সুযোগ হাতছাড়া আর ভুলের গল্প লিখল চট্টগ্রাম টেস্ট

আরেকটি ভুলের গল্প চট্টগ্রামে টেস্টছবি: শামসুল হক

চট্টগ্রাম টেস্টের আগে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে খুব বেশি বাজি ধরার লোক ছিল না। সেটি টেস্টে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ফর্ম আর পাকিস্তান দলের শক্তিমত্তা বিচার করেই। কিন্তু মাঠে নেমে বাংলাদেশ দল কিছুটা হলেও হিসাব এলোমেলো করে দিয়েছে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটে চার দিন পাকিস্তান দলের চোখে চোখ রেখে লড়েছে। প্রথম ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা আধিপত্য করেছেন পাকিস্তানি বোলারদের ওপর। কিন্তু লড়াই করার এই টেস্টও সুযোগ হাতছাড়া করার দোষে দুষ্ট। সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারলে হয়তো চট্টগ্রামে পাকিস্তানকে আরও কঠিন সময় দিতে পারত বাংলাদেশ।

টপ অর্ডারের ব্যাটিং ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে
ছবি: শামসুল হক

দুই ইনিংসেই টপ অর্ডারের ব্যর্থতা

টপ অর্ডারকে বাদ দিয়েই চট্টগ্রাম টেস্টের গল্প লিখতে হবে। দুই ইনিংসেই যাচ্ছেতাই ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের টপ অর্ডাররা। প্রথম ইনিংসে শীর্ষ চার ব্যাটসম্যান দ্রুত আউট হয়ে যাওয়ার পরও মুশফিকুর রহিম আর লিটন দাসের দুর্দান্ত এক জুটিতে বাংলাদেশ সংগ্রহটাকে ৩৩০-এ নিতে পেরেছিল। পরের দিকে খুব ভালো ব্যাটিং না হলেও টপ অর্ডারের ব্যর্থতার আক্ষেপটা বড় হয়েই দেখা দিয়েছে। সাদমান-মুমিনুল-সাইফ-নাজমুলদের কেউ একটু ভালো করলেই সংগ্রহটা আরও বাড়তে পারত। পাকিস্তানও আরও বড় রানের বোঝা নিয়ে ব্যাটিং করত।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে এগিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারও টপ অর্ডারের ব্যর্থতা। দ্বিতীয় ইনিংসেও লিটন দাঁড়িয়ে পড়ে কিছুটা লড়াইয়ের রসদ জুগিয়েছেন। অভিষিক্ত ইয়াসির আলীও আহত হয়ে মাঠ ত্যাগের আগে ভালো ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু টপ অর্ডার ব্যাটিং প্রচণ্ড বাজে হওয়ায় সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। ব্যাটিং–সহায়ক উইকেটে সাদমান-সাইফ-মুমিনুল-নাজমুলদের ব্যর্থতা অমার্জনীয়।

দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৪ রানে এগিয়ে থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ
ছবি: শামসুল হক

অসময়ে অপ্রয়োজনীয় শট

দ্বিতীয় ইনিংসে লিটনের সঙ্গে নুরুলের জুটি বাংলাদেশের লিড ১৯৭ রানে নিয়ে যায়। দুজন যেভাবে খেলছিলেন, সেই হিসাবে বাংলাদেশের লিড সহজেই আড়াই শ ছাড়াতে পারত। কিন্তু ম্যাচের এ অবস্থায় কিনা নুরুল ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হলেন সীমানায় দাঁড়ানো ফিল্ডারকে ক্যাচ দিয়ে। ৩৮ রানে ভাঙা জুটিটি বাংলাদেশ দলের গড়া সম্ভাবনার সেতুও ভেঙে দেয়। এরপর বাংলাদেশ আর মাত্র ৪ রান যোগ করতেই বাকি ৪ উইকেট হারায়। ম্যাচের চার সেশন বাকি থাকতেই মাত্র ২০২ রানের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামে পাকিস্তান। যা পঞ্চম দিন সকালের সেশনে মাত্র ২ উইকেট হারিয়েই তাড়া করে বাবর আজমের দল।

আরেকটি টেস্ট, আরেকটি সুযোগ হাতছাড়া আর একরাশ ভুলের গল্প—এভাবে আর কত দিন!