আমিরাতে গেলেও বিশ্বকাপটা ভারতেরই থাকবে

বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলী ও ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলিফাইল ছবি: এএফপি

করোনাভাইরাসের কারণে দর্শক মাঠে আসতে পারবেন না, আর দর্শক না আসা মানে সব দিক থেকে ম্যাড়মেড়ে টুর্নামেন্ট। গ্যালারিতে উত্তেজনা না থাকলে ব্যাট-বলের লড়াইয়ে প্রাণ অত থাকে নাকি! তার ওপর দর্শক না আসা মানে বাণিজ্যেও টান পড়বে। গত বছরের অক্টোবরে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা থাকলেও সেটি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে এসব ভেবেই।

তা এবার ভারতের মাটিতে আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভাগ্যে কী আছে?

করোনার সংক্রমণে বেসামাল ভারত।
ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়া এ মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা অল্প কয়েকটি দেশের একটি। গত অক্টোবরে যদিও চিত্রটা মোটেও এ রকম ছিল না! কিন্তু গত অক্টোবরে বা এর মাসকয়েক আগে অস্ট্রেলিয়ায় যে অবস্থা ছিল, ভারতে করোনা সংক্রমণের অবস্থা এ মুহূর্তে তার চেয়েও কয়েক গুণ বেশি খারাপ। শেষ পর্যন্ত তাই বিশ্বকাপ ভারতে হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।

ভারতের বিকল্প ভেন্যু হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কথা শোনা গেছে অনেক দিন ধরেই। তবে এবার বিসিসিআইয়ের মহাব্যবস্থাপক বলে দিলেন, বিশ্বকাপ ভারতের বদলে আমিরাতে গেলেও সেটি আয়োজনের অধিকার ভারতের কাছেই থাকবে!

আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ভারতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা। কিন্তু ভারতে এ মুহূর্তে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। প্রতিদিন তিন লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন, প্রতিদিন মারা যাচ্ছেন দুই-তিন হাজার মানুষ। বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি, তাই বিকল্প ভেবে রেখেছে বলে শোনা যাচ্ছে। ভারতের করোনা পরিস্থিতি যদি আশানুরূপ ভালো না হয়, সে ক্ষেত্রে বিশ্বকাপ ভারত থেকে সরিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিয়ে যাওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে অনেক দিন ধরেই।

বিশ্বকাপের এখনো মাস ছয়েক বাকি। সে কারণেই কিনা ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিসিআই এখনই নিজ দেশে বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা বাতিলের খাতায় ফেলে দিতে রাজি নয়। বাস্তবতা মাথায় রেখে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বিশ্বকাপ আয়োজনকে বিকল্প হিসেবে মেনে নিতে রাজি বিসিসিআই। সংগঠনের মহাব্যবস্থাপক ও বিশ্বকাপের টুর্নামেন্ট পরিচালক ধিরাজ মালহোত্রা সেটি জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমে, ‘কী হবে না হবে, তা বলার সময় এখনো আসেনি। তবে বিকল্প পরিকল্পনাটা হচ্ছে বিশ্বকাপ সংযুক্ত আরব আমিরাতে হবে, তবে সেখানেও আয়োজনের অধিকার থাকবে বিসিসিআইয়ের হাতে।’

ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের আগে বিসিসিআই বিশ্বকাপের নয়টি ভেন্যু হিসেবে বেছে নিয়েছিল মুম্বাই, নয়াদিল্লি, চেন্নাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ, ধর্মশালা, আহমেদাবাদ ও লক্ষ্ণৌকে। কিন্তু করোনার ভয়াবহতা বেড়ে যাওয়ায় এখন বিসিসিআইয়ের হাতে অপেক্ষা করা ছাড়া অন্য কোনো রাস্তা নেই। কবে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অন্তত নিয়ন্ত্রণযোগ্য পর্যায়ে আসবে, কবে বাইরের দেশগুলো করোনা ঠেকাতে ভারতের ওপর চলমান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে... সেসব জানার আগে বিশ্বকাপ আয়োজনের পরিকল্পনা নিয়ে এগোতেও পারছে না বিসিসিআই।

করোনার মধ্যেই চলছে আইপিএল।
ছবি: আইপিএল

তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানাচ্ছে, এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোনো বিকল্প প্রস্তাবে যাওয়ার আগে ভারত প্রয়োজনে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে হলেও বিশ্বকাপ আয়োজন করতে চায়।

এ বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দল থাকছে ১৬টি। প্রতিটি দল তাদের স্কোয়াড ঘোষণা করবে বিশ্বকাপের এক মাস আগে। ভারতে বিশ্বকাপ না হলে বিকল্প হিসেবে যে দেশকে ভাবা হচ্ছে, সেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম আছে ৪টি। শুধু প্রয়োজন দেখা দিলেই আমিরাতের বিশ্বকাপের বিকল্পটি কার্যকর করা হবে। এর আগে গত বছর সেখানেই সফলভাবে আইপিএল আয়োজন করা হয়েছে।