আমিনুলের হাতে ফাওয়াদের ‘জুরা’

বোলিংয়ে নতুন অস্ত্র যোগ করতে যাচ্ছেন আমিনুল।ছবি: প্রথম আলো

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মানেই নতুন কিছু কর। বোলার বলুন, ব্যাটসম্যান বলুন, প্রতিনিয়ত যোগ করতে হয় নতুন অস্ত্র। তরুণ লেগ স্পিনার আমিনুল ইসলাম সে মন্ত্র পড়ে ফেলেছেন এর মধ্যেই। স্টক ডেলিভারি লেগ স্পিন ও গুগলি, দুটোই আছে তাঁর। এখন নিজের বোলিংয়ে যোগ করতে চাইছেন নতুন অস্ত্র।

দেশের হয়ে আমিনুল এখন পর্যন্ত সাতটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন। খারাপ ম্যাচ যায়নি একটিও। আবার কিছু ম্যাচে খুব বিষাক্তও মনে হয়নি তাঁর বোলিং। সে জন্যই হয়তো নিজের অস্ত্রাগারে নতুন হাতিয়ার যোগ করার চেষ্টা এই লেগ স্পিনারের। সাদা বলের ক্রিকেটে সাফল্য পেতে হলে ব্যাটসম্যানদের মনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে হয়। ব্যাটসম্যানদের যিনি যত বেশি বিভ্রান্ত করতে পারেন, তিনি তত বেশি সফল।

অস্ট্রেলীয় লেগ স্পিনার ফাওয়াদ আহমেদের ‘জুরা’ নামের ডেলিভারিটি রপ্ত করছেন আমিনুল। ইউটিউবে ফাওয়াদের ভিডিও দেখার পরই নতুন বল নিয়ে তাঁর সাধনার শুরু, ‘ফাওয়াদের বলটা অনেকটা স্লাইডারের মতো। তবে তিনি একটু অন্যভাবে এটা করেন। বলটার নাম দিয়েছেন জুরা বল। সেটা নিয়েই কাজ করছি।’

সাধারণ লেগ স্পিনের গ্রিপেই বলটা করে থাকেন ফাওয়াদ। কিন্তু লেগ স্পিনে যেমন সাইড স্পিন ও ওভার স্পিন দরকার, জুরা বল করতে দরকার আন্ডার স্পিন। লেগ স্পিনের গ্রিপ থেকে বলটি না ঘুরিয়ে আঙুল সরাসরি ঠেলে দিলেই হলো। ব্যাটসম্যান লেগ স্পিন ভেবে খেলার চেষ্টা করবেন, কিন্তু বলটা যাবে সোজা। এলবিডব্লু ও বোল্ডের সুযোগ বাড়ে এ ডেলিভারিতে। আমিনুলের কুইক আর্ম অ্যাকশনে জুরা হতে পারে খুবই কার্যকর।

স্লাইডার একটু অন্যভাবে করেন ফাওয়াদ। জুরা বল নামের সেটা নিয়েই কাজ করছি
অনুশীলনে স্টক ডেলেভারিটাও ঝালিয়ে নিচ্ছেন আমিনুল।
ছবি: প্রথম আলো

তবে নতুন ডেলিভারিটি এখনই ম্যাচে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত নন আমিনুল। অনুশীলন থেকে প্রস্তুতি ম্যাচ, এরপর ঘরোয়া ক্রিকেটে অভ্যস্ত হয়ে তবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে চমক দেখানোর ইচ্ছা ২০ বছর বয়সী লেগ স্পিনারের, ‘আমি নিজের বোলিংয়ে রোমাঞ্চ আনতে পছন্দ করি। অনেক ক্রিকেটারের কথা শুনেছি, যারা অনেক বছর সাধনা করে নতুন কিছু নিয়ে। পাঁচ-ছয় বছর পর ম্যাচে সেই জিনিস কাজে লাগায়। আমিও সেই চেষ্টা করছি।’

ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরু থেকে আমিনুলকে দেখছেন বিসিবির কোচ ওয়াহিদুল গণি। নতুন ডেলিভারি যোগ করার বিষয়টি তাঁকে খুব অবাক করল না। ক্রিকেটার হিসেবে আমিনুলের মনের জোর বেশি, এই গুণের সঙ্গে সবচেয়ে পরিচিত যে এই প্রবীণ কোচই! তবে ছাত্রকে নিজের স্টক ডেলিভারি ধরে রেখে তবেই বৈচিত্র্যে মন দিতে বলেছেন তিনি, ‘টি-টোয়েন্টিতে বৈচিত্র্য লাগে। তবে স্টক ডেলিভারিটা গুরুত্বপূর্ণ। লেগ স্পিন ঠিক থাকলে তবেই বৈচিত্র্য কাজে আসবে। না হলে টিকে থাকা মুশকিল হবে।’

টি-টোয়েন্টি নিয়েই সন্তুষ্ট না থেকে আমিনুলকে বড় স্বপ্ন দেখতে বললেন ওয়াহিদুল গণি। ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটের জন্য নিজেকে এখন থেকেই তৈরি করতে বলেছেন কোচ, ‘শুধু টি-টোয়েন্টি খেলে সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। সব সংস্করণে খেলার চেষ্টা করতে হবে। সেভাবেই নিজের বোলিং ঝালাই করতে হবে।’