আমিরের মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ ‘বানানো’

পাকিস্তানের সাবেক পেসার মোহাম্মদ আমিরফাইল ছবি: এএফপি

খেলোয়াড় আসে, খেলোয়াড় যায়, কিন্তু বিতর্ক থামে না—এই তো পাকিস্তান ক্রিকেট? ব্রাত্য, বাদানুবাদ, বিতর্ক, এসব যেন পাকিস্তান ক্রিকেটের ভূষণ!

মোহাম্মদ আমিরের অবসর নেওয়া তার সর্বশেষ নজির। গত মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেন পাকিস্তানি এ পেসার।

দেশের ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) ‘মানসিক অত্যাচার’কে অবসর নেওয়ার অন্যতম কারণ দেখিয়েছেন এ ২৯ বছর বয়সী। এরপর থেকেই নানা রকম কথা চলছে। কেউ আমিরের সিদ্ধান্তের পক্ষে, কেউ আবার বিপক্ষে।

পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রধান কোচ মিসবাহ–উল–হক শুধু আমিরের ‘মানসিক অত্যাচার’–এর অভিযোগের বিপক্ষে। ধূমকেতুর মতো ক্যারিয়ার শুরু করা আমিরের বিরুদ্ধে গুরুতর এক অভিযোগও তুলেছেন মিসবাহ।

অকালে অবসর নেওয়ার কারণ হিসেবে আমির যেসব অভিযোগ তুলেছেন, মিসবাহর মতে সেসব ‘বানানো অভিযোগ’।

এর মানে মানসিক অত্যাচারের শিকার হওয়ার যে অভিযোগ আমির তুলেছেন তা মিথ্যা বলে দাবি করেছেন মিসবাহ। তাঁর দাবি, আমির জাতীয় দলে ‘অটোমেটিক চয়েস’ ছিলেন না, ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে তাঁর নিজেকে প্রমাণ করে আসা উচিত ছিল।

সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে পাকিস্তান দলে ডাক পাননি আমির। মিসবাহ জানান, পারফরম্যান্স বিচারে কোচিং স্টাফের কেউ তাঁকে দলে নিতে রাজি ছিল না।

ক্রিকইনফোকে মিসবাহ বলেন, ‘ওয়াকার ইউনিস (পাকিস্তানের বোলিং কোচ) ও আমিরকে ঘিরে অনেক কথা হয়েছে, কিন্তু এর কোনো কিছু সত্য নয়। ছয়জন কোচ ছিলেন নির্বাচকের ভূমিকায়, আমি প্রধান নির্বাচক আর অধিনায়কও ছিলেন। তাই এটা কোনোভাবেই সম্ভব না—একজন মানুষ সবার সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করেছে। পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে কেউ তাঁকে দলে নিতে চায়নি। আমি জানি না, সে কেন বানিয়ে বানিয়ে বলে এমন পরিস্থিতি তৈরি করছে, যার কোনো ভিত্তি নেই।’

মিসবাহ সোজাসাপ্টা বলেছেন, ‘তাঁর জন্য পথটা ছিল খুব সরল—ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে নিজেকে প্রমাণ করে দলে ফেরা। বাকি সব বিষয় এখানে গুরুত্বহীন।’

এর আগে ইংল্যান্ড সফর ভালো কাটেনি আমিরের। পাকিস্তানের ঘরোয়া ন্যাশনাল টি–টোয়েন্টি কাপেও ভালো করতে পারেননি তিনি। এরপর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে বাদ পড়েন জাতীয় দল থেকে।

এ নিয়ে মিসবাহর ভাষ্য, ‘গত বছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তাকে আমরা বলেছিলাম, হাসনাইন, হারিস রউফ ও মুসা খানদের সুযোগ দিতে চাই।’

পাকিস্তানের হয়ে ৩৬ টেস্ট ও ৬১ ওয়ানডে খেলা আমির তাঁর অবসর–বার্তায় বোর্ডকে দায়ী করে বলেছিলেন, ‘সত্যি বলছি, আমার মনে হয় না এই প্রশাসনের অধীনে আমি ক্রিকেট খেলতে পারব। আমি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমাকে মানসিকভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, আমি আর নিতে পারছি না। ২০১০-২০১৫ সময়টায় আমি যথেষ্ট দেখেছি। বারবার বলা হয়েছে বোর্ড আমার ওপর অনেক বিনিয়োগ করেছে। আমি শহীদ আফ্রিদির কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ, নিষেধাজ্ঞার পর তিনিই আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বক্তব্যের ভিডিও ছেড়েছিলেন আমির।