আবারও ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়েই শেষ তামিম

ভালো শুরু করেছিলেন তামিম।
ছবি: টুইটার

পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে কালও ঝড়ের আভাস দিয়েছিল তাঁর ব্যাট। ২ চার ও ১ ছক্কায় ১০ বলে ১৮ করেই আউট হয়ে গেছেন। তামিম ইকবালের ব্যাটে ঝড়ের আভাস ছিল আজও। কিন্তু আভাসেই সার!

শহীদ আফ্রিদির মুলতান সুলতানসের বিপক্ষে আজ ২০ বলে ৩০ রান করে আউট হয়ে গেছেন বাংলাদেশ ওপেনার। যে দল জিতবে, তারাই ফাইনালে—এমন সমীকরণের ম্যাচে এই প্রতিবেদন লেখার সময় তামিমের দল লাহোর কালান্দার্সের রান ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৮২। ডেভিড ভিসের ২১ বলে ৪৮ রান শেষ ৯ ওভারে ১০০ রান এনে দিয়েছে কালান্দার্সকে।

ফখরের সঙ্গে ভালো শুরু এনে দিয়েছিলেন তামিম।
ছবি: টুইটার

টস জিতে আগে ফিল্ডিং নেয় মুলতান। করাচিতে তাই প্রথম ইনিংসেই নামার সুযোগ হয় তামিমের, নড়েচড়ে বসেন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা। কাল তামিম যখন নেমেছিলেন, অনেকের পক্ষেই হয়তো খেলাটা দেখা আর সম্ভব ছিল না। আজ বুঝি সুযোগ হলো!

কিন্তু বেশিক্ষণ ব্যাটিং দেখার সুযোগ আর হলো কই! শুরুতে একটু নড়বড়ে মনে হলেও এরপর যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন, তামিমের ব্যাটে আগ্রাসন ছিল। কিন্তু সেটি পূর্ণতা পাওয়ার আগেই শেষ!

তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে আরেক বাঁহাতি ব্যাটসম্যান—পাকিস্তানের ফখর জামান, সে কারণেই কিনা বোলিংয়ের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান অফ স্পিনার অ্যাডাম লিথকে নিয়ে আসেন মুলতান অধিনায়ক শান মাসুদ। প্রথম বলে স্ট্রাইকে তামিম।

প্রথম বলে কোনো রান নেই, দ্বিতীয় বলে ব্যাটে-বলে ঠিকমতো না হলেও মিড অনে ঠেলে ১ রান তামিমের। বলটা আবার নো–বলও ছিল। চতুর্থ বলে আবার স্ট্রাইক পেয়ে মিড উইকেটে মেরে ২ রান নিলেন তামিম। পরের বলে রান হলো না। এরপর ওভারের শেষ বলেই তামিমের আউটের শঙ্কা জেগেছিল! আবারও মিসহিট, কিন্তু আউট না হয়ে এবার চার!

এগিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন তামিম, কিন্তু ব্যাটের নিচের দিকে কোনায় লেগে বল উঠে যায় ওপরে। তবে মিড অফের ওপর দিয়ে গিয়ে বল যতক্ষণে সীমানার কাছে পড়ল, মিড অফ থেকে দৌড়ে যাওয়া ফিল্ডার আর ক্যাচ ধরতে পারলেন না। চারও ঠেকাতে চেষ্টা করেছিলেন, তা-ও পারলেন না! প্রথম ওভার শেষে লাহোরের রান ৯, তামিমের রান ৫ বলে ৭।

পরের ওভারে পাকিস্তানি বাঁহাতি পেসার সোহেল তানভীরকে মুখোমুখি প্রথম বৈধ বলেই আবার চার তামিমের! এবার অবশ্য শটটা সুন্দর ছিল, কিন্তু এবারও ক্যাচের শঙ্কা জেগেছিল। কিন্তু হাঁটু গেড়ে বসে তামিমের কাভার ড্রাইভ ৩০ গজে থাকা ফিল্ডারের মাথার একটু ওপর দিয়ে উড়ে বেরিয়ে যায়। চার! পরের বলে আবার ২ রান নেন তামিম।

তামিমের আগ্রাসী শট।
ছবি: টুইটার

দ্বিতীয় ওভার শেষে লাহোরের রান ১৮, তামিমের ৮ বলে ১৩। ঝড় শুরু হবে হবে আভাস! মোহাম্মদ ইলিয়াসের করা তৃতীয় ওভারে ঝড়ের আগমনী গান আরও জোরেশোরে শোনা গেল। ওভারের প্রথম দুই বলে রান নিতে পারেননি, সেটি তামিম পুষিয়ে দেন পরের দুই বলে। পয়েন্টের ওপর দিয়ে পরপর দুই চার! ওই ওভারের সব কটি বল খেলে তামিম নিলেন ৯ রান, ১৪ বলে তাঁর রান হলো ২২।

ওভারের শেষ বলে ১ রান নিয়ে আবার স্ট্রাইক ধরে রাখেন তামিম। চতুর্থ ওভারে সোহেল তানভীরকে পেয়ে আবার প্রথম বলে চার! দুর্দান্ত শট! বলটা ভালোই করেছিলেন তানভীর, কিন্তু একটু সরে এসে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ফ্লিক করে দেন তামিম। সেখানে কোনো ফিল্ডার ছিল না! ওই ওভারে তামিমের সঙ্গী ফখর জামানও আগ্রাসনে যোগ দেন, এক চার ও এক ছক্কা মেরে বসেন। ওভারে রান আসে ১৫, লাহোরের রান ৪ ওভারে ৪২, তামিমের ১৬ বলে ২৭!

লাহোর তখন বড় জুটির অপেক্ষায়। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী দর্শক অপেক্ষায় তামিমের ব্যাটে ঝড় দেখার। কিন্তু পরের ওভারেই অপেক্ষার অকস্মাৎ অবসান! জুনায়েদ খানের ওভারের প্রথম বলে রান নিতে পারেননি তামিম, পরের দুই বলে নেন ২ ও ১ রান। পঞ্চম বলে আবার স্ট্রাইক পান। তামিমের ইনিংসের শেষ বল হয়ে থাকে সেটি।

স্কয়ারের পেছনে ফাঁকা দেখে সেখানে পুল করতে চেয়েছিলেন তামিম, কিন্তু সময়ের হিসাবে গড়বড়ে ব্যাটে-বলে হয়নি। ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায় ওপরে। খুশদিল শাহের সহজ ক্যাচে শেষ হয় তামিমের ৫ চারে সাজানো রোমাঞ্চকর ইনিংস।