আবুধাবির গরম ঠেকাতে কী করবে পিএসএলের দলগুলো?

পিএসএলের বাকি অংশ জুন মাসে হবে আবুধাবিতে।
ফাইল ছবি

প্রচণ্ড গরমে কেমন হাঁসফাঁস অবস্থা হতে পারে, তা দিন কয়েক আগে খুব ভালো করেই টের পেয়েছে বাংলাদেশের মানুষ। এত গরম, তবে তাপমাত্রা কিন্তু ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠেনি। এবার একবার ভেবে দেখুন, ধু ধু মরুভূমিতে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় যদি ক্রিকেট খেলতে হয়, কেমন হাঁসফাঁস লাগবে ক্রিকেটারদের!

প্রশ্নটা উঠছে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ঘিরে। করোনা সংক্রমণের কারণে গত মার্চে স্থগিত করা হয়েছিল পিএসএল। পাকিস্তানের ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের বাকি অংশ আগামী জুনে আবুধাবিতে আয়োজন করবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। বিভিন্ন দেশের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ, ভারতের ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আইপিএলের বাকি অংশ আর টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কারণে জুন মাস ছাড়া আর সময় বের করতে পারেনি পিসিবি।

করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় গত মার্চে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল এ বছরের পিএসএল।
ফাইল ছবি

কিন্তু বছরের এই সময়ে মরুর শহর আবুধাবিতে থাকে প্রচণ্ড গরম। এ কারণেই এখন পর্যন্ত বড় কোনো ক্রীড়া আসর জুন–জুলাইয়ে আয়োজন করেনি তারা। তাহলে এমন গরমে পিএসএলে কীভাবে খেলবেন ক্রিকেটাররা। হিট স্ট্রোক, পেশিতে টান পড়াসহ নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেন তাঁরা। সেসব ঠেকাতে বেশ কিছু ব্যবস্থা হাতে নিয়েছে পিএসএলের দলগুলো।

এমনিতে মরুভূমিতে দিনের বেলায় তাপমাত্রা বেশি থাকে। রাতের দিকে তাপমাত্রা কমে পরিবেশ শীতল হতে শুরু করে। তাই বেশির ভাগ খেলাই রাতে আয়োজন করা হবে। দিবারাত্রির ম্যাচগুলোও শুরু করা হবে স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটায়। কিন্তু রাতের বেলায় আবার আরেক সমস্যা আছে—আর্দ্রতা যায় বেড়ে। জুলাই মাসে রাতের বেলায় আবুধাবির আর্দ্রতা ৫০ থেকে ৬৫ শতাংশ থাকে। পিএসএলের দলগুলো অবশ্য এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে। নারকেলের পানি, আইস কলার...নানা ধরনের ব্যবস্থা করে রাখছে দলগুলো।

আবুধাবিতে পিএসএলের বাকি অংশে খেলতে পারছেন না শহীদ আফ্রিদি।
ফাইল ছবি

পিএসএলের দল পেশোয়ার জালমির প্রধান কোচ মোহাম্মদ আকরাম ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বলেছেন, ‘(আবুধাবিতে) এই সময়ে খেলাটা কঠিন। কিন্তু অসম্ভব নয়। এই কন্ডিশনের সঙ্গে কীভাবে মানিয়ে নেওয়া যায়, আমরা সবাই মিলে সেই পরিকল্পনা করছি। বিশেষ করে ফাস্ট বোলারদের জন্য।’

পরিকল্পনার মধ্যে কী কী আছে, তা-ও বলেছেন পাকিস্তানের সাবেক পেসার আকরাম, ‘শরীরের তাপমাত্রা ঠিক রাখতে আমরা যত বেশি সম্ভব নারকেলের পানি ব্যবহার করার পরিকল্পনা নিয়েছি। যাতে ছেলেদের পানিশূন্যতা না হয়, পেশিতে টান পড়ার ঝুঁকিও কমবে। বেশির ভাগ ম্যাচই যেহেতু রাতে হবে, তাই আমরা হিট স্ট্রোকের ভয় পাচ্ছি না।’

হিট স্ট্রোক না হলেও আরেকটা লড়াই যে ক্রিকেটারদের করতে হবে, সে বিষয়ও সবাইকে মনে করিয়ে দিয়েছেন আকরাম, ‘আর্দ্রতার সঙ্গে লড়াই করার বিষয়টি নিয়ে আমাদের বেশি করে ভাবতে হবে। নারকেলের পানি ব্যবহার আমাদের শরীর থেকে ইলেকট্রোলাইটস হারানোর ঝুঁকি কমাবে।’ আয়োজকদের জন্যও একটি পরামর্শ রেখেছেন আকরাম, ‘আমি নিশ্চিত নই ইনিংসের মধ্যে দুই বা তিনটি বাড়তি বিরতি দেওয়া যাবে কি না। কিন্তু আমরা সীমানার কাছে নারকেলের পানি সরবরাহ করব। বিশেষ করে বোলারদের জন্য।’

পিএসএলের বাকি অংশের জন্য মুলতান সুলতানস দলে টেনেছে শিমরন হেটমায়ারকে।
ফাইল ছবি: সিপিএল

পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার ও কোচ আকিব জাভেদের সংযুক্ত আরব আমিরাতে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ২০১২ থেকে ২০১৬—এ চার বছর পাকিস্তানের কোচের দায়িত্ব পালন করা আকিব খুব ভালো করেই জানেন প্রচণ্ড এই গরম খেলোয়াড়দের শরীরে কী রকম প্রভাব ফেলতে পারে। ইএসপিএনক্রিকইনফোকে তিনি বলেছেন, ‘জুনে (আবুধাবির) রাতগুলো দিনের মতো অতটা গরম নয়। তাপমাত্র কমে যায় আর সমুদ্রের বাতাস আপনাকে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে।’

পাকিস্তানের খেলোয়াড়েরা যে এমন কন্ডিশনের সঙ্গে অভ্যস্ত, সেটাও বলেছেন আকিব, ‘পাকিস্তানের ছেলেরা চ্যালেঞ্জিং কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে পারে। একমাত্র ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে দিনের প্রথম ইনিংস। প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে (স্থানীয় সময়) বিকেল পাঁচটায়। কিন্তু সূর্যাস্ত হয়ে গেলে খেলোয়াড়েরা মানিয়ে নিতে পারবে।’
পিএসএলের বাকি অংশ শুরু হওয়ার কথা ৫ জুন। সেই হিসাবে ফাইনাল হবে ২০ জুন।