছে, অনুশীলনে খেলোয়াড়দের সঙ্গে থাকা ট্র্যাকিং ডিভাইসে কারিগরি ত্রুটি ছিল। চেন্নাই থেকে এগুলো কেনা হয়, যা প্রত্যাশিত মানের ছিল না। এ ছাড়া জৈব সুরক্ষিত পরিবেশ ভাঙার অন্যতম কারণ হলো খেলোয়াড়েরা বাইরের খাবারও অর্ডার করেছেন।

এর আগে গত শনিবার রাজস্থান রয়্যালস-সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ম্যাচে নকল অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড দেখিয়ে অরুন জেটলি স্টেডিয়ামে ঢুকেছিলেন দুজন। পরে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ কারণেও জৈব সুরক্ষিত পরিবেশের নিরাপত্তা ব্যাহত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত ৫ এপ্রিল থেকে আইপিএলে করোনার থাবা সুস্পষ্ট হতে শুরু করে। সম্প্রচারক দলে ১৪ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ হন। মুম্বাইয়ে তাঁরা ফোর সিজনস হোটেলে ছিলেন। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ১১ মাঠকর্মী পজিটিভ হন।

করোনা ধরে পড়েছে বরুণ চক্রবর্তীর।
ছবি: আইপিএল

খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর মতো মাঠকর্মীরা জৈব সুরক্ষিত পরিবেশে থাকার সুযোগ পাননি। এরপর ধীরে ধীরে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। কিরণ মোরে, অক্ষর প্যাটেল থেকে ড্যানিয়েল স্যামস, দেবদূত পাড়িক্কালরাও কোভিড পজিটিভ হন।

আইপিএলে জৈব সুরক্ষা নিয়ে এর আগেই প্রশ্ন তুলেছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। টুর্নামেন্টটি স্থগিত হওয়ার আগেই সুরক্ষাবলয় নিয়ে নিশ্চিত হতে না পেরে এবং ভারতের করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে ফিরতে যেন অসুবিধা না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে তড়িঘড়ি করে আইপিএল ছাড়েন জাম্পা। এরপর জানিয়েছেন, আইপিএলে যে জৈব সুরক্ষাবলয়, সেটি তাঁর কাছে নড়বড়ে মনে হয়েছে। পরে সমালোচনা শুরু হতেই একটু ঘুরিয়ে বলেছেন, দুবাইয়ে হওয়া আইপিএলের তুলনায় এবারের আইপিএলের বলয়টা তাঁর কাছে তেমন সুরক্ষিত মনে হয়নি।

জৈব সুরক্ষাবলয় নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। প্রতি দুই বা তিন দিনে একবার করোনা পরীক্ষার। কিছু ক্ষেত্রে তো প্রতিদিনই। সব কটি দলকে বলয়ের মধ্যে রাখা হতো। দলের কোনো খেলোয়াড় বা কোচকে বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। দলের সঙ্গে জড়িত সব কর্মী—কাপড় ধোয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও নিয়মিত পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতেন।