আইপিএলের মসনদ আপাতত দিল্লির

দারুণ জয়ে আইপিএলের শীর্ষে উঠে এল দিল্লি।ছবি: আইপিএল
১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস গুটিয়ে গেল ১৩৮ রানে। ৪৬ রানের জয়ে আইপিএলের শীর্ষে উঠে গেল দিল্লি

শারজা মানেই রানবন্যা। এই মাঠে দুই শর নিচে রান করা মানেই ব্যর্থতা। দিল্লি ক্যাপিটালস আজ সে ভুলটাই করল। দলের কোনো ব্যাটসম্যান বড় স্কোর করতে না পারায় দুই শ পেরোয়নি তাদের ইনিংস। ১৮৪ রানেই থেমে গিয়েছিল তারা।
শারজায় হওয়া আগের ম্যাচগুলোর চিত্রনাট্য মানলে এ ম্যাচে দিল্লির হার ছাড়া অন্য কোনো কিছু চিন্তা করা যাচ্ছিল না। কিন্তু এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত সেরা বোলিং পারফরম্যান্স দেখানো দিল্লি সেটা মানবে কেন। বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স শারজায় ছোট সীমানার মাঠেও ১৮৪ রানকে পাহাড়সম বানিয়ে দিল। তাড়া করতে নেমে রাজস্থান রয়্যালস গুটিয়ে গেল ১৩৮ রানে। ৪৬ রানের জয়ে আইপিএলের শীর্ষে উঠে গেল দিল্লি।

রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও আনরিখ নর্তিয়ে, দুজনেই করেছেন দারুণ বোলিং।
ছবি: আইপিএল

১৮৪ রান রক্ষা করতে নেমে দিল্লির বোলিং যে খুব পরিকল্পনামাফিক এগিয়েছে, তা নয়। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা কাগিসো রাবাদা আজ প্রথম স্পেলে ব্যর্থ। ২ ওভারে ২৪ রান দিয়েছেন। এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিপক্ষের লাইনআপে কোনো ক্ষত সৃষ্টি করতে পারেননি। তবু রাজস্থানে পাওয়ার প্লেতে রানের ফোয়ারা ছোটাতে পারেনি। কারণ, রাবাদার পারফরম্যান্স ঢেকে দিয়েছেন তাঁর স্বদেশি আনরিখ নর্তিয়ে। তাঁর গতির সামনে অস্বস্তিতে ছিলেন যশস্বী জয়সওয়াল ও জস বাটলার। রবিচন্দ্রন অশ্বিন এসে বাটলারকে তুলে নিয়েও দিল্লির কাজটা সহজ করেছেন।

দিল্লির ইনিংসকে গতি পেতে দেননি অশ্বিন ও নর্তিয়ে। দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৫ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন স্টিভ স্মিথকে। ওদিকে অশ্বিন ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে নিয়েছেন দুই উইকেট। অবশেষে আইপিএলে রানের দেখা পেলেও জয়সওয়ালের ইনিংসটি ছিল ওয়ানডে গতির। ৩৪ রান করতে ৩৫ বল খেলা জয়সওয়াল শেষ ৮ ওভারে সেটা পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়তো করতে পারতেন। কিন্তু ১৩তম ওভারের প্রথম বলেই তাঁকে ফিরিয়েছেন স্টয়নিস। ১৫তম ওভারে এক শ রান তুলতেই ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলে রাজস্থান।

কাগিসো রাবাদার উচ্ছ্বাস সতীর্থের সঙ্গে।
ছবি: আইপিএল

উইকেটে একা ছিলে রাহুল তেওয়াতিয়া। কদিন আগে এই শারজাতেই এক ওভারে পাঁচ ছক্কা মেরে বিখ্যাত হয়ে গিয়েছিলেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার। আজও এমন কিছুর আশাই হয়তো করছিল রাজস্থান। তেওয়াতিয়া চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অন্য প্রান্তে সতীর্থদের ড্রেসিংরুমগামী মিছিল থামছিল না কোনোভাবেই।
শেষ ওভারে ৪৯ রান দরকার ছিল রাজস্থানের। কল্পনার জগতে আশ্রয় নিয়ে যদি জয়ের স্বপ্ন দেখেও থাকে দলটি সেটি প্রথম বলেই শেষ হয়েছে। তেওয়াতিয়ার স্টাম্প উপড়ে নিয়েছেন রাবাদা। ২৯ বলে ৩৮ রানেই থেমেছেন তেওয়াতিয়া। ২ বল বাকি থাকতে আনুষ্ঠানিকতাও শেষ করেছেন রাবাদা।

এর আগে দিল্লির ইনিংসটা ছিল অতৃপ্তিতে মোড়ানো। টপ অর্ডারে দুজন ব্যাটসম্যান শুরু করেও টানতে পারেননি ইনিংস। তিন ও চারের ব্যাটসম্যান ফিরেছেন রান আউট হয়ে। তবু যে দিল্লি ২০০ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখেছিল সেটা শিমরন হেটমায়ারের সুবাদে। এই উইন্ডিজ ব্যাটসম্যান ছয়ে নেমে ৪৫ রান করেছেন। ২৪ বলের ইনিংসে ছিল ১ চার ও ৫ ছক্কা। ১৭তম ওভারে ১৫০ ছোঁয়ার আগে তাঁর ফিরে যাওয়া শেষ দিকে পর্যাপ্ত রান পাওয়া থেকে বঞ্চিত করেছে দিল্লিকে।

তাঁর চেয়ে একটি করে চার ও ছক্কা কম মেরেছেন মার্কাস স্টয়নিস। রান তোলার গতিতেও হেটমায়ারের চেয়ে বেশ পিছিয়ে। তবু তাঁর ৩০ বলে ৩৯ রানের ইনিংসটাই হেটমায়ারের জন্য ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিল। রাজস্থানের জফরা আর্চার ২৪ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট।