আগে করোনাকে হারাতে হবে

ভয়–আতঙ্ক, দুঃখ–বেদনার ২০২০ সাল শেষ। নতুন দিনের স্বপ্ন নিয়ে আজ উঠেছে নতুন সূর্য। ২০২০ যদি হয় পৃথিবীকে থমকে দেওয়ার বছর, ২০২১ সাল হবে নতুন সম্ভাবনার। করোনাকে হারাতে সারা বিশ্ব যেমন তাকিয়ে টিকার দিকে, ক্রীড়াঙ্গনও অপেক্ষায় স্বাভাবিক পরিবেশের। খেলা ফিরবে মাঠে, গ্যালারিতে ফিরবে দর্শকদের উন্মাদনা। ২০২১ সালে নিজেদের প্রত্যাশা নিয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের তারকারা

মাশরাফি বিন মুর্তজা

সারা বিশ্বের মানুষই একটা চরম দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। করোনার বছর ২০২০ সাল আমাদের তেমন কিছু তো দেয়ইনি, উল্টো কেড়ে নিয়েছে অনেক বেশি। নতুন বছরে সবার আগে প্রত্যাশা, আমরা এই মহামারি থেকে উদ্ধার পাব। দুঃসময় থেকে বের হয়ে আসবে মানুষ। বাংলাদেশসহ সারা পৃথিবীতেই শান্তি ফিরে আসবে। সবাই তার কাজে, তার জায়গায় আগের মতো ফিরে যাবে।

আমি যেহেতু খেলার মানুষ, খেলোয়াড়দের কথাই আগে বলি। নতুন বছরে প্রত্যাশার কথা যদি বলেন, আমি চাই মাঠ ও মাঠের বাইরে সবাই স্বস্তিতে থাকুক। শান্তির জীবন কাটাক। খেলোয়াড়েরা সুস্থ থাকবে, চোটমুক্ত থাকবে। আমাদের সবারই আশা, এ বছর মাঠের খেলা আবার আগের অবস্থায় ফিরে যাবে। বাংলাদেশ দল ফিরবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আমার বিশ্বাস, করোনার ক্রান্তিকাল কাটিয়ে মাঠে বাংলাদেশের ক্রিকেট আগের মতোই সামনে এগিয়ে যাবে, বরং আগের চেয়ে ভালো করবে।

২০২০ সালে তো প্রায় কোনো খেলাই হয়নি। অনুশীলন, ফিটনেসের কাজ এসবও হয়েছে ঘরবন্দী থেকে। আর সবার মতো খেলোয়াড়দেরও সময় কেটেছে ভয়-আতঙ্কে। নতুন বছরে সবার আগে আশা, ২০২১ সালে আমরা সেই আতঙ্ক থেকে মুক্তি পাব। বাংলাদেশের ক্রিকেট আবার উন্নতির সিঁড়িতে হাঁটবে। দর্শকেরা আগের মতো মাঠে গিয়ে খেলা উপভোগ করবে। নাচবে, উল্লাস করবে।

এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে। সম্প্রতি হওয়া ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ দেখে আমি আশাবাদী, বিশ্বকাপে আমরা ভালো একটি দল পাব। অনেক প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ ক্রিকেটার আছে এখন। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, ক্রিকেটে এ বছর নতুন তারকা পাবে বাংলাদেশ। আর অভিজ্ঞরা তো আছেই। তারুণ্য আর অভিজ্ঞতা মিলিয়েই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আমরা ভালো একটি দল দাঁড় করাতে পারব, ইনশা আল্লাহ। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ভালো কিছু করবে, এটাই আমার আশা।

২০২০ সালে বাংলাদেশ দলের সব মিলিয়ে ১০টি টেস্ট খেলার কথা ছিল। এক বছরে এটাই হতো আমাদের সর্বোচ্চ টেস্ট। কিন্তু দুর্ভাগ্য, করোনার কারণে মাত্র দুটো টেস্ট খেলার পর আর খেলাই হলো না। তবে আশার কথা, নতুন বছরেও আমাদের দলের সামনে ১০টি টেস্ট খেলার সুযোগ আছে। টেস্ট ক্রিকেটে অনেক ভালো কিছু করার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। আমার পক্ষ থেকে বাংলাদেশ দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়ের প্রতি শুভকামনা থাকল। আশা করছি টেস্ট ক্রিকেটেও আমরা এ বছর আনন্দ-উল্লাসের উপলক্ষ পাব।

তবে সবার আগে আমাদের সবার লড়াইটাই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে। আগে করোনাকে হারাতে হবে, তারপর অন্য জয়। ভয়, আতঙ্ক আর শোকের একটি বছর কাটানোর পর আমরা সবাই এখন আশায় আছি করোনার টিকা আসবে। আমার বিশ্বাস, এই টিকা নিয়ে আমরা সবাই আবার নিরাপদ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব। ২০২১ সাল হবে করোনা থেকে মুক্তির বছর। প্রতিটি শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য আমার পক্ষ থেকে সেই শুভকামনা।