দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতির একটা বিরাট অংশজুড়ে ছিল ফাস্ট বোলিং। কিন্তু ডারবান কিংবা পোর্ট এলিজাবেথ—স্বাগতিকদের স্পিনেই সর্বনাশ বাংলাদেশের। সাইমন হারমার ও কেশব মহারাজ জুটি প্রথম টেস্টে বাংলাদেশের ১৪ উইকেট তুলে নেওয়ার পর পোর্ট এলিজাবেথেও তাদের শিকার ১৫ উইকেট। দুই টেস্টেরই চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশের সব কটি উইকেট নিয়েছেন এই প্রোটিয়া স্পিন-জুটি।
অথচ উপমহাদেশের দল হিসেবে বাংলাদেশ স্পিনটা অন্তত ভালো খেলবে—প্রত্যাশাটা থাকে এমনই। কিন্তু বাস্তবতা অন্য কথাই বলছে। সাম্প্রতিককালে দেখা যাচ্ছে প্রতিপক্ষের স্পিনাররাই শেষ করে দিচ্ছেন বাংলাদেশকে। দক্ষিণ আফ্রিকায় মহারাজ আর হারমারকে বাংলাদেশ কেমন খেলল, সেটি তো দেখাই গেল, গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানের সাজিদ খান কিংবা তারও আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রাকিম কর্নওয়াল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের রীতিমতো ভুগিয়েছেন।
স্পিনের বিপক্ষে বাংলাদেশ দলের ব্যাটসম্যানের ধারাবাহিক ব্যর্থতার একেক সময় একেক কারণ দেখিয়েছেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের পরও মুমিনুল একই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়েছেন। এবার অবশ্য কোনো রাখঢাক না রেখেই মুমিনুল বলেন, ‘এটা আগে থেকে সবাই জানে। আমরা স্পিনে খুব বেশি ভালো খেলি না। এটা শুনতে হয়তো খারাপ লাগতে পারে। কিন্তু দুই-একজন ছাড়া আমরা খুব ভালো স্পিন খেলি না।’
কথাগুলো বলার পর মুমিনুলের অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে কয়েক মুহূর্তের জন্য নীরবতা নামে। বাংলাদেশ স্পিনে দুর্বল—এই বাস্তবতাটা যেন কেউই মানতে চাইছিল না। নীরবতা ভাঙে মুমিনুলেরই কথায়, ‘ভালো খেলে হয়তো। কিন্তু কোন দিক দিয়ে খেলতে হবে, সেটা হয়তো আমরা বুঝি না। এসব জায়গায় আমাদের অনেক উন্নতি করতে হবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে স্পিনে ব্যর্থ হওয়ার আরেকটি কারণও জানালেন মুমিনুল। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে যে উইকেট সেই তুলনায় এখানকার উইকেট কিন্তু ভিন্ন। বিশেষ করে উপমহাদেশের উইকেট। উপমহাদেশে বা আমাদের দেশে সাইড স্পিনটা বেশি কার্যকরী। কিন্তু এসব জায়গায় সাইড স্পিন কাজে আসে না। ওভার স্পিন বেশি কার্যকরী। আমাদের বোলাররা সাইড স্পিন বল করে, ব্যাটসম্যানরা সাইড স্পিন খেলে অভ্যস্ত। এখানে এসে দুই দিনেই সবাই ওভার স্পিনে ভালো করবে…সেটা করতে গেলে অনেক কৌশলগত পরিবর্তন করতে হয়, যেটা করতে গেলে আগের কৌশলে সমস্যা হতে পারে। এই কারণে হতে পারে।’