ইংল্যান্ডকে বাংলাদেশের সঙ্গী বানাতে পারলেন না স্টার্ক

ইনিংসের দ্বিতীয় বলে জো রুটকে শূন্য রানে ফেরানোর পর মিচেল স্টার্ক।ছবি: এএফপি

চামিন্ডা ভাস কী ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার তৃতীয় ওয়ানডেটা দেখতে বসেছিলেন আজ! শ্রীলঙ্কার সাবেক বাঁহাতি পেসার যদি ম্যাচটি প্রথম বল থেকেই দেখে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই রোমাঞ্চে থরথর কেঁপেছেন।


কেন, এই প্রশ্ন করতেই পারেন। ভাসের রোমাঞ্চিত হওয়ার মতো বড় ঘটনাই যে আজ ঘটেছে ওল্ড ট্রাফোর্ডে। ম্যাচের প্রথম দুই বল না যেতেই নেই ইংল্যান্ডের ২ উইকেট। তৃতীয় বলেও উইকেট পেলেই যে হ্যাটট্রিক হয়ে যাবে অস্ট্রেলীয় পেসার মিচেল স্টার্কের! এমন সম্ভাবনায় টেলিভিশন কিংবা অন্য উপায়ে ম্যাচে চোখ রাখা সব ক্রিকেট ভক্তদেরই ফিরে যাওয়ার কথা ১৭ বছর আগের পিটারমারিজবার্গে, মনে করার কথা ভাসের মুখ। আসার কথা বাংলাদেশের অসহায় ব্যাটসম্যানদের ছবিও।

ম্যাচের প্রথম তিন বলেই বাংলাদেশের তিন ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে যে সেদিন হ্যাটট্রিক করে ফেলেছিলেন ভাস! ওয়ানডে ইতিহাসে ম্যাচের বা ইনিংসের প্রথম তিন বলেই হ্যাটট্রিক করে ফেলার উদাহরণ ওই একটিই। আজ ওল্ড ট্রাফোর্ডে স্টার্ক তৃতীয় বলে এউইন মরগানকে ফেরাতে পারলেই সেখানে একজন সঙ্গী পেয়ে যেতেন ভাস।
হয়নি স্টার্ক বলটিকে ঠিক লাইনে রাখতে না পারায়। মরগানের প্যাডে লেগে বল শুধু উইকেটকিপারের কাছেই গিয়েছে। এর আগে প্রথম বলে জেসন রয়কে পয়েন্টে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ক্যাচ বানান স্টার্ক। পরের বলেই এলবিডব্লু জো রুট।

ম্যাচের প্রথম তিন বলেই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করার অনন্য কীর্তি চামিন্ডা ভাসের।
ফাইল ছবি

হ্যাটট্রিকটা হয়ে গেলে এক বাঁহাতি পেসারে অনন্য হয়ে থাকা রেকর্ডে ভাগ বসাতেন আরেক বাঁহাতি পেসার। মজার ব্যাপার, ২০০৩ বিশ্বকাপে ভাসের গড়া সেই কীর্তি ছোঁয়ার কাছাকাছি গিয়েছিলেন যে দুজন, তাঁরা দুজনই বাঁহাতি পেসার। স্টার্কের আগে পাকিস্তানের দীর্ঘদেহী বাঁহাতি পেসার মোহাম্মদ ইরফানও ম্যাচের প্রথম দুই বলে উইকেট পেয়েছিলেন। ২০১৩ সালে পাকিস্তানের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের চতুর্থ ওয়ানডেতে ম্যাচের প্রথম দুই বলে হাশিম আমলা ও কলিন ইনগ্রামকে আউট করেছিলেন ইরফান।


ওয়ানডে ইতিহাসে একুশ শতকে ম্যাচের বা ইনিংসের প্রথম দুই বলে উইকেট নেওয়ার ঘটনা এ তিনটিই। এর আগে এমনটি হয়েছে কিনা সেটি জানার মতো পর্যাপ্ত তথ্যউপাত্ত নেই। তবে এটি নিশ্চিত ভাসের মতো প্রথম তিন বলেই উইকেট নেওয়ার আর ঘটনা ঘটেনি।

২০০৩ বিশ্বকাপটা কী দুঃস্বপ্নই না উপহার দিয়েছিল বাংলাদেশ দলকে! শ্রীলঙ্কার ম্যাচেই সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খেয়েছিল খালেদ মাসুদের দল। প্রথম বলে বোল্ড হান্নান সরকার। দ্বিতীয় বলে ভাসকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বিদায় মোহাম্মদ আশরাফুলের। তৃতীয় বলে বলের লাইনে না গিয়ে খেলে স্লিপে মাহেলা জয়াবর্ধনেকে ক্যাচ দেন এহসানুল হক।


শুধু হ্যাটট্রিক করেই থামেননি ভাস। চতুর্থ বলে সানোয়ার হোসেন চার মেরে দিলে। পরের বলটা হলো ওয়াইড। বৈধ পঞ্চম বলে তাঁকে এলবিডব্লু করে ‘প্রতিশোধ’ নিয়ে নেন ভাস। ম্যাচের বয়স পাঁচ বল হতেই কিনা বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ৫ রান! ইনিংসে পরে আরও ২ উইকেট নিয়েছিলেন ভাস। ৩১.১ ওভারেই বাংলাদেশ অলআউট ১২৪ রানে।

আজ স্টার্ক হ্যাটট্রিকটা পেয়ে গেলে ওই দুঃস্বপ্নে ইংল্যান্ডকে সঙ্গী পেত বাংলাদেশ। কিন্তু হলো না। এই প্রতিবেদন লেখার সময় স্টার্কও আর উইকেট পাননি, ইংল্যান্ডের দশাও হয়নি বাংলাদেশের মতো। জনি বেয়ারস্টো দারুণ এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ৪২ ওভার শেষে ইংল্যান্ড তুলেছে ৬ উইকেটে ২২৭ রান।