আবু জায়েদকে ধানখেতে দৌড়াতে বলেছেন শামি

আবু জায়েদ ৫০-এর বেশি টেস্ট খেলতে চান। ছবি: প্রথম আলো
আবু জায়েদ ৫০-এর বেশি টেস্ট খেলতে চান। ছবি: প্রথম আলো

রাওয়ালপিন্ডি টেস্টে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর আবিদ আলী করুণ কণ্ঠে আবু জায়েদকে বলছিলেন, ‘আমাকে এভাবে আউট করে দিলে? রেকর্ডটা যে হাতছাড়া হলো আমার!’ রেকর্ড থেকে অনেক দূরেই ছিলেন পাকিস্তানি ওপেনার। যদি রাওয়ালপিন্ডি টেস্টেও সেঞ্চুরি করতে পারতেন, দুর্দান্ত এক রেকর্ড গড়ে বসতে পারতেন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের পাশে—ক্যারিয়ারের প্রথম টানা টেস্টে সেঞ্চুরি! আবিদ সেটা পারেননি।

আবিদকে বলা জায়েদের উত্তরটাও কম মজার নয়, ‘মন খারাপ কোরো না। কদিন আগে রোহিত শর্মার টানা সেঞ্চুরি ঠেকিয়েছি!’ গত বছরের অক্টোবরে রোহিত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চার ইনিংসে করেছিলেন তিন সেঞ্চুরি। ইন্দোরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতীয় ওপেনার আউট হয়েছিলেন ৬ রানে। রোহিতকে ফিরিয়েছিলেন আবু জায়েদই। রোহিত-আবিদ শুধু নন, শুরুতেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেওয়াটা গত এক বছরে অভ্যাসেই পরিণত করেছেন ২৬ বছর বয়সী পেসার। গত এক বছর টেস্টে বাংলাদেশের বিবর্ণ বোলিংয়ে তিনিই কিছুটা উজ্জ্বল। ৫ টেস্টে ১২ উইকেট নিয়ে তিনি দলের সেরা বোলার। তবে এখনো নিজেকে দলের পেস বোলিংয়ের নেতা ভাবতে রাজি নন আবু জায়েদ। তাঁর লক্ষ্য শুধু ৫০-এর বেশি টেস্ট খেলা, ‘ওই অনুভূতিটা এখনো আসেনি। অনেক টেস্ট খেলতে চাই। এখন পর্যন্ত ৮টা টেস্ট খেলেছি। অন্তত ৫০ থেকে ৭৫টা টেস্ট খেলতে চাই।’

টেস্ট ক্রিকেটে দুই বছর কাটিয়ে দেওয়া আবু জায়েদ মনে করেন, এখনো তিনি এই সংস্করণে ‘নবিশ’। যেখানেই খেলার সুযোগ পান, শিখতে চান নতুন কিছু। কদিন আগে ভারত সফরে যেমন তিনি পরামর্শ নিয়েছেন মোহাম্মদ শামির কাছ থেকে। ভারতীয় ফাস্ট বোলার কী বলেছেন, সেটি আজ সাংবাদিকদের কাছে খুলে বললেন আবু জায়েদ, ‘গত বছর শামির সঙ্গে কথা হয়েছিল। সে বলেছে, খেত চেন? বলেছে, খেতে দৌড়াও। এতে শরীর ফিট হবে এবং জোরে বোলিংও করতে পারবে।’

ধারাবাহিক ভালো বোলিং করলেও বিদেশের মাঠে খেলা টেস্টের বেশির ভাগেই এক ইনিংসের বেশি বোলিংয়ের সুযোগ পাননি আবু জায়েদ। সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় অবশ্য হতাশ হচ্ছেন না তিনি, ‘তখন আমাদের মনে হয় আরও কম রানে যদি প্রতিপক্ষকে অলআউট করতে পারতাম! তাহলে ভালো হতো। ইন্দোরে যদি ওই ক্যাচটা ধরা যেত (৩২ রানে জীবন পেয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল), তাহলে হয়তো কম রানে ওদের অলআউট করতে পারতাম।’

বিদেশে তবুও পেসারদের কিছু করার সুযোগ থাকে। দেশের মাঠে খেলা হলে তাঁরা বেশির ভাগ সময়ে উপেক্ষিত। ঘূর্ণি উইকেট বানানো হয় বলে পেসারদের জন্য বিদেশের চেয়ে দেশের কন্ডিশন হয়ে যায় বেশি কঠিন। আবু জায়েদ এটিকে দেখেন ইতিবাচকভাবেই, ‘দলের জন্য কী করতে হবে, সেটা জানাটাই আসল। দুই পেসার খেলবে নাকি এক পেসার, তা এখনো জানি না। বিসিএল বা জাতীয় লিগে স্পিনাররা বেশি রান দিলে পেসারদের কাজ হয় রান কম দেওয়া। এতে স্পিনাররা পরে এসে উইকেট নিতে পারে। দলের জন্য যেটা কাজে লাগবে, সেটা করাই আসল মোটিভেশন।’

আবু জায়েদ দেখা যাচ্ছে মুগ্ধতা ছড়াতে পারেন কথাতেও।