আমির জানালেন কীভাবে পাকিস্তানকে শিরোপা এনে দিয়েছিলেন

সেদিন ভারতকে ম্যাচ থেকে এই মুহূর্তেই ছিটকে দিয়েছিলেন আমির।
ফাইল ছবি: এএফপি

সেদিন আমিরের হাত দিয়ে যেন আগুন ঝরছিল। আর সে আগুনের উত্তাপটা বেশ টের পেয়েছিলেন ভারতের ব্যাটসম্যানরা।

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারত-পাকিস্তান মহারণের কথা কার না জানা! সে ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে বেশ বড়সড় রান তোলে পাকিস্তান। ৩৩৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ আমির আর হাসান আলির তোপে ভারত অলআউট হয় ১৫৮ রানে। ভারতের টপঅর্ডারের তিন তারকাকে আউট করে সবচেয়ে বড় আঘাতটা হেনেছিলেন আমিরই। এত দিনে জানালেন, সেদিন কোহলি-রোহিতদের আউট করার পেছনে কী পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছিলেন!

২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছিল পাকিস্তান।
ফাইল ছবি: রয়টার্স

কামরান আকমলের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় সদ্য অবসর নেওয়া এই তারকা জানিয়েছেন, তিন ব্যাটসম্যানকে আউট করার আশাতেই মাঠে নেমেছিলেন ওই দিন, ‘হাতে যখন বলটা পেলাম, প্রথমেই মনে হলো, ওদের টপঅর্ডারের তিনজন ব্যাটসম্যানকেই (রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি) যদি আউট করতে পারি, কী দুর্দান্ত একটা ব্যাপারই না হবে! নিজের রান-আপে ফেরত যাওয়ার সময়েই কথাটা বারবার মনে হচ্ছিল আমার।’

রোহিতের দুর্বলতা কিসে, বেশ ভালোই জানা ছিল আমিরের। সেটাকে পুঁজি করেই ফিরিয়েছেন এই ওপেনারকে, ‘আমি জানতাম ইন সুইং বলগুলো খেলতে রোহিতের সমস্যা হয়। তাই আমার পরিকল্পনা ছিল, অন্তত প্রথম দুই বল আমি ইনসুইং করাব না। এতে ওর মনে হবে, পিচে বল ইনসুইং করানো যাচ্ছে না। আপনি রিপ্লে দেখলে এখন দেখবেন, দুবারই বলটা ওর কাছ থেকে আউটসুইং করিয়ে সরিয়ে নিয়েছি।’

তৃতীয় বলেই হুট করে ইনসুইঙ্গার দিয়ে বসেন আমির। আর তাতেই ধরাশায়ী হন রোহিত, ‘তিন নম্বর বলটা ইনসুইং করিয়েছি। অর্থাৎ ওকে আউট করার জন্য আমার যে পরিকল্পনাটা ছিল, সেটা সফল হয়।’

রোহিতকে আউট করার পর আমিরের উল্লাস।
ফাইল ছবি: এ এফপি

কোহলি নামার পর আমিরের একমাত্র লক্ষ্য ছিল, ভারত অধিনায়ককে থিতু হতে দেওয়া যাবে না মোটেও, ‘এরপর কোহলি এল, এসেই ও একটা ক্যাচ তুলেছিল, যেটা আমরা ধরতে পারিনি। ওর জীবন পাওয়া দেখে আমার একটা কথাই মনে হয়েছিল, আগের ইনিংসেই আমাদের ফখর জামান একটা নো-বলে আউট হয়েছিল। সেই জীবন পেয়ে ও দুর্দান্ত একটা সেঞ্চুরি করে বসে। তাই কোহলির ক্যাচ পড়ার পর মনে হয়েছিল, ও যদি একবার থিতু হয়ে যায়, ৪০-৪৫ ওভারেই ম্যাচ শেষ করে ফেলবে।’

রোহিতের মতো কোহলিকেও ফিরিয়েছেন ইনসুইং-আউট সুইংয়ের গোলকধাঁধায়, ‘কোহলি যখন ব্যাট করতে এল, প্রথমেই একটা ইনসুইঙ্গার দিলাম ওকে। ও খেলতে পারল না। তারপর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, ওকে আর ইনসুইঙ্গার দেব না। ও ভাবতে থাকুক, আমি কখন আবার ইনসুইঙ্গার দিই। পরের বলে আউটসুইঙ্গার দিলাম, স্লিপে চলে গেল বলটা। এর পরের বলটাও তা-ই করলাম, কিন্তু আরেকটু উঁচু।’

আমিরকে বুঝে ফেলেছেন, কোহলি এমনটা যখনই ভাবা শুরু করলেন, ঠিক তখনই মরণ-কামড়টা দেন আমির, ‘ততক্ষণে বিরাট আমাকে অনসাইডে খেলবে, এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছিল। ওর শরীরও অনসাইড বরাবর ছিল। কিন্তু আমার বল কোনাকুনি যাচ্ছিল। শাদাবকে ধন্যবাদ, ক্যাচটা ঠিকঠাক নিতে পেরেছিল।’